সিডনির বন্ডাই সৈকতে হামলার পরে আহতকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: পিটিআই।
সিডনির বন্ডাই সৈকতে গুলি চালানোর ঘটনার পরে ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। ঘটনার ময়নাতদন্ত করে বার বার অস্ট্রেলিয়া পুলিশ এবং গোয়েন্দাদের ব্যর্থতার কথাই উঠে এসেছে। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, অভিযুক্তদের এক জনের সঙ্গে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের যোগ রয়েছে, অতীতে সে কথা জানতে পেরেও ক্লিনচিট দেওয়া হয়েছিল। সেই নবিদ আক্রমই বাবা সাজিদ আক্রমের সঙ্গে মিলে রবিবার এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে অন্তত ১৫ জনকে হত্যা করেছে।
২৪ বছরের নবিদ এখন পুলিশের নজরদারিতে হাসপাতালে ভর্তি। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ২০১৯ সালের অক্টোবরে প্রথম অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দাদের নজরে এসেছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানিস সোমবার জানিয়েছেন, নবিদের থেকে কোনও ঝুঁকি থাকতে পারে বলে সে সময় কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। তাই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ইজ়রায়েল-গাজ়া যুদ্ধ শুরুর পরে অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদি-বিরোধী কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ। বিভিন্ন জায়গায় ইহুদিদের হুমকি দিয়ে পোস্টার, দেওয়াল লিখন দেখতে পাওয়া গিয়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে সিএনএন দাবি করে, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, মেলবোর্নে আক্রান্ত হতে পারেন ইহুদিরা। রবিবারের ঘটনার পরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযুক্ত বাবা-ছেলের গাড়িতে একটি আইএসের পতাকা মিলেছে।
রবিবার বন্ডাই সৈকতে ইহুদিদের হানুক্কাহ উৎসবই ছিল ইহুদিদের নিশানা। ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ান সিকিউরিটি ইন্টালিজেন্স অর্গানাইজেশন (এএসআইও)-এক নজরে পড়েছিল অভিযুক্ত নবিদ। অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান শাখা হল এএসআইও। এই এএসআইও-র প্রধান মাইক বার্গেস জানান, আইএসের সিডনি শাখার সঙ্গে নবিদের যোগের প্রমাণ মিলেছিল। ছ’মাস তদন্তও চলে। শেষে কর্তৃপক্ষ তাঁকে ছাড়পত্র দেন। সে দিনের সেই পদক্ষেপ এখন কুরে কুরে খাচ্ছে গোয়েন্দাদের। বাবা সাজিদ আক্রমের সঙ্গে মিলে সেই নবিদ রবিবার বন্ডাই সৈকতে এলোপাথাড়ি গুলি চালান। ঘটনাস্থলেই পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় সাজিদের। ১০ বছর ধরে বন্দুকের লাইসেন্স রয়েছে তাঁর।
অস্ট্রেলিয়ার একাধিক সংবাদসংস্থা সে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ‘আসিও’-কে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ‘খুব সম্ভবত’ তাঁরা পাকিস্তানের নাগরিক কিংবা পাক বংশোদ্ভূত। পরে তাঁরা অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান।