Return of Tarique Rahman

তারেকের প্রত্যাবর্তনে উচ্ছ্বাস বাংলাদেশে, কিন্তু বিরাম নেই হিংসার! ফের এক যুবক খুন, ইস্তফা ইউনূসের সহকারীর

বুধবার সন্ধ্যায় স্ত্রী জুবাইদা, কন্যা জাইমা এবং পরিবারের আদরের পোষ্য বিড়াল জেবুকে সঙ্গে নিয়ে লন্ডন থেকে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিমান ধরেছিলেন তারেক। বৃহস্পতিবার ঢাকায় পৌঁছোন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:৩৮
তারেক রহমান।

তারেক রহমান। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

টানা ১৮ মাস জেলে কাটানোর পরে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ছেড়ে লন্ডনে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ ১৭ বছরের ‘স্বেচ্ছানির্বাসন’-পর্বে ইতি টেনে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকায় ফিরে ‘স্বপ্নের বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তথা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

Advertisement

বুধবার সন্ধ্যায় স্ত্রী জুবাইদা, কন্যা জাইমা এবং পরিবারের আদরের পোষ্য বিড়াল জেবুকে সঙ্গে নিয়ে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিমান ধরেছিলেন তারেক। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে (স্থানীয় সময় অনুসারে) ঢাকার হজরত শাহ জালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে তাঁর বিমান। বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে স্বাগত জানাতে বৃহস্পতিবার বিএনপি নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ঢল নেমেছিল বিমানবন্দরে। পূর্বাচলে গণসংবর্ধনা কর্মসূচির জন্য খাড়া করা হয়েছিল ৩০০ ফুটের মঞ্চ। সেখানে কয়েক লক্ষ মানুষের জমায়েত হয়েছিল।

তারেখের প্রত্যাবর্তন পর্বেও অশান্তি হয়েছে বাংলাদেশে। ময়মনসিংহে দীপু দাসের পরে এ বার গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগের রাজবাড়ি জেলায় বাসিন্দা অমৃত মণ্ডলের। গত বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ যুবনেতা শফিক ওসমান হাদির মৃত্যুর পর থেকে তাঁর দল ইনকিলাব মঞ্চ মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দুই গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীর ইস্তফার দাবি তুলেছিল। তাঁদেরই একজন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক) খোদাবক্স চৌধুরী বুধবার রাতে সে দেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। খোদাবক্সের ইস্তফাপত্র বৃহস্পতিবার গ্রহণও করেছেন রাষ্ট্রপতি। তবে কেন হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত, সে বিষয়ে সরকারি ভাবে এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। বাংলাদেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, হাদি অনুগামীদের দাবি মেনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে সরিয়ে সেই দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানকে।

দেশে ফিরেই ইউনূসকে ফোন

১৭ বছর পরে দেশে ফিরেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক ফোন করেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে। দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ঢাকার হজরত শাহ জালাল বিমানবন্দরে পরিবারের সদস্য এবং দলীয় নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পরেই বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র ফোন করেন ইউনূসকে।

বিএনপির ওই সূত্রের দাবি, তারেক ফোনে প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁর দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান। গত ১৭ জুন লন্ডন সফরে গিয়ে তারেকের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ইউনূস। সূত্রের খবর, সেখানেই তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদের নির্বাচনের আয়োজন করা হবে।

২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জমানায় তারেক গ্রেফতার হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবার ব্রিটেনে চলে গিয়েছিলেন। ইউনূসের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জমানায় ২১ অগস্ট গ্রেনেড হামলা, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি, আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি-সহ অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ মামলা থেকে তারেককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ফলে দেশে ফিরলেও গ্রেফতার হওয়ার কোনও ঝুঁকি নেই তাঁর।

‘নিরাপদ’ বাংলাদেশ গড়ার বার্তা

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানী ঢাকার পূর্বাচলে জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়েতে আয়োজিত গণসংবর্ধনায় তারেক বলেন, ‘‘এমন বাংলাদেশ গড়ে তুলব, যা স্বপ্ন দেখেছি।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বিএনপির ‘নতুন প্রজন্মের মুখ’ তাঁর স্বপ্নের সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন আমেরিকার বর্ণবৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের প্রয়াত নেতা মার্টিন লুথার কিং এবং সদ্যনিহত জুলাই আন্দোলনের মুখ শফিক ওসমান হাদির!

লুথারের সেই বিখ্যাত বক্তৃতা ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে করে তারেক বলেন, ‘‘আই হ্যাভ আ প্ল্যান। দেশের মানুষের জন্য, দেশের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য আমার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে।’’ আর সেই পরিকল্পনা সফল করার জন্য তারেকের আর্জি, ‘‘শহিদ ওসমান হাদির প্রত্যাশার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সকলকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ওসমান হাদি চেয়েছিলেন এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক। তিনি চেয়েছিলেন, এই দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হোক। এই দেশের মানুষ নিজেদের গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক অধিকার ফিরে পাক।’’

এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘ওসমান হাদি-সহ এই আন্দোলনে যাঁরা শহিদ হয়েছেন, এই মানুষগুলির রক্তের ঋণ যদি শোধ করতে হয় তবে আসুন আমরা আমাদের সেই প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলি। যেখানে আমরা সকলে মিলে কাজ করব। যেখানে আমরা সকলে মিলে প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’’ বিদ্বেষ এবং বিভাজনের রাজনীতির অবসান ঘটনোর বার্তা দিয়ে তারেক বলেন, ‘‘এই দেশে যেমন পাহাড়ের মানুষ আছেন, এই দেশে একই ভাবে সমতলের মানুষ আছেন, এই দেশে মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-হিন্দু-সহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বসবাস করেন। আমরা চাই সকলে মিলে এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলব, আমরা যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছি। এক জন মা দেখেন। অর্থাৎ একটি নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই।’’ ঘাতকের হাতে হাদির মৃত্যু ঘিরে বাংলাদেশ জুড়ে অশান্তির আবহে তারেকের এই ‘নিরাপদ’-বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকেই।

হাসপাতালেও জনারণ্য

১৭ বছর পর দেশে ফিরে মা খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের বিএনপি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে ভর্তি দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা। ঢাকার পূর্বাচলে জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়েতে আয়োজিত গণসংবর্ধনায় যোগ দেওয়ার পরে এভারকেয়ার-মুখী হয় তারেকের কনভয়। কিন্তু ভিড়ের কারণে বার বার শ্লথ হয়ে যায় গতি।

থিকথিকে ভিড়ের মধ্যে দিয়ে এগোতে এগোতে বার বার জনতার উদ্দেশে হাত নাড়েন বিএনপির ‘নতুন প্রজন্মের নেতা’। তারেকের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী জুবাইদা রহমান এবং কন্যা জাইমা রহমানও বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে ফিরেছেন। বিকেলে খালেদাকে দেখতে তাঁরাও হাসপাতালে যান। তবে তাঁরা আগেই হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তারেক নিজে পৌঁছোন বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ। সঙ্গে ছিলেন বিএনপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রায় দেড় ঘণ্টা তিনি হাসপাতালে ছিলেন। পরে বাড়ির পথে রওনা হন। তারেকের জন্য হাসপাতালের বাইরেও বিএনপি কর্মী-সমর্থকদের জমায়েত ছিল চোখে পড়ার মতো। ঘন ঘন স্লোগান উঠছিল রাস্তায়।

শনিবারে যাবেন নির্বাচন কমিশনে

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি একই সঙ্গে জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনে নির্বাচন এবং জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট হবে বাংলাদেশে। বিএনপির তরফে ইতিমধ্যেই ২৭২ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। চেয়ারপার্সন খালেদা ফেনী–০১, বগুড়া–০৭ এবং দিনাজপুর–০৩ আসন থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। আর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক লড়বেন বগুড়া-৬ আসনে। তবে প্রার্থিপদ ঘোষণা হলেও এখনও বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় নাম নেই তারেকের। সূত্রের খবর, শনিবার নির্বাচন কমিশনের দফতরে গিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে নাম নথিভুক্ত করার দাবি জানাবেন।

দীপু দাসের পরে গণপিটুনির বলি অমৃত মণ্ডল

১৮ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলায় দীপুচন্দ্র দাস নিহত হন। ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তাঁকে পিটিয়ে মেরে জ্বালিয়ে দিয়েছিল উন্মত্ত জনতা। বুধবার গভীর রাতে ঢাকা বিভাগের রাজবাড়ি জেলায় পিটিয়ে মারা হল স্থানীয় যুবক অমৃত মণ্ডল ওরফে সম্রাটকে। জেলা পুলিশের দাবি, তোলাবাজিকে কেন্দ্র করে গোলমালের জেরে ঘটনাটি ঘটেছে।

বুধবার রাতের ওই ঘটনার পরে সেলিম শেখ নামে অমৃতের এক সহযোগীকেও পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। তাঁর থেকে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্রও পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি স্থানীয় পুলিশের। স্থানীয় থানার ওসি শেখ মঈনুল ইসলামের বক্তব্য, নিহত অমৃতের নামে খুনের অভিযোগ-সহ একাধিক মামলা রয়েছে। নিহতের সহযোগী সেলিমের থেকে একটি পিস্তল এবং একটি ওয়ান শটার পাওয়া গিয়েছে বলেও দাবি পুলিশের। দীপু-হত্যা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। শুধু ভারত নয়, রাষ্ট্রপুঞ্জের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাও বাংলাদেশে মানবাধিকার এবং সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এরই মধ্যে ফের এক যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠায় ইউনূসের উপর চাপ বাড়ল বলেই অনেকে মনে করছেন।

ইস্তফা ইউনূসের সহকারীর

বাংলাদেশের নিহত যুবনেতা ওসমান হাদির খুনিদের গ্রেফতারির তদন্তে অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চেয়ে শনিবারই ইউনূস সরকারের দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছিল হাদির দল ইনকিলাব মঞ্চ। সেই আবহেই এ বার পদত্যাগ করলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক) খোদাবক্স চৌধুরী। বুধবার রাতে সে দেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। খোদাবক্সের ইস্তফাপত্র গ্রহণও করেছেন রাষ্ট্রপতি। তবে কেন হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত, সে বিষয়ে সরকারি ভাবে এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।

বুধবার রাতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং-এর তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে খবরটি জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী তথা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদাবক্স চৌধুরীর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন। ২০২৪ সালে জুলাই অভ্যুত্থানে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর যখন অন্তর্বর্তী সরকার গড়া হয়, তখন প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় তিন জনকে বিশেষ সহকারী হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন ইউনূস। এই তিন বিশেষ সহকারীকে যথাক্রমে স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রকের উপদেষ্টাদের সহযোগিতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন পুলিশের প্রাক্তন আইজি খোদাবক্স। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন যথাক্রমে অধ্যাপক সায়েদুর রহমান এবং অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম। আমিনুল কয়েক মাস আগেই পদত্যাগ করেন। এখন পদত্যাগ করলেন খোদাবক্সও।

গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার রাজপথে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন হাদি। তাঁর মৃত্যু হয়েছিল গত বৃহস্পতিবার। কিন্তু এক সপ্তাহ পরেও গ্রেফতার করা যায়নি হাদির খুনিদের। তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চেয়ে ইউনূস সরকারকে শনিবারই ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল ইনকিলাব মঞ্চ। সময়সীমার মধ্যে সদুত্তর দিতে না পারলে ইউনূস সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক) খোদাবক্সের পদত্যাগের দাবি জানানো হয়েছিল। ইনকিলাব মঞ্চের তরফে আবদুল্লা আল জাবের বলেছিলেন, ‘’২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের জনসমক্ষে এসে বলতে হবে, গত এক সপ্তাহে তদন্ত কত দূর এগিয়েছে। এর জবাব না দিতে পারলে তাঁদের পদত্যাগ করতে হবে।’’ সেই সময়সীমা অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও হাদির হত্যাকারীদের বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে কোনও তথ্য জানাতে পারেনি সে দেশের তদন্তকারী সংস্থাগুলি। সেই আবহে সোমবার দুপুরে নিহত নেতার দলের তরফে ফের হুঁশিয়ারি দিয়ে জানানো হয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে তারা সমর্থন করবে, না কি সরকার ফেলে দিতে আন্দোলন শুরু করবে— তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে। তবে ‘খুনের সব দায় নিয়ে’ পদত্যাগ করতে হবে ইউনূসের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, বিশেষ সহকারী এবং আইন উপদেষ্টাকে। এই হুঙ্কারের কিছু ক্ষণ পরেই ইউনূস সরকার ঘোষণা করে, বাংলাদেশের ফাস্ট ট্র্যাক ট্রাইবুনালে হাদি হত্যার বিচার হবে। এ বার পদত্যাগ করলেন বিশেষ সহকারীও।

Advertisement
আরও পড়ুন