Pakistan Saudi Arabia Defence Deal

পাক পরমাণু অস্ত্রের লক্ষ্য আর শুধু ভারত নয়? পরিধি বেড়ে গেল? সৌদি-চুক্তির পর খোদ মন্ত্রীর বক্তব্যেই ধন্দ, বিতর্ক

পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য পরমাণু অস্ত্র সংক্রান্ত জল্পনায় জল ঢালতে তো পারেইনি, বরং বিভ্রান্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। পর পর দু’টি সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পরস্পরবিরোধী।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:০৩
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের লক্ষ্য আর শুধু ভারত নয়? এ বার থেকে অন্য দেশের বিরুদ্ধেও এই অস্ত্র প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারে ইসলামাবাদ? সৌদি আরবের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকেই এ বিষয়ে জল্পনা চলছে। পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য জল্পনায় জল ঢালতে তো পারেইনি, বরং বিভ্রান্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। পর পর দু’টি সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পরস্পরবিরোধী।

Advertisement

বুধবার সৌদি আরবে গিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ সে দেশের সঙ্গে ‘কৌশলগত এবং পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি’ স্বাক্ষর করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান বা সৌদি আরব অন্য কোনও দেশের আগ্রাসনের শিকার হলে তা উভয়ের উপরেই আঘাত হিসাবে বিবেচনা করা হবে এবং সঙ্কটের সময়ে তারা পরস্পরের পাশে থাকবে। শাহবাজ়ের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের সময়ে উপস্থিত ছিলেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীও। পরে সে দেশের সংবাদমাধ্যম জিয়ো নিউজ়কে তিনি একটি সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, সঙ্কটের সময়ে সৌদি পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের সহায়তাও পাবে কি না। আসিফ বলেছিলেন, ‘‘নিশ্চয়ই। আমাদের কাছে যা আছে, আমাদের যতটা ক্ষমতা, এই চুক্তির অধীনে সবটাই ব্যবহার করা যাবে।’’ সেই সঙ্গে সাবধানতা অবলম্বন করে তিনি যোগ করেন, ‘‘পরমাণু অস্ত্রের বিষয়ে পাকিস্তান দায়িত্বশীল। এটাও বলে রাখা প্রয়োজন।’’

পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের নিশানা ঘোষিত ভাবেই শুধু ভারত। সে দেশের সরকার একাধিক বার এ কথা স্পষ্ট করেছে যে, পাক পরমাণু অস্ত্রের জন্য অন্য কোনও দেশের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে কি সেই নীতি থেকে এ বার সরে আসতে শুরু করল ইসলামাবাদ? সৌদিকেও যদি প্রয়োজনে পরমাণু অস্ত্রের সুরক্ষা প্রদান করা হয়, তবে অন্য দেশের বিরুদ্ধেও সেই অস্ত্র তাদের প্রয়োগ করতে হবে। এ নিয়ে জল্পনার মাঝেই সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে ভিন্ন কথা বলেন আসিফ। জানিয়ে দেন, পরমাণু অস্ত্রের বিষয়টি পাক-সৌদি চুক্তির অন্তর্ভুক্ত নয়। আসিফের কথায়, ‘‘আগ্রাসনের জন্য এই চুক্তিকে ব্যবহারের ইচ্ছা আমাদের নেই। তবে যদি কোনও পক্ষকে হুমকি দেওয়া হয়, তবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই চুক্তির আওতায় পরমাণু অস্ত্র নেই।’’

কেন একই বিষয়ে দু’টি সাক্ষাৎকারে ভিন্ন অবস্থান নিলেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী? প্রশ্ন তুলেছে সে দেশের অপর সংবাদমাধ্যম ডন। বিদেশ দফতরের মুখপাত্র শফকত আলি খানকে এ নিয়ে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। কিন্তু তিনি বার বার কৌশলে প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ।

পশ্চিম এশিয়ার একমাত্র পরমাণু শক্তিধর দেশ ইজ়রায়েল। সম্প্রতি তারা কাতারের রাজধানী দোহায় আকাশপথে হামলা চালিয়েছে। প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধরত ইজ়রায়েলের এই পদক্ষেপ সৌদি-সহ আরব দেশগুলি একেবারেই ভাল চোখে দেখেনি। তার মাঝে পাকিস্তানের সঙ্গে সৌদির চুক্তিতে অনেকে মনে করেছিলেন, এর অন্যতম নিশানা হতে পারে ইজ়রায়েল। এই চুক্তি আসলে তাদেরই বার্তা দিল। ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে পাক পরমাণু অস্ত্রের সহায়তা সৌদি পেতে পারে বলে দাবি করছিলেন বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ। কিন্তু আসিফের মন্তব্যে ইসলামাবাদের অবস্থান নিয়েই বিভ্রান্তি তৈরি হল।

Advertisement
আরও পড়ুন