সংবর্ধনা মঞ্চে তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত।
১৭ বছরের ‘স্বেচ্ছানির্বাসন’ পর্বের শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্ত্রী-কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে ব্রিটেন থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন তিনি। বিকেলে গণসংবর্ধনা মঞ্চ থেকে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তথা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘স্বপ্নে দেখা বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার অঙ্গীকার করলেন।
রাজধানী ঢাকার পূর্বাচলে জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়েতে আয়োজিত গণসংবর্ধনায় তারেক বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এমন বাংলাদেশ গড়ে তুলব, যা স্বপ্ন দেখেছি।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তারেক তাঁর স্বপ্নের সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন আমেরিকার বর্ণবৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের প্রয়াত নেতা মার্টিন লুথার কিং এবং সদ্যনিহত জুলাই আন্দোলনের মুখ শফিক ওসমান হাদির। লুথারের সেই বিখ্যাত বক্তৃতা ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে করে বলেন, ‘‘আই হ্যাভ আ প্ল্যান। দেশের মানুষের জন্য, দেশের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য আমার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে।’’
আর সেই পরিকল্পনা সফল করার জন্য তারেকের আর্জি, ‘‘শহিদ ওসমান হাদির প্রত্যাশার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সকলকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ওসমান হাদি চেয়েছিলেন এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক। তিনি চেয়েছিলেন, এই দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হোক। এই দেশের মানুষ নিজেদের গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক অধিকার ফিরে পাক। ওসমান হাদি-সহ এই আন্দোলনে যাঁরা শহিদ হয়েছেন, এই মানুষগুলির রক্তের ঋণ যদি শোধ করতে হয় তবে আসুন আমরা আমাদের সেই প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলি। যেখানে আমরা সকলে মিলে কাজ করব। যেখানে আমরা সকলে মিলে প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’’
বুধবার সন্ধ্যায় লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিমান ধরেছিলেন তারেক। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে (স্থানীয় সময় অনুসারে) ঢাকার হজরত শাহ জালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে তাঁর বিমান। বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে স্বাগত জানাতে বৃহস্পতিবার বিএনপি নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ঢল নেমেছিল। পূর্বাচলে গণসংবর্ধনা কর্মসূচির জন্য খাড়া করা হয়েছিল ৩০০ ফুটের মঞ্চ।
দেশে ফেরার পরে সেই মঞ্চ থেকে প্রথম বক্তৃতায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘এই দেশে যেমন পাহাড়ের মানুষ আছেন, এই দেশে একই ভাবে সমতলের মানুষ আছেন, এই দেশে মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-হিন্দু-সহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বসবাস করেন। আমরা চাই সকলে মিলে এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলব, আমরা যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছি। এক জন মা দেখেন। অর্থাৎ একটি নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই।’’ ঘাতকের হাতে হাদির মৃত্যু ঘিরে বাংলাদেশ জুড়ে অশান্তির আবহে তারেকের এই ‘নিরাপদ’-বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকেই।