(বাঁ দিকে) হুন মানেত, (মাঝে) আনোয়ার ইব্রাহিম এবং ফুমথাম ওয়েচায়াচাই (ডান দিকে)। ছবি: রয়টার্স।
সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হল তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া। সোমবার দু’দেশের রাষ্ট্রনেতাকে নিয়ে বৈঠকের পরে এই ঘোষণা করলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। সংঘর্ষ থামাতে সোমবার কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেট এবং তাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাইকে নিয়ে আলোচনায় বসেন ইব্রাহিম। মালয়েশিয়ার রাজধানী পুত্রজয়ায় ইব্রাহিমের বাসভবনে ওই বৈঠক হয়। মালয়েশিয়ায় আমেরিকা এবং চিনের রাষ্ট্রদূতও উপস্থিত ছিলেন ওই বৈঠকে। সোমবারের ওই বৈঠক শেষেই ইব্রাহিম ঘোষণা করেন, দু’দেশ অবিলম্বে সংঘর্ষবিরতির জন্য রাজি হয়েছে।
ইব্রাহিম বলেন, “তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীই অবিলম্বে সংঘর্ষবিরতির ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। দু’দেশই পারস্পরিক সমঝোতায় পৌঁছেছে। দু’দেশই তাৎক্ষণিক ভাবে এবং নিঃশর্ত সংঘর্ষবিরতির জন্য প্রস্তুত।” তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া নিজেদের প্রধানমন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের মধ্যে সরাসরি কথাবার্তা শুরু করবে বলেও জানান তিনি। যদিও সংঘর্ষবিরতি কখন থেকে কার্যকর হবে, তা স্পষ্ট করেননি কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, একটি সদর্থক বৈঠক হয়েছে। অবিলম্বে সংঘর্ষ বন্ধ হবে বলেও আশাবাদী তিনি। তবে নির্দিষ্ট ভাবে কোনও সময়ের কথা উল্লেখ করেননি হুন।
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানান, সংঘর্ষের ফলে দু’দেশেরই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উভয় দেশেরই প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ ঘরছাড়া। এই সংঘর্ষ থামাতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতারও প্রশংসা করেন হুন। বেজিংকেও ধন্যবাদ জানান তিনি। গঠনমূলক আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য হুন ধন্যবাদ জানান তাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীকেও।
বস্তুত, গত সপ্তাহে থেকে শুরু হওয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই পড়শি দেশের মধ্যে সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত মোট ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন তাইল্যান্ডের ১৩ জন এবং কম্বোডিয়ার আট জন সাধারণ মানুষ। দু’দেশেরই সীমান্তবর্তী এলাকা ছেড়ে সাধারণ মানুষ অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। এশিয়ার দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষে ফের ব্যবসার কথা তুলে ধরেছেন ট্রাম্প। দু’দেশকেই সতর্ক করে ট্রাম্প বলেছিলেন, যদি তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া যুদ্ধ বন্ধ না-করে, তবে তাদের কারও সঙ্গেই আর আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তিতে যাবে না।
ট্রাম্পের ওই সতর্কবার্তার পরেই মধ্যস্থতার জন্য তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল কম্বোডিয়া। তাইল্যান্ডও ট্রাম্পের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। তবে তারা এ-ও জানায় যে, কম্বোডিয়া তাদের নিরীহ নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো বন্ধ না-করলে তারা আলোচনার টেবিলে বসবে না। তাইল্যান্ডের এই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছিল কম্বোডিয়া। তবে ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারির পরেও তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া— দু’পক্ষের মধ্যে গোলাবর্ষণ দেখা গিয়েছিল।