Tangra Unnatural Deaths

শিরা কাটা তিন মৃতদেহ বাড়িতে, বাইপাসে উদ্ধার আহত তিন! ট্যাংরাকাণ্ড ঘিরে রহস্য গভীর হচ্ছে

পুলিশ জানিয়েছে, একই পরিবারের ছয় সদস্য একসঙ্গে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। দুই মহিলা এবং এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। আবার তিন যুবকের গাড়ি সকালে ধাক্কা মারে পিলারে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:২৬
ট্যাংরায় তিন জনের শিরা-কাটা দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

ট্যাংরায় তিন জনের শিরা-কাটা দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

ট্যাংরায় হাতের শিরা-কাটা অবস্থায় তিন জনের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় হাসপাতাল থেকে নতুন তথ্য পেল পুলিশ। বুধবার সকালেই ইএম বাইপাসে অভিষিক্তা মোড়ের কাছে একটি পথ দুর্ঘটনা ঘটে। একটি গাড়ি ধাক্কা মারে পিলারে। তাতে তিন জন যুবক আহত হন। হাসপাতালে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়েই ট্যাংরার তিন মৃত্যুর সঙ্গে ঘটনার যোগ পেয়েছে পুলিশ। যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপরাধদমন) রুপেশ কুমার জানিয়েছেন, ছ’জন একই পরিবারের সদস্য। তাঁরা একসঙ্গে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পায়েসের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খেয়েছিলেন তাঁরা। পরে হাতের শিরা কাটা অবস্থায় দুই মহিলা এবং এক কিশোরীর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিন যুবক আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আত্মহত্যার উদ্দেশ্যেই তাঁরা গাড়ি নিয়ে পিলারে ধাক্কা মেরেছেন। আপাতত আহতদের বয়ান থেকে এ কথা জানতে পেরেছে পুলিশ। তবে বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ।

Advertisement

মৃত দুই মহিলার নাম রোমি দে এবং সুদেষ্ণা দে। আহত দুই ভাইয়ের নাম প্রণয় দে এবং প্রসূন দে। রুপেশ বলেন, ‘‘একটি দুর্ঘটনা হয়েছিল। গাড়ি পিলারে ধাক্কা মারে। তিন জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁদের সূত্রে জানা যায়, একটি ঠিকানায় তিন জনের দেহ পড়ে আছে। সেই দেহগুলি উদ্ধার করা হয়েছে। সকলেই এক পরিবারের সদস্য। হাসপাতালে যাঁরা, তাঁরা তিন জনই পুরুষ। দেহ মিলেছে দুই মহিলা এবং এক কিশোরীর। আহতদের মধ্যে এক জন সচেতন আছেন। দু’জন অর্ধচেতন। তাঁদের বয়ান নেওয়া হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিন জন। তার পর তাঁরা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পিলারে ধাক্কা মারেন। কী ঘটেছে, ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।’’

একই পরিবারের ছয় সদস্য একসঙ্গে কেন আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন? আর্থিক সমস্যা এর একটি কারণ হতে পারে, জানিয়েছেন রুপেশ। প্রাথমিক ভাবে আহতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তেমন সমস্যারই ইঙ্গিত মিলেছে। তবে সেই দাবি খতিয়ে দেখা হবে। এলাকার কাউন্সিলর বলেছেন, ‘‘পরিবারটিকে আমি চিনতাম। ওদের চামড়ার ব্যবসা ছিল। অত্যন্ত ভদ্র পরিবার। দীর্ঘ দিন ধরে এখানে থাকতেন। ওদের কোনও আর্থিক সমস্যার কথা আমি জানতে পারিনি।’’

ইতিমধ্যে ট্যাংরায় গিয়েছেন লালবাজার হোমিসাইড শাখার আধিকারিকেরা। গিয়েছেন রুপেশ নিজেও। পৌঁছেছে ডগ স্কোয়াড। তিন জনের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। কী কারণে এই আত্মহত্যা, তা নিয়ে রহস্য ক্রমে জটিল হচ্ছে। ছ’জন একসঙ্গে আত্মহত্যার জন্য ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন কি না, তিন যুবক বাকিদের হাতের শিরা কাটতে দেখে বেরিয়েছিলেন কি না, নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। রুপেশ জানিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পরেই উত্তর দিতে পারবেন তাঁরা।

Advertisement
আরও পড়ুন