Rabindra Bharati University

রবীন্দ্রভারতীর অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে সরানোর দাবিতে বিক্ষোভ, ফিরতে হল রেজিস্ট্রারকে

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে সরানোর দাবিতে বিক্ষোভ। বিক্ষোভের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটি রোড ক্যাম্পাসে ঢুকতেই পারলেন না রেজিস্ট্রার আশিস সামন্ত।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:০৯
Protests to demand resignation of interim VC of Rabindra Bharati University

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং তৃণমূল পরিচালিত অশিক্ষক কর্মচারী সংগঠনের। —নিজস্ব চিত্র।

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়কে সরানোর দাবিতে বিক্ষোভ। বিক্ষোভের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটি রোড ক্যাম্পাসে ঢুকতেই পারলেন না অন্তর্বর্তী রেজিস্ট্রার আশিস সামন্ত। কিছু ক্ষণ বিক্ষোভ চলার পর গাড়ি ঘুরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে চলে যান তিনি।

Advertisement

শুক্রবার সকাল থেকেই রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং তৃণমূল পরিচালিত অশিক্ষক কর্মচারী সংগঠন। বিক্ষোভকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যকে সরিয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের দাবি তোলেন।

বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, অনৈতিক ভাবে অস্থায়ী উপাচার্য পদ আঁকড়ে রয়েছেন। তাঁদের আরও দাবি, নিজের আস্থাভাজন অস্থায়ী রেজিস্ট্রারকেও পদে রেখে দিয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে রবীন্দ্রভারতীর তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অন্যতম নেতা বিশাল দাস বলেন, “উপাচার্য হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) যে মানদণ্ড বেঁধে দিয়েছে, উনি তা পূরণ করতে পারেননি। উনি প্রাক্তন বিচারপতি। অন্তর্বর্তিকালীন মেয়াদে ছ’মাসের বেশি তাঁর পদে থাকার কথা নয়। কিন্তু ২০২৩ সালে রাজ্যপাল তাঁকে উপাচার্য পদে নিযুক্ত করার পর উনি পদ আঁকড়ে রয়েছেন।”

ওই ছাত্রনেতার আরও সংযোজন, “রাজ্যের শিক্ষা দফতরের নিষেধকে অগ্রাহ্য করেই অস্থায়ী উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এগ্‌জ়িকিউটিভ কাউন্সিল (ইসি)-এর বৈঠক ডাকছেন। এটা তিনি করতে পারেন না। তাঁর এই তুঘলকি আচরণের প্রতিবাদেই আমাদের এই বিক্ষোভ।” বিক্ষোভকারীরা অন্তর্বর্তী উপাচার্যের পাশাপাশি অন্তর্বর্তী রেজিস্ট্রারেরও পদত্যাগ দাবি করেছেন। বিক্ষোভের জেরে রবীন্দ্রভারতীর অন্তর্বর্তী রেজিস্ট্রার কি ইস্তফা দেবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমি কোনও রকম ইস্তফাপত্র দিইনি। কর্মীদের কথায় কেন আমি পদত্যাগ করতে যাব?”

উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর মতবিরোধের জের সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে গত বছরে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত ২০২৪-এর জুলাই মাসে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের নেতৃত্বে ‘সার্চ-কাম-সিলেকশন কমিটি’ গড়ে দেয়। আদালতের নির্দেশ ছিল, ওই কমিটি উপাচার্যদের নামের বাছাই তালিকা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠাবে। মুখ্যমন্ত্রী সেই তালিকার ভিত্তিতে নিজের পছন্দ অনুযায়ী নাম রাজ্যপালের কাছে পাঠাবেন। রাজ্যপাল সিলমোহর দেবেন। মতান্তর হলে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করবে।

মোট ৩৬টির মধ্যে দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে নামের সুপারিশ এখনও পাঠাতে পারেনি সার্চ কমিটি। সেগুলি হল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এবং পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়। বাকি ৩৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেই সার্চ কমিটির সুপারিশ মুখ্যমন্ত্রীর দফতর হয়ে আচার্যের টেবিলে পৌঁছে গিয়েছে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দফায় দফায় ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নামে আচার্য সিলমোহর দিয়েছেন। বাকি অর্ধেক, অর্থাৎ ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ এখনও ঝুলে। তার মধ্যে কলকাতা এবং যাদবপুরের মতো প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও রয়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন