Donald Trump vs BRICS

শুল্ক-জুজু দেখিয়ে অন্য দেশের উপর জোরজবরদস্তি মানা যায় না! ‘ব্রিক্‌স’কে দেওয়া ট্রাম্পের হুমকিতে বিরক্তি প্রকাশ চিনের

এক যৌথ বিবৃতিতে শুল্ক ব্যবস্থার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে ‘ব্রিক্‌স’। যদিও সেখানে সরাসরি আমেরিকার উল্লেখ ছিল না। তবে ওই যৌথ বিবৃতির পরেই ‘ব্রিক্‌স’কে সরাসরি হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫ ১৪:৩০
(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

শুল্কের জুজু দেখিয়ে অন্য দেশের উপর জোরজবরদস্তি মেনে নেওয়া যায় না। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ব্রিক্‌স’কে হুমকি দেওয়ার পরে এমনটাই জানাল চিন। বেজিঙের বক্তব্য, শুল্ক ব্যবস্থাকে এ ভাবে ব্যবহার করলে আসলে কারও কোনও উপকার হবে না। পাশাপাশি, ‘ব্রিক্‌স’-এর আর এক সদস্যদেশ দক্ষিণ আফ্রিকাও জানিয়েছে, তারা আমেরিকাবিরোধী নয়।

Advertisement

দুই শক্তিধর রাষ্ট্র চিন এবং রাশিয়ার পাশাপাশি ভারতও ‘ব্রিক্‌স’-এর অন্যতম সদস্য। রবিবার ব্রাজ়িলে ‘ব্রিক্‌স’-এর সম্মেলনে বক্তৃতাও করেন মোদী। পরে দশ দেশের ওই আন্তর্জাতিক জোট একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে। সেখানে সরাসরি আমেরিকার নাম উল্লেখ না করলেও শুল্ক ব্যবস্থার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে ‘ব্রিক্‌স’-এর অবস্থান জানানো হয়। এর পরেই সোমবার সকালে (ভারতীয় সময় অনুসারে) সরাসরি ‘ব্রিক্‌স’কে নিশানা করেন ট্রাম্প। এর পর দক্ষিণ আফ্রিকার বাণিজ্য দফতরের মুখপাত্র জানান, তাঁরা আমেরিকাবিরোধী নন। আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য যে তারা এখনও একই রকম আগ্রহী, তা-ও জানিয়েছে ‘ব্রিক্‌স’-এর এই সদস্যরাষ্ট্র।

বস্তুত রবিবার যৌথ বিবৃতিতে ‘ব্রিক্‌স’ বলেছে, “বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞামূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ, তা সে নির্বিচারে শুল্ক বৃদ্ধি করাই হোক বা অন্য কোনও ঘোষণা, এগুলি বিশ্ববাণিজ্যকে আরও পিছিয়ে দেয়। বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করে।” সেখানে আমেরিকার নাম উল্লেখ নেই ঠিকই, তবে সম্প্রতি আমেরিকার শুল্কনীতিকে ঘিরে বিশ্ববাণিজ্যে এক উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শুল্ক নিয়ে ‘ব্রিক্‌স’-এর এই অবস্থান ট্রাম্পের যে পছন্দ হয়নি, তা নিজের সমাজমাধ্যম পোস্টে কোনও রাখঢাক না রেখেই বুঝিয়ে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, “ব্রিক্‌স-এর আমেরিকাবিরোধী নীতির সঙ্গে কোনও দেশ যুক্ত হলে তাদের উপর বাড়তি ১০ শতাংশ কর চাপানো হবে। এর কোনও ব্যতিক্রম হবে না।” ট্রাম্পের ওই হুমকির পরে এ বার মুখ খুলল ‘ব্রিক্‌স’-এর অন্যতম সদস্যরাষ্ট্র চিন। তারা বুঝিয়ে দিয়েছে, ট্রাম্পের এ ধরনের মন্তব্যে বিরক্ত বেজিং। ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্কের হুমকির প্রেক্ষিতে চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং জানিয়েছেন, অন্যের উপর চাপ তৈরির জন্য শুল্ককে ব্যবহার করা মেনে নেওয়া যায় না। শুল্ককে এ ভাবে ব্যবহার করলে কারও কোনও লাভ হবে না বলেও মনে করছে বেজিং।

ঘটনাচক্রে, শুল্কের প্রসঙ্গ টেনে এমন একটি সময়ে ‘ব্রিক্‌স’কে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প, যখন আমেরিকার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা চলছে। চিনের সঙ্গে ইতিমধ্যে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলেছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে ভারতের সঙ্গে চুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ অবস্থায় ‘ব্রিক্‌স’কে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি প্রায় একই সময়ে সমাজমাধ্যম আরও একটি পোস্ট করেছেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, সোমবার (ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় অনুসারে) দুপুর ১২টা থেকে বিভিন্ন দেশকে শুল্ক-চিঠি বা চুক্তিপত্র পাঠানো হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন