Israel-Iran Conflict

পরমাণু চুক্তি মেনে নিন, নইলে কিছুই আস্ত থাকবে না! ইরানে ‘আরও ভয়ঙ্কর হামলা’র হুমকি দিয়ে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট

ইরানে ইজ়রায়েলি হামলার নেপথ্যে আমেরিকার হাত রয়েছে কি না, তা নিয়ে বিবিধ জল্পনা চলছিল। এ বার সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প যা লিখেছেন, তাতে অনেকের কাছেই কার্যত স্পষ্ট যে, প্রচ্ছন্ন নয়, ইজ়রায়েলি হানার নেপথ্যে আমেরিকার সরাসরিই ‘মদত’ রয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫ ১৭:৩৫
Donald Trump warned Iran to agree to a nuclear deal suggesting next Israeli attacks will be even more brutal

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

নয়া পরমাণু চুক্তি না মানলে আরও ভয়ঙ্কর হামলার মুখে পড়তে হবে। তখন আর কিছুই আস্ত থাকবে না! ইরানকে এ বার নিজেই হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

Advertisement

ইরানে ইজ়রায়েলি হামলার নেপথ্যে আমেরিকার হাত রয়েছে কি না, তা নিয়ে বিবিধ জল্পনা চলছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম প্রতিক্রিয়া সেই জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। এ বার সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প যা লিখেছেন, তাতে অনেকের কাছেই কার্যত স্পষ্ট যে, প্রচ্ছন্ন নয়, ইজ়রায়েলি হানার নেপথ্যে আমেরিকার সরাসরিই ‘মদত’ রয়েছে।

শুক্রবার সকালে সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘পরমাণু চুক্তি মেনে নেওয়ার জন্য ইরানকে একের পর এক সুযোগ দিয়েছি। আমি ওদের খুব কড়া ভাবে বলেছিলাম, আপনারা এটা মেনে নিন। হয়তো তারা চেষ্টা করেছে, হতে পারে প্রায় মেনেও নিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটা হয়নি। আমি এ-ও বলেছিলাম, আপনার যে রকম ভাবছেন, ব্যাপারটা এর চেয়েও ভয়ঙ্কর হতে পারে।’’

ই়়জ়রায়েল যে ইরানে হামলা চালাতে পারে, সেই আশঙ্কা আগেই প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প। এ বার সরাসরিই ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সমাজমাধ্যমের পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘‘ইতিমধ্যে অনেক কিছু ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। অনেকের মৃত্যু ঘটেছে। কিন্তু এই বিবাদে ইতি টানার এখনও সময় আছে। কারণ, আবার হামলা হতে পারে এবং সেই হামলা ভয়ঙ্কর হতে চলেছে। ইরান সমঝোতা না করলে কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। এটা ইরানীয় সাম্রাজ্যকে বাঁচানোর সময়। খুব দেরি হয়ে যাওয়ার আগে চুক্তি মেনে নিন। ঈশ্বর সকলের মঙ্গল করুন।’’

রবিবার ওমানে পরমাণু বৈঠকে বসার কথা আমেরিকা এবং ইরানের। আমেরিকা চায় না ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাক। একাধিক রিপোর্টে দাবি, ইরান ইতিমধ্যেই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৬০ শতাংশে নিয়ে গিয়েছে। পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে অবশ্য এই বিশুদ্ধতার পরিমাণ আরও কয়েক শতাংশ বৃদ্ধি করতে হবে ইরানকে। কিন্তু আমেরিকা চায়, এখানেই থেমে যাক ইরান।

অনেকের বক্তব্য, ওই বৈঠকে ট্রাম্প স্পষ্ট ভাবে বুঝিয়ে দিলেন, তারা ইজ়রায়েলের পাশেই রয়েছে। ইজ়রায়েলের সিদ্ধান্তে তাদের সমর্থন রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশ যে হামলা চালিয়েছে, তাতে ‘হাত’ও রয়েছে আমেরিকার। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমেরিকার সেরা অস্ত্র ইজ়রায়েলের হাতে রয়েছে। তারা জানে, ওই অস্ত্র কী ভাবে ব্যবহার করতে হয়। ইরানের কট্টরপন্থীদের অনেকেই বড় বড় কথা বলেছিলেন। তাঁদের কেউ আর বেঁচে নেই। এ বার পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।’’

যদিও ইরান আগেই দাবি করেছে, তারা কোনও পরমাণু বোমা তৈরি করছে না। কিন্তু পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহারের অধিকার তাদের রয়েছে। যে প্রযুক্তিতে তৈরি জিনিস সাধারণ মানুষের কাজে লাগবে। ‘নিউক্লিয়ার নন-প্রলিফারেশন’ চুক্তিতে ইরানের স্বাক্ষর রয়েছে। সেই চুক্তি মেনে ইরানও ইউরেনিয়াম ব্যবহার করতে পারে। ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা বাড়াতে পারে। তবে ইরান এমন কিছু করছে না, যা দিয়ে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা যায়।

তার পরেও ইজ়রায়েল হামলা চালানোয় প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই একটি বিবৃতি দিয়ে ইজ়রায়েলকে ‘কঠোর শাস্তি’ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইজ়রায়েল যেন খারাপ পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকে। ইজ়রায়েলি হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মেজর জেনারেল মহম্মদ বাগেরি নিহত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডের প্রধান কমান্ডার জেনারেল হোসেন সালামি এবং ডেপুটি কমান্ডার জেনারেল ঘোলামালি রশিদের। প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের ছ’জন পরমাণু বিজ্ঞানীও। নিহত বিজ্ঞানীদের মধ্যে রয়েছেন ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রাক্তন প্রধান ফেরেউদুন আব্বাসি। ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘আইআরএনএ’ সকলের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।

ইরানও পাল্টা ড্রোন-হামলা চালিয়েছে, কিন্তু সুবিধা করে উঠতে পারেনি। ইজ়রায়েলের বক্তব্য, তারা তা প্রতিহত করেছে। বস্তুত, ইরান যে হামলা চালাতে পারে, এমন আশঙ্কা করে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে ইজ়রায়েল।

Advertisement
আরও পড়ুন