(বাঁ দিকে) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম। গ্রাফিক সহায়তা: এআই।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ না-থামালে রাশিয়ার উপর পরোক্ষে বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর হুঁশিয়ারি দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিভের সঙ্গে শান্তি সমঝোতায় আসার জন্য মস্কোকে ৫০ দিন সময় দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে যুদ্ধ না-থামলে রাশিয়ার বাণিজ্যিক বন্ধুদের উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প।
আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটোর মহাসচিব মার্ক রাটের সঙ্গে সোমবার বৈঠক করেন ট্রাম্প। সেখানে তিন বছর ধরে চলে আসা রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয় তাঁদের। নেটোর সদস্য দেশগুলির মাধ্যমে ইউক্রেনকে আরও বেশি করে উন্নত অস্ত্র পাঠানোর কথাও ঘোষণা করেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, “আমরা চাই, ইউক্রেন যা করতে চাইছে, তা যেন করতে পারে।” তবে কোন ধরনের অস্ত্র পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে, সে বিষয়ে ট্রাম্প বা রাটে কেউ-ই কোনও বিস্তারিত মন্তব্য করেননি।
একই সঙ্গে রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ না-করলে মস্কোর বাণিজ্যিক ‘বন্ধু’দের উপর বাড়তি শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ, যে দেশগুলি রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করবে, তাদের পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপাবে আমেরিকা। রাশিয়ার ওই ‘বন্ধু’দের পণ্য আমেরিকার কোনও সংস্থা কিনলে তাদের ১০০ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক দিতে হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। আগামী ৫০ দিনের মধ্যে যদি ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ না-করে রাশিয়া, তবে এই শুল্ক ধার্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।
ভারতের প্রয়োজনীয় তেলের ৮০ শতাংশেরও বেশি আমদানি করতে হয়। আগে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির উপর নির্ভরশীলতা বেশি থাকলেও এখন রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা শুরু করেছে ভারত। গত কয়েক বছর ধরেই তেল আমদানির জন্য মস্কোর দিকে ঝুঁকেছে নয়াদিল্লি। ২০২৩ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাশিয়া থেকে ভারত ৩৫ শতাংশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে। সম্প্রতি ইরান-ইজ়রায়েল সংঘর্ষের আবহে বিশ্বের জ্বালানি বাজারে এক অস্থিরতা তৈরি হয়। ওই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি আরও বৃদ্ধি করেছে ভারত।
বাণিজ্যিক জাহাজের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণকারী সংস্থা ‘কেপলার’-এর তথ্য অনুসারে, গত জুনে রাশিয়া থেকে দৈনিক ২০.৮ লক্ষ ব্যারেল তেল আমদানি করেছে ভারতের শোধনাগারগুলি। ২০২৪ সালের জুলাইয়ের পর থেকে এটিই সর্বোচ্চ। যদিও ভারত অশোধিত তেলের জন্য একটিই মাত্র দেশের উপর নির্ভরশীল নয়। রাশিয়া থেকে তেল কেনা বৃদ্ধি পেলেও পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিও ভারতের কাছে অন্যতম বিকল্প পথ হতে পারে।