Donald Trump-Volodymyr Zelenskiy Meeting

জ়েলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকে থাকবেন ইউরোপীয় নেতারাও! মার্চের পুনরাবৃত্তি হবে না তো? রয়েছে সংশয়

রাশিয়া, ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে তৎপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন তিনি। মনে করা হচ্ছে সোমবার ওয়াশিংটনের বৈঠকে পুতিনের দাবি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৫ ২১:০৬
European leaders to join Volodimir Zelenskiy for meeting with Donald Trump

(বাঁ দিকে) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় বৈঠকের পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, এ বার তিনি ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে কথা বলবেন! শুধু তা-ই নয়, জ়েলেনস্কির সঙ্গে ফোনেও কথা হয় ট্রাম্পের। তার পরেই জ়েলেনস্কি জানিয়েছিলেন, সোমবার তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন। সেই বৈঠকে থাকতে পারেন ইউরোপীয় নেতারা! এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রনেতা বৈঠকে থাকার কথা নিশ্চিত করেছেন।

Advertisement

সংবাদমাধ্যম ‘ব্লুমবার্গ’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প-জ়েলেনস্কির বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন, নেটোর মহাসচিব মার্ক রট্ট, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ থাকবেন, তা নিশ্চিত করেছেন। ‘স্কাই নিউজ়’-এ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিও থাকতে পারেন সোমবারের বৈঠকে।

রাশিয়া, ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে তৎপর ট্রাম্প। আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন তিনি। সেই বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্টের পাঁচটি দাবি শুনে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বিনিময়ে বেশ কিছু বিষয়ে সমঝোতা করতে রাজি হয়েছে রাশিয়াও। আপাতত তাদের পাঁচটি দাবি নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের দর কষাকষির পালা। ইউক্রেনকে রাশিয়ার পাঁচ দাবি মানতে রাজি করাতে পারলেই ইতি পড়তে পারে দুই দেশের মধ্যে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধে। মনে করা হচ্ছে সোমবার ওয়াশিংটনের বৈঠকে এই পাঁচ দাবি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে সেই দাবি জ়েলেনস্কি কতটা মানবেন, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে কূটনৈতিক মহলের একাংশের মধ্যে।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ দিন ধরেই পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের বিনিময়ে যুদ্ধ থামানোর প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। ডনবাস অঞ্চলের লুহানস্ক প্রদেশ ইতিমধ্যেই রাশিয়ার দখলে। তবে ওই অঞ্চলের আর এক প্রদেশ ডনেৎস্কে এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনের সেনা। রাশিয়া অবশ্য চায় গোটা ডনবাস অঞ্চলটি তাদের হাতে ছেড়ে দিক ইউক্রেন। কিন্তু খনিজ সমৃদ্ধ এই অঞ্চল নিরাপত্তাগত কারণেই হাতছাড়া করতে চায় না ইউক্রেন।

ট্রাম্প এবং পুতিন— দুই রাষ্ট্রনেতাই ‘ফলপ্রসূ’ বৈঠকের কথা জানালেও সেখানে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কোনও রফাসূত্র মেলেনি। তবে শুধু ট্রাম্প নয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে উদ্যোগী ইউরোপীয় নেতারা। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জ়েলেনস্কির পাশে থাকার বার্তা বার বারই দিয়েছেন ইউরোপের শক্তিধর দেশগুলির নেতারা। শুধু তা-ই নয়, তারাও চায়, পুতিন-জ়েলেনস্কিকে এক টেবিলে বসিয়ে আলোচনার পথ প্রশস্ত করতে! শুক্রবার আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পরেই জ়েলেনস্কিকে ফোন করেছিলেন ট্রাম্প। ফোন করেছিলেন ব্রিটেন, জার্মানি এবং ফ্রান্স— এই তিন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকেও। তখনই নাকি ট্রাম্প তাঁদের জানান, তিনি আগামী শুক্রবার (২২ অগস্ট) পুতিন এবং জ়েলেনস্কিকে নিয়ে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করতে চাইছেন। তবে সেই বৈঠক আদৌ হবে কি না, হলেও কবে হতে পারে— তা নিশ্চিত নয়।

উল্লেখ্য, মার্চের গোড়াতে হোয়াইট হাউসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। কিন্তু তাঁদের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। বরং ট্রাম্প এবং আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় জ়েলেনস্কির। বৈঠকের মাঝপথেই ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের বেরিয়ে যেতে বলা হয় ওভাল অফিস থেকে। পূর্বপরিকল্পিত মধ্যাহ্নভোজনও করেননি তাঁরা কেউ। বাতিল হয়েছে বহু আলোচিত খনিজ চুক্তি। তবে তার পর একাধিক বার ইউক্রেন প্রেসিডেন্টকে নিশানা করেছিলেন ট্রাম্প। তবে তার পরে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে সম্পর্ক আবার ‘মধুর’ হয়।

Advertisement
আরও পড়ুন