—প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যে এ বার ড্রোন প্রতিরোধী ব্যবস্থা বা অ্যান্টি-ড্রোন ডিটেকশন সিস্টেম কিনতে চায় পুলিশ। প্রশাসনের খবর, ইতিমধ্যেই এ সব জিনিস কেনার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দরপত্রও (টেকনিক্যাল ও ফিনান্সিয়াল বিড) আহ্বান করা হয়েছে। একটিসূত্রের দাবি, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই বিভিন্ন সংস্থাকে দরপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। নতুন বছর শুরুর আগেই ড্রোন-প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনার কাজ কিছুটা এগিয়ে যাবে বলেও আশাবাদী পুলিশকর্তারা। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, কলকাতা পুলিশও এই ব্যবস্থা কেনার ব্যাপারে পরিকল্পনা শুরু করেছে।
পুলিশকর্তারা বলছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ পর্বে কলকাতার আকাশে কয়েকটি ড্রোন উড়তে দেখা গিয়েছিল। বন্দর এলাকা থেকে সেগুলি উড়ে ময়দানের দিকে এসেছিল। ওই তল্লাটে সেনার পূর্বাঞ্চলীয় ঘাঁটি, ভিক্টোরিয়ার মতো সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠান আছে। তবে পুলিশকর্তাদের অনেকে বলছেন, রাজ্য পুলিশের কাছে আরও সংবেদনশীল হল দিঘার মতো পর্যটন কেন্দ্র-সহ উপকূলীয় এলাকা এবং সুন্দরবন। সীমান্তবর্তী ওই সব এলাকায় কোনও জলযান থেকেও শত্রুপক্ষ ড্রোন ওড়াতে পারে। পুলিশের একাংশ মনে করছে, প্রাথমিক ভাবে ওই সব এলাকায় ড্রোন-প্রতিরোধী ব্যবস্থা কাজে লাগানো হতে পারে।
পুলিশের খবর, ড্রোন-প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনা হলে তা নিয়ে কাজ করার জন্য পুলিশের একটি পৃথক দলও গঠন করা হবে। এর জন্য ড্রোন-প্রতিরোধী ব্যবস্থা সরবরাহকারী সংস্থা ওই পুলিশকর্মীদের পৃথক প্রশিক্ষণও দেবে।
পুলিশকর্তাদের দাবি, বর্তমানে শত্রুপক্ষ বা দেশবিরোধী শক্তি নজরদারি এবং হামলার ক্ষেত্রে সশরীরে হানার থেকে ড্রোনের উপরেই বেশি নির্ভর করছে। সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানেরউপরে নজরদারির ক্ষেত্রেও দেশবিরোধী শক্তি ড্রোন ব্যবহার করতে পারে। সে কথা ভেবেই এই ড্রোন-প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনার কথা ভাবা হয়েছিল। এ ব্যাপারে নবান্নে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। সেই ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই তড়িঘড়ি দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে একটি ড্রোন-প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনা হবে। তারপর সেটির কার্যকারিতাদেখে আরও কয়েকটি কেনা হতে পারে বলে প্রশাসনের খবর।
সূত্রের দাবি, এই ড্রোন-প্রতিরোধী ব্যবস্থায় মানবহীন উড়ন্ত যানকে (আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকল বা ইউএভি) মূলত দু’টি ভাগ থাকবে। একটি, আকাশে এমন কোনও অবাঞ্ছিত বস্তুকে চিহ্নিত করা এবং দুই, তাকে নিষ্ক্রিয় করা। প্রথম ভাগটি রেডার, রেডিয়ো তরঙ্গ রিসিভার এবং সিস্টেম কন্ট্রোলার নিয়ে গঠিত। দ্বিতীয় ভাগে একটি বন্দুক থাকবে। তবে তা থেকে গুলির বদলে বিশেষ রেডিয়ো তরঙ্গ থাকবে তা ওই অবাঞ্ছিত ইউএভি-কে নিষ্ক্রিয় করে দেবে। তার ফলে সেটি আকাশ থেকে টুপ করে মাটিতে খসে পড়বে। এই ড্রোন-প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে সহজে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া যাবে। ফলে কোনও নির্দিষ্ট এলাকার বদলেএটিকে প্রয়োজন মতো নানা জায়গায় নিয়ে ব্যবহার করা যাবে।