Muhammad Yunus Government

লালনের প্রয়াণ দিবস এ বার থেকে জাতীয় দিবস বাংলাদেশে, রবীন্দ্র-নজরুলের ‘চেনা ছক’ থেকে বেরোতে চান ইউনূসেরা

সমাজমাধ্যমে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক তথা মুহাম্মদ ইউনূসের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের ক্যাবিনেট লালনের প্রয়াণ দিবসকে ‘ক’ শ্রেণির জাতীয় দিবস হিসাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৫ ১২:০১
লালনের প্রয়াণ দিবসকে  জাতীয় দিবস হিসাবে পালনের সিদ্ধান্ত মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের।

লালনের প্রয়াণ দিবসকে জাতীয় দিবস হিসাবে পালনের সিদ্ধান্ত মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

লালন ফকিরের প্রয়াণ দিবসকে ‘জাতীয় দিবস’ হিসাবে উদ্‌যাপনের সিদ্ধান্ত নিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বৃহস্পতিবার সমাজমাধ্যমে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন সে দেশের বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক তথা মুহাম্মদ ইউনূসের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের ক্যাবিনেট লালনের প্রয়াণ দিবসকে ‘ক’ শ্রেণির জাতীয় দিবস হিসাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Advertisement

সুদীর্ঘ পোস্টে ফারুকী জানান, বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে দীর্ঘ কাল ধরে একটি সাংস্কৃতিক আধিপত্য ছিল। সেই কারণে সে দেশের ভদ্রসমাজ লালনের গানকে উচ্চমার্গের শিল্প (হাই আর্ট) হিসাবে মানতে পারেনি বলে দাবি করেন তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের প্রয়াত সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ এবং প্রয়াত গায়ক আইয়ুব বাচ্চুর প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন। তাঁরা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিসরে অবহেলিত রয়ে গিয়েছেন বলে খেদোক্তি করেন ফারুকী। এই সূত্রেই ফারুকী লেখেন, “লালনকে সেলিব্রেট (উদ্‌যাপন) করার মধ্য দিয়ে আমরা রবীন্দ্র-নজরুলের পাশাপাশি চেনা ছকের বাইরে তাকাতে শুরু করলাম। এটা কেবল শুরু।”

বাংলাদেশের নতুন সরকারের কর্তব্যও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ইউনূসের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা। তিনি লেখেন, “চব্বিশ পরবর্তী সময়ে (অগস্ট মাসে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর) সময়ে রাষ্ট্রের দায় হচ্ছে— গত ৫৪ বছরে বাংলাদেশের জনগণের চর্চা এবং অংশগ্রহণে যে সংস্কৃতি আন্তর্জাতিক মানের হয়ে উঠেছে, সেটাকে সেলিব্রেট (উদ্‌যাপন) করা।” এর ফলে জাতি আরও আত্মবিশ্বাসী এবং আত্মমর্যাদাপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি। সমসাময়িক শিল্পীদের কাজ সাংস্কৃতিক পরিসরে নিয়ে আসার বিষয়ে সওয়াল করেন তিনি।

অবশ্য ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই, চলতি বছরের গোড়ায় মৌলবাদী সংগঠনগুলির বাধায় টাঙ্গাইলে বন্ধ হয়েছিল লালন স্মরণোৎসব। ‘প্রথম আলো’ আয়োজকদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছিল, লালনের গান মৌলবাদীদের মতাদর্শের বিরোধী, এই দাবি করে দু’টি সংগঠন অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। সেই সময় বাংলাদেশ, এমনকি পশ্চিমবঙ্গের অনেকেও এই ঘটনার নিন্দা করেন। এ বার সেই লালনের প্রয়াণ দিবসকেই জাতীয় দিবস হিসাবে পালনের সিদ্ধান্ত নিল ইউনূস সরকার। প্রসঙ্গত, ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর কুষ্টিয়ায় নিজের আখড়াতেই মারা গিয়েছিলেন লালন।

Advertisement
আরও পড়ুন