—প্রতীকী চিত্র।
নির্বাচনে কমিশনের শুরু করা ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনীর (এসআইআর) দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে। সেই পর্যায়ে আনম্যাপড ভোটারদের নিয়ে শুনানির কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই পর্যায়ে ভিন্ রাজ্যে কর্মরত বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা সমস্যায় পড়তে পারেন বলে কোনও কোনও মহলের আশঙ্কা। এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে ধোঁয়াশা রয়েছে বলেই মনে করছে শাসকদল তৃণমূল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এ রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের এসআইআর প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করতে এগিয়ে এল পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদ। সোমবার পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চার্চ লেনের দফতরে এই বিষয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন যে, কোনও বৈধ ভোটার যাতে ভোটার তালিকা থেকে বাদ না যান। সেই কথা মাথায় রেখেই এসআইআর নিয়ে দেশের যে কোনও প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা আমরা দূর করতে চাইছি।’’ সামিরুল আরও বলেন, ‘‘তাঁদের যাবতীয় সমস্যা দূর করতে আমরা একটি হেল্পলাইন নম্বর এবং একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করেছি। তাঁরা এসআইআর নিয়ে কোনও সমস্যায় পড়লে আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’’ হেল্পলাইন নম্বর হল, ১৮০০-১০৩-০০০৯ এবং হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর ৭৬০৩০৯১১২২। ইতিমধ্যে তাঁরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তালিকায় নথিভুক্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের এসএমএস বার্তা পাঠিয়ে নিজেদের সাহায্যের কথা জানিয়ে দিয়েছে পর্ষদ। প্রায় দু’লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে ইতিমধ্যে ফোন করা কিংবা এসএমএস করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
শাসকদল তৃণমূলের যুক্তি, পরিযায়ী শ্রমিকদের শুনানির জন্য যদি হাজির হতে হয়, তাহলে তাঁদের যাতায়াতের খরচ কে দেবে? প্রয়োজনে ভার্চুয়াল শুনানি হোক। সুপ্রিম কোর্টে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানি হচ্ছে, এমনকি রানাঘাটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান করে গিয়েছেন । তাহলে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানি হবে না কেন? কমিশনের কোনও নোটিশে সশরীরে হাজিরার কথা লেখা নেই। তাই এ ক্ষেত্রে হাজিরা বাধ্যতামূলক নয় বলেই ধরে নিচ্ছে শাসকদল।
প্রসঙ্গত, রবিবার দলের ভার্চুয়াল মাধ্যমের বৈঠকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক জানিয়েছেন, শুনানির সময় কোনও ভোটারকে সশরীরে উপস্থিত থাকার কথা কোনও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়নি। এ ক্ষেত্রে পরিযায়ী শ্রমিকদের শুনানির জন্য হাজির হতে হবে না। কিন্তু সাবধানতাবশত বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোটার তালিকায় ধরে রাখতে চায় তৃণমূল। তাই এসআইআর পদ্ধতিতে গোটা দলকে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করেছে তৃণমূল। সেই পথে হেঁটেই পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদ নয়া উদ্যোগ নিয়ে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগী হয়েছে।