Suspended TMC MLA Partha Chatterjee

ফের হাসপাতালে ভর্তি করানো হল পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে! স্নানঘরে পড়ে গিয়ে হাতে চোট জামিনে মুক্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর

বৃহস্পতিবার নাকতলার বাসভবন বিজয়কেতনে স্নানঘরে পড়ে গিয়ে বাঁ হাতে আঘাত পান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দ্রুত চট্টোপাধ্যায় পরিবারের চিকিৎসককে বাড়িতে ডেকে পাঠানো হয়। বাড়িতে এসে চিকিৎসক পার্থর চোটের প্রাথমিক শুশ্রূষা করে যান।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:০৮
Suspended TMC MLA Parth Chatterjee is hospitalized again

পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

তিন বছর তিন মাস ১৯ দিন পর ১১ নভেম্বর জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বাড়ি ফিরছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যদিও, শেষ মাস আটেক কলকাতার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তবে সম্প্রতি আবারও তাঁকে চিকিৎসার জন্য ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে খবর। বৃহস্পতিবার নাকতলার বাসভবন বিজয়কেতনে স্নানঘরে পড়ে গিয়ে বাঁ হাতে আঘাত পান পার্থ। দ্রুত চট্টোপাধ্যায় পরিবারের চিকিৎসককে বাড়িতে ডেকে পাঠানো হয়। বাড়িতে এসে চিকিৎসক পার্থের চোটের প্রাথমিক শুশ্রূষা করে যান। কিন্তু শুক্রবার হাতের ব্যাথা বেড়ে গেলে তাঁকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন পারিবারিক চিকিৎসক। তাঁর পরামর্শ মেনেই শুক্রবার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে আবার বাইপাসের ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছুদিন আগেই স্নানঘরে পড়ে গিয়ে পা ভাঙেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। ফোন করে পার্থ তাঁর আরোগ্য কামনাও করেন।

Advertisement

চট্টোপাধ্যায় পরিবার সূত্রে খবর, পার্থর হাতের এক্স-রে করে দেখেছেন চিকিৎসকরা। তাতে দেখা গিয়েছে বাঁ হাতে গুরুতর চোট পেলেও, তাঁর হাত ভাঙেনি। তবে চিকিৎসকেরা চাইছেন হাসপাতালে নিজেদের পর্যবেক্ষণে রেখে তাঁকে সুস্থ করে তুলতে। তাই এখনই হাসপাতাল থেকে পার্থকে ছুটি দেওয়া হবে না। আরও কদিন তাঁকে হাসপাতালের বিশেষ কেবিনে থাকতে হবে। প্রসঙ্গত

প্রসঙ্গত, ১১ নভেম্বর বাড়ি ফিরে প্রথম দু’দিন নিজের অনুগামীদের সঙ্গে প্রকাশ্যে দেখা করার পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমে ঢালাও বিবৃতি দিয়েছিলেন পার্থ। জানিয়েছিলেন, বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিয়ে বক্তৃতা করতে চান তিনি। পাশাপাশি নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমের মানুষের কাছে বিচার চাইতে যাবেন। বিচার চাওয়ার কৌশল হিসেবে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করে দিয়েছিলেন বেহালা পশ্চিমের আম জনতার উদ্দেশে। সঙ্গে নিজের সাসপেন্ড হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছিলেন।

কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে ১৩ নভেম্বর থেকে নিজেকে পুরোপুরি গুটিয়ে নিয়েছেন পার্থ। নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমে যাওয়া তো দূরঅস্ত, নিজের অনুগামীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেননি। আর সেই সময়েই নিজের বাসভবনের স্নানঘরে পড়ে গিয়ে আহত হয়ে ফের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে তাঁকে। সম্প্রতি মামলার শুনানিতে পার্থ উপস্থিত না থাকায় আদালত তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে জানিয়ে দিয়েছে —এ ধরনের গাফিলতি চলতে পারে না। আদালতের পর্যবেক্ষণ, “জামিনে থাকা কোনও অভিযুক্ত শুনানির দিনে অনুপস্থিত থাকলে তা গুরুতর বিষয়। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে তাঁর জামিন বাতিল করা হবে।” উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দীর্ঘ দিন কারাবন্দি ছিলেন পার্থ। আদালতের নির্দেশে সম্প্রতি তিনি শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পেয়েছেন। তবে মুক্তির পর থেকেই তাঁর স্বাস্থ্য, চলাফেরা ও রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে। যদিও শুনানিতে আইনজীবীর মাধ্যমে জানানো হয়, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি হাজিরা দিতে পারেননি। কিন্তু আদালত সেই যুক্তি মানতে নারাজ। বিচারকের পর্যবেক্ষণ, শুনানিতে উপস্থিত থাকা অভিযুক্তের দায়িত্ব ও আইনি বাধ্যবাধকতা। অসুস্থতা থাকলে আগাম জানানো উচিত ছিল।

আদালত আরও নির্দেশ দেয়, আগামী শুনানিতে অবশ্যই পার্থকে হাজির থাকতে হবে। পাশাপাশি তাঁর জামিনের শর্ত ভঙ্গ হয়েছে কিনা, তা নিয়েও আদালত কড়া নজরদারি চালানোর বার্তা দেয়। তদন্তকারী সংস্থাকেও প্রয়োজনীয় নথি ও তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর সেইসব ঘটনাক্রমের মধ্যেই আহত হয়ে আবারও হাসপাতালে ভর্তি হলেন পার্থ।

Advertisement
আরও পড়ুন