পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ। —ফাইল চিত্র।
তুরস্কে শান্তি-আলোচনা ভেস্তে যেতেই আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে হুঁশিয়ারি দিল পাকিস্তান। সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ দাবি করলেন, তালিবানকে সম্পূর্ণ মুছে দিতে পাকিস্তানের মোট অস্ত্রভান্ডারের এক অংশও খরচ করতে হবে না। ইসলামাবাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিলে নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনবে তালিবান।
চলতি মাসের শুরুর দিকে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান সেনা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। কাবুলে আকাশপথে হামলা চালিয়েছিল ইসলামাবাদ। আবার সীমান্ত এলাকায় পাল্টা জবাব দেয় তালিবানও। একাধিক দেশের মধ্যস্থতায় সাময়িক ভাবে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির সমঝোতা হয়েছে। কিন্তু উত্তেজনা কমেনি। মঙ্গলবার আরও এক দফায় পাক ও আফগান প্রতিনিধিরা আলোচনায় বসেছিলেন। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার সেই বৈঠকে সমাধানসূত্র মেলেনি। তার পরেই সমাজমাধ্যমে আফগানিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আসিফ। লিখেছেন, ‘‘তোমাদের বিশ্বাসঘাতকতা, উপহাস অনেক দিন ধরে আমরা সহ্য করছি। আর করব না। পাকিস্তানের মাটিতে আর একটাও সন্ত্রাসবাদী হামলা বা আত্মঘাতী বোমা হামলা হলে তোমরা এই কাজের তিক্ত স্বাদ পাবে। আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিলে তোমাদের বিপদ এবং ধ্বংস ঘনিয়ে আসবে।’’ অস্ত্রভান্ডারের উল্লেখ করে এর পর আসিফ বলেন, ‘‘তালিবানের শাসন সম্পূর্ণ ধ্বংস করে তাদের আবার গুহায় পাঠিয়ে দিতে পাকিস্তানের অস্ত্রভান্ডারের এক অংশও খরচ করতে হবে না, নিশ্চিত থাকুন।’’
তালিবান তাদের সীমাবদ্ধতা জেনেও নিজেদের ভাবমূর্তি বজায় রাখার জন্য ‘যুদ্ধের ঢাক’ বাজাচ্ছে, দাবি পাক মন্ত্রীর। দাবি, আফগানিস্তানের তালিবান সরকার সে দেশের সাধারণ মানুষকে ধ্বংস করার জন্য উন্মাদ হয়ে উঠেছে। এর আগে তালিবানকে ‘ভারতের হাতের পুতুল’ বলে দাবি করেছিলেন আসিফ। তুরস্কের আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, ‘‘কাবুলের মানুষ নয়াদিল্লির মদতে পুতুলনাচ নাচছেন। আফগানিস্তান যদি ইসলামাবাদের দিকে চোখ তুলে তাকায়, তা হলে চোখ উপড়ে ফেলা হবে।”
আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালিবানের শাখা তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি পাকিস্তানে দীর্ঘ দিন ধরে সক্রিয়। ইসলামাবাদের দাবি, আফগানিস্তান এবং ভারতের মদতে এই গোষ্ঠী পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালায়। ভারত এই দাবি প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছে। আফগান-পাক সংঘর্ষ শুরুর নেপথ্যেও এই গোষ্ঠীর হাত ছিল। এই পরিস্থিতিতে তুরস্কের শান্তি-আলোচনা ভেস্তে যাওয়ায় নতুন করে পাক-আফগান সীমান্ত উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পাক মন্ত্রীর হুঁশিয়ারিতেও সেই বার্তা রয়েছে।