Sunita Williams Return

মহাকাশ কেন্দ্র থেকে পৃথিবীতে ফেরার পরে ঠিক কী কী ঘটবে সুনীতাদের সঙ্গে? কবে ফিরবেন বাড়িতে?

মহাকাশ থেকে মহাকাশচারীরা ফিরলে তাঁদের জনসন স্পেস সেন্টারে চিকিৎসা করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা সুস্থ বলে ঘোষণা করার পরেই তাঁরা নিজের বাড়িতে পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারেন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৫ ২২:৪৬
সুনীতা উইলিয়ামস।

সুনীতা উইলিয়ামস। — ফাইল চিত্র।

আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। সব ঠিকঠাক চললে ভারতীয় সময় বুধবার ভোরে পৃথিবীতে নামবেন সুনীতা উইলিয়ামস, বুচ উইলমোর এবং তাঁদের সঙ্গী দুই মহাকাশচারী। আট দিনের জন্য গিয়ে প্রায় ন’মাস আটকে ছিলেন আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র (আইএসএস)-এ। প্রযুক্তিগত সমস্যাই ছিল কারণ। এ বার দুই মহাকাশচারী পৃথিবীতে ফেরার পরে ঠিক কী হবে? নাসার একটি সূত্র বলছে, পৃথিবীতে ফিরেই নিজের বাড়িতে যেতে পারবেন না সুনীতারা। তার আগে রয়েছে কিছু প্রক্রিয়া, যা মহাকাশ থেকে ফেরার পরে সব মহাকাশচারীকেই মানতে হয়।

Advertisement

স্থানীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৫৭ মিনিটে আমেরিকার ফ্লরিডা উপকূলে নামবেন সুনীতা-সহ চার মহাকাশচারী। ভারতের ঘড়িতে তখন বুধবার ভোর সাড়ে ৩টে। ইলন মাস্কের সংস্থার স্পেস এক্সের ড্রাগন ক্যাপসুল থেকে সুনীতা, বুচ এবং বাকি দুই মহাকাশচারীকে নামানো হবে। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যাপসুল থেকে নামানোর পরে সুনীতাদের স্ট্রেচারে শুইয়ে প্রাথমিক পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ফ্লরিডা থেকে হিউস্টনে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে চার মহাকাশচারীকে। সেখানে রয়েছে নাসার জনসন স্পেস সেন্টার। সেখানে সুনীতাদের দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা চলবে। প্রসঙ্গত, মহাকাশ থেকে মহাকাশচারীরা ফিরলে তাঁদের এই জনসন স্পেস সেন্টারেই চিকিৎসা চলে। সেখানকার চিকিৎসকেরা সুস্থ বলে ঘোষণার করার পরেই তাঁরা নিজেদের বাড়িতে পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারেন।

নাসার একটি সূত্র বলছে, হিউস্টনের জনসন স্পেস সেন্টারে চিকিৎসার পরে সুনীতারা নিজেদের মহাকাশবাসের বিশদ রিপোর্ট দেবেন সহকর্মীদের। ন’মাস আইএসএসে থাকার সময়ে তাঁদের কী অভিজ্ঞতা হল, সেই কথা জানাবেন সুনীতারা। তার পাশাপাশি, সাফল্য, ব্যর্থতার কথা তুলে ধরবেন মহাকাশচারীরা। সব শেষে নিজের বাড়িতে ফিরে যাবেন সুনীতারা।

প্রায় ন’মাস পরিবার থেকে দূরে তাঁরা। এই পৃথিবীর দৈনন্দিন জীবন থেকেও। সুনীতাদের ধীরে ধীরে সেই দৈনন্দিন জীবনে ফেরার সময় দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। মহাকাশ কেন্দ্রে বসে একটি সাক্ষাৎকারে সুনীতা জানিয়েছিলেন, বাড়িতে ফেরার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন তিনি। নিজের দুই পোষ্য কুকুর এবং পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে চান তিনি। এ বার সেই মুহূর্তই এগিয়ে এসেছে।

তবে কিছু প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে সুনীতাদের। এত দিন মহাকাশে থাকার পর পৃথিবীতে ফিরলে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে নভশ্চরদের। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ দিন ধরে মহাকাশে শূন্য মাধ্যাকর্ষণে থাকার কারণে স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় হেরফের ঘটে। মহাকাশের ‘মাইক্রোগ্র্যাভিটি’ অবস্থা শরীরের মধ্যে থাকা তরল ও রক্তচাপের উপর প্রভাব ফেলে। যার ফলে মস্তিষ্কে তরল জমা হতে থাকে। শরীরের রোগ প্রতিরোধশক্তিও কমতে থাকে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমতে থাকে ওজন। তা ছাড়া, দীর্ঘ কাল আইএসএস-এর শূন্য মাধ্যাকর্ষণে ভাসমান অবস্থায় থাকার কারণে পা মাটির সংস্পর্শে আসে না। ফলে পায়ের তলা নরম হতে হতে শিশুদের পায়ের মতো সংবেদনশীল হয়ে যায়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় একে ‘বেবি ফিট’ বলা হয়। এর ফলে পৃথিবীতে ফেরার পর প্রথম কয়েক দিন হাঁটাচলা করতে বেশ বেগ পেতে হতে পারে নভশ্চরদের। পেশীর ক্ষয়, দৃষ্টিশক্তির সমস্যাও হতে পারে।

Advertisement
আরও পড়ুন