Khaleda Zia Died

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় খালেদার অবদান স্মরণ করলেন হাসিনা! চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মৃত্যুতে শোকবার্তা দেশত্যাগী নেত্রীর

বাংলাদেশের শেষ কয়েক দশকের রাজনীতি আবর্তিত হয়েছে খালেদা এবং হাসিনার প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে কেন্দ্র করেই। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে হাসিনা এখন দেশান্তরী। আর তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদা লোকান্তরী হলেন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৩৫
চিরপ্রতিদন্দ্বিতার চিরঅবসান। (বাঁ দিকে) খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনা (ডান দিকে)।

চিরপ্রতিদন্দ্বিতার চিরঅবসান। (বাঁ দিকে) খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনা (ডান দিকে)। ছবি: রয়টার্স।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করলেন সে দেশের আর এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের শেষ কয়েক দশকের রাজনীতি আবর্তিত হয়েছে এই দুই নেত্রীর প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে কেন্দ্র করেই। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে হাসিনা এখন দেশান্তরী। আর তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদা লোকান্তরী হলেন।

Advertisement

হাসিনার দল আওয়ামী লীগের তরফে সমাজমাধ্যমে হাসিনার শোকবার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদার ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অবদানের’ কথা স্বীকার করেছেন হাসিনা। খালেদার জ্যেষ্ঠপুত্র তারেক রহমান এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের সমবেদনাও জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেত্রী। তিনি লিখেছেন, “বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তাঁর (খালেদা) অবদান অপরিসীম। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে এবং বিএনপি নেতৃত্বের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।”

খালেদার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়-ও। শোকবার্তায় তিনি লিখেছেন, “দেশের (বাংলাদেশ) সঙ্কটময় মুহূর্তে, যখন সাধারণ মানুষ নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন এবং দেশকে অস্থিতিশীল ও বিরাজনীতিকরণের অপচেষ্টা চলছে, তখন তাঁর এই চলে যাওয়া বাংলাদেশের উত্তরণের পথে এক গভীর প্রভাব ফেলবে।”

শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা হিসাবে যেমন বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন হাসিনা, তেমনই খালেদার পরিচিতি ছিল জিয়াউর রহমানের স্ত্রী হিসাবে। স্বামীর মৃত্যুর পর অবশ্য নিজেই নিজের পরিচিতি তৈরি করেছিলেন খালেদা। বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী তিনিই। তার পর প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন হাসিনা। রাজনীতির আঙিনা ছাপিয়ে তাঁদের দু’জনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ব্যক্তিগত পরিসরেও ঢুকে পড়েছিল। যেমন আলোচনা হয়েছে তাঁদের যোগাযোগের মাধ্যম লাল টেলিফোন নিয়ে। দুই নেত্রীর ফোন-কথোপকথনের একাংশ এক বার প্রকাশ্যে চলে আসে। শোনা যায়, ফোনটি খারাপ হয়ে গিয়েছিল না কি সেটি ‘ইচ্ছাকৃত’ ভাবে ধরা হয়নি, তা নিয়েই দীর্ঘ ক্ষণ ধরে বাদানুবাদ চালিয়ে গিয়েছিলেন দুই নেত্রী। সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার চিরঅবসান হয়ে গেল মঙ্গলবার সকালে।

মঙ্গলবার সকাল ৬টা নাগাদ (বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুসারে) ঢাকার হাসপাতালে মৃত্যু হয় খালেদার। একাধিক শারীরিক সমস্যা নিয়ে এক মাসেরও বেশি সময় ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর পরেই বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের তরফে শোকপ্রকাশ করা হয়েছে। সমাজমাধ্যমে অন্তবর্তী সরকারের তরফে দীর্ঘ পোস্ট করে ইউনূসকে উদ্ধৃত করে লেখা, “বেগম খালেদা জিয়া শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রীই ছিলেন না; তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।” একই সঙ্গে ওই পোস্টে হাসিনার সঙ্গে প্রয়াত বিএনপি নেত্রীর তুলনা করে ইউনূসকে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে, “শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনামলে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন সংগ্রাম ও প্রতিরোধের এক অনন্য প্রতীক। তাঁর আপসহীন ভূমিকা দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামে জাতিকে দারুণ ভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।”

Advertisement
আরও পড়ুন