Bengal Job Loss Teachers' Protest

‘পেট্রল দিয়ে নিজেদের জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলে থাকতে পারি’, পুলিশের ভিডিয়ো দেখে পাল্টা বার্তা চাকরিহারাদের

শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিলে হেঁটেছেন চাকরিহারা শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীরা। কলকাতা পুলিশ কসবাকাণ্ডের ভিডিয়ো প্রকাশ করে যে দাবি করেছে, সেই অভিযোগ মানতে পারছেন না তাঁরা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৪৫
What protesters say about the police comment against them in Kasba case

চাকরিহারা বিক্ষোভকারী মহম্মদ আবদুল্লা আল মনজুম। বৃহস্পতিবার ধর্মতলায়। —নিজস্ব চিত্র।

কসবার ডিআই দফতরের সামনে লাঠিচার্জের কারণ ব্যাখ্যা করতে বৃহস্পতিবার সকালে বেশ কিছু ভিডিয়ো পোস্ট করেছে কলকাতা পুলিশ। তাতে বিক্ষোভকারীদের এক জনকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘পেট্রল নিয়ে আয়, জ্বালিয়ে দেব’’ (ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। এই মন্তব্য এবং পুলিশের পোস্ট করা ভিডিয়োতে ‘চক্রান্ত’ দেখছেন চাকরিহারা প্রার্থীদের একাংশ। তাঁদের দাবি, এই ধরনের মন্তব্য তাঁদের কেউ করতেই পারেন না। বরং, পেট্রল দিয়ে তাঁরা নিজেদের জ্বালিয়ে দিতে বাধ্য হবেন, যদি চাকরি ফিরে না-পান। বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিলে হেঁটেছেন চাকরিহারা বহু শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। সেখান থেকেই এই বার্তা তাঁরা দিয়েছেন।

Advertisement

যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের কনভেনর মেহবুব মণ্ডলকে পুলিশের পোস্ট করা ভিডিয়োর কথা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কসবার ঘটনাস্থলে প্রচুর সংবাদমাধ্যম ছিল। প্রচুর ভিডিয়ো ক্লিপিং রয়েছে। কিন্তু এমন একটাও ভিডিয়ো ক্লিপিং নেই, যেখানে আমরা জ্বালিয়ে দিতে বা পুড়িয়ে দিতে বলেছি।’’

মেহবুবের পাশ থেকে এই মঞ্চের অন্যতম সদস্য মহম্মদ আবদুল্লা আল মনজুম বলে ওঠেন, ‘‘আমাদের মধ্যে কেউ এই কথা বলবে বলে মনে হয় না। বরং, পেট্রল দিয়ে আমরা নিজেদের জ্বালিয়ে দিতে বাধ্য হব, যদি সসম্মানে পদ ফিরে না-পাই। নিজেদের জ্বালানো ছাড়া আমাদের কাছে আর কোনও উপায় থাকবে না।’’ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে থেকে এক জনকে কী ভাবে এই কথা বলতে শোনা গেল? মনজুম বলেন, ‘‘এটা চক্রান্ত হতে পারে। হতে পারে কেউ ওখানে গিয়ে এই কথা বলেছেন, আমাদের মধ্যে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করছেন।’’

এসএসসির দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার মানুষ। অভিযোগ, যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করা যায়নি। ফলে ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এর ফলে যোগ্যেরাও অনেকে এখন চাকরিহারা। চাকরি ফেরানোর দাবিতে তাঁরা পথে নেমেছেন। বুধবার জেলায় জেলায় ডিআই দফতর অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন তাঁরা। কসবার ডিআই দফতরেও জড়ো হয়েছিলেন অনেকে। সেখানে পুলিশের সঙ্গে চাকরিহারা বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছিল। এমনকি, কিছু ভিডিয়োয় বিক্ষোভকারীদের লাথি মারতেও দেখা গিয়েছে পুলিশকে (সেই ভিডিয়োর সত্যতাও যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)

কসবায় স্কুল পরিদর্শকের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দিতে চেয়েছিলেন চাকরিহারারা। কিন্তু তিনি দফতরে ছিলেন না। অভিযোগ, আচমকা কয়েক জন বিক্ষোভকারী ডিআই দফতরের তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। পুলিশ জানায়, এই সময়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ‘হালকা বলপ্রয়োগ’ করতে হয়েছে।

কসবার ঘটনা নিয়ে বুধবার ‘সাফাই’ দিয়েছিল পুলিশ। কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ বর্মা সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন, ‘‘ওই ভাবে লাথি মারা কখনওই কাম্য নয়। পুলিশকর্মীদের বলাই হয়েছে, এ রকম যাতে কিছু না ঘটে।’’ কিন্তু সিপির বক্তব্য ছিল, যে ছবি-ভিডিয়ো দেখানো হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ নয়। আগে-পিছনে আরও কিছু রয়েছে। পুলিশেরও ছ’জন জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চার জন পুরুষ এবং দু’জন মহিলা। পরিস্থিতি বোঝানোর জন্য বৃহস্পতিবার ভিডিয়োও প্রকাশ করা হয়।

Advertisement
আরও পড়ুন