Israel Palestine Conflict

‘গাজ়ায় ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে ৪৮ ঘণ্টায়’! উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রপুঞ্জ বলল, ‘ত্রাণের বন্যা’ না বইলে ভয়াবহ পরিস্থিতি আসন্ন

রবিবার গাজ়ায় ‘সীমিত পরিমাণে’ খাদ্যসামগ্রী ও মানবিক সাহায্য পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছিল ইজ়রায়েল। সেইমতো দীর্ঘ ১১ সপ্তাহ পর সোমবার গাজ়ায় পাঁচটি ত্রাণবোঝাই ট্রাক প্রবেশে অনুমোদন দিয়েছে ইজ়রায়েল। তবে রাষ্ট্রপুঞ্জের মতে, এই ত্রাণ কিছুই নয়।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৫ ১৪:৪০
14000 children might die in Gaza if sufficient aid does not reach, says Tom Fletcher, UN under-secretary-general for humanitarian affairs

ইজ়রায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজ়ার চিত্র। — ফাইল চিত্র।

ইজ়রায়েলের একের পর এক সামরিক অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজ়া ভূখণ্ড। ধারাবাহিক বোমাবর্ষণে প্রতি দিনই মৃতের সংখ্যা উত্তরোত্তর বাড়ছে। তৈরি হয়েছে চরম খাদ্যসঙ্কটও। সেই আবহেই রাষ্ট্রপুঞ্জ জানাল, গাজ়ায় পর্যাপ্ত ত্রাণ না পৌঁছোলে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হতে পারে ১৪ হাজার শিশুর!

Advertisement

রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবিক সহায়তা বিষয়ক কর্তা টম ফ্লেচার সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে গাজ়ার প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ মানবিক সহায়তার। রবিবার গাজ়ায় ‘সীমিত পরিমাণে’ খাদ্যসামগ্রী ও মানবিক সাহায্য পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছিল ইজ়রায়েল। সেইমতো দীর্ঘ ১১ সপ্তাহ পর সোমবার গাজ়ায় পাঁচটি ত্রাণবোঝাই ট্রাক প্রবেশে অনুমোদন দিয়েছে ইজ়রায়েল। তবে ফ্লেচারের মতে, এই ত্রাণ সরবরাহ ‘অত্যাবশক চাহিদার বিশাল সমুদ্রে এক ফোঁটা জলের সমান’। কারণ, যুদ্ধবিধ্বস্ত এই অঞ্চলে প্রায় ২১ লক্ষ মানুষের বাস। তার প্রায় অর্ধেকই শিশু। মাত্র পাঁচটি ট্রাকবোঝাই ত্রাণে তাদের চাহিদা কোনও ভাবেই মিটবে না বলে আশঙ্কা রাষ্ট্রপুঞ্জের।

ফ্লেচারের কথায়, ‘‘এই মুহূর্তে গাজ়ায় মানবিক সাহায্যের বন্যা বইয়ে দেওয়া দরকার। ট্রাকবোঝাই ত্রাণ পাঠানো হলেও সেই ত্রাণ এখনও গাজ়াবাসীর কাছে পৌঁছোয়নি, কারণ, ট্রাকগুলি সীমান্তেই দাঁড়িয়ে রয়েছে। ওই ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে শিশুদের খাবারও। যদি ওই ত্রাণ তাদের কাছে না পৌঁছোয়, তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ১৪ হাজার শিশু মারা যাবে। আমরা আজ আরও ১০০টি ট্রাক গাজ়ায় পাঠানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু প্রতিটি স্থানে আমাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে।’’ ফ্লেচার আরও জানিয়েছেন, শিশুদের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে সব রকমের ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত রাষ্ট্রপুঞ্জ।

ইতিমধ্যে গাজ়ায় হামলা বন্ধের জন্য ইজ়রায়েলের উপর চাপ বেড়েছে আন্তর্জাতিক স্তরেও। গাজ়ায় নতুন করে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে ইজ়রায়েলের পাশে নেই ‘বন্ধু’রাষ্ট্রগুলিও। সোমবারই নিজমুখে সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেই আবহে ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং কানাডাও হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, ইজ়রায়েল যদি গাজ়ায় সামরিক অভিযান বন্ধ না করে এবং মানবিক সাহায্য প্রবেশে বাধা দেয়, তা হলে ‘কড়া পদক্ষেপ’ করা হবে।

তবে গাজ়ায় ত্রাণ পাঠাতে রাজি হলেও হামাসের বিরুদ্ধে ইজ়রায়েলের অভিযান থামেনি। বরং ইজ়রায়েলি বিমান হামলায় আধ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ৩৮ প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা বিবিসিকে জানিয়েছেন। নেতানিয়াহুও কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, প্রয়োজনে গোটা গাজ়া ভূখণ্ডকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেবে ইজ়রায়েল। হামাস যদি বন্দিচুক্তি মানতে রাজি না হয়, তবে হামলা আরও বাড়বে। স্বাধীনতাপন্থী প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বরের হামলার পরেই অভিযান শুরু করেছিল তেল আভিভ। কাতার, আমেরিকা এবং মিশরের উদ্যোগে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় দু’পক্ষ। তবে প্রথম দফার ওই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মার্চের গোড়ায় ফের গাজ়ায় হামলা শুরু করে ইজরায়েলি সেনা। একই সঙ্গে গাজ়া ভূখণ্ডে খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করা-সহ নানা নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।

Advertisement
আরও পড়ুন