US Tariff on India

‘ভাল বন্ধু’ ভারতের উপর কত শতাংশ হারে শুল্ক চাপতে পারে? বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার আগেই জানিয়ে দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

আগামী ১ অগস্ট থেকে বিভিন্ন দেশের উপর ‘পারস্পরিক’ বা পাল্টা শুল্ক কার্যকর করছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। সেই তালিকায় ভারত থাকবে কি না, তা নিয়ে চর্চা চলছে নানা মহলে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৫ ১০:০২
US president Donald Trump said US-India trade deal not finalized yet, tariffs as high as 25 percentage

(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

ভারতের সঙ্গে আমেরিকার আদৌ বাণিজ্যচুক্তি হবে কি? সেই নিয়ে এখনও নানা মহলে প্রশ্ন রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়ে দিলেন, ভারতের উপর ২০ থেকে ২৫ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক ধার্য করা হতে পারে। আগামী ১ অগস্ট থেকে বিভিন্ন দেশের উপর ‘পারস্পরিক’ বা পাল্টা শুল্ক কার্যকর করছে ট্রাম্প প্রশাসন। বহু দেশ ইতিমধ্যেই আমেরিকার চাপিয়ে দেওয়া চড়া শুল্ক এড়াতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলেছে। তবে এখনও পর্যন্ত ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় পণ্যের ক্ষেত্রেও ২০ থেকে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক নেওয়া হবে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্পের ইঙ্গিত, ‘‘আমিও তাই মনে করি।’’

Advertisement

এক দিকে, ট্রাম্প ভারতকে ‘ভাল বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেছেন ঠিকই, তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ-ও মনে করেন, অন্য যে কোনও দেশের তুলনায় ভারতে আমেরিকার পণ্যের উপর বেশি পরিমাণ শুল্ক ধার্য করা হয়। সেই কারণে ভারতের উপরও পাল্টা শুল্ক চাপানোর ভাবনাচিন্তা করছেন ট্রাম্প। ব্লুমার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘ভারত আমাদের ভাল বন্ধু, কিন্তু তারা প্রায় অন্য যে কোনও দেশের তুলনায় বেশি শুল্ক আরোপ করছে। বন্ধু হয়ে তুমি এটা করতে পারো না।’’

ট্রাম্প আগেই আভাস দিয়েছিলেন, যে দেশগুলির সঙ্গে আলাদা করে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে না, তাদের উপর ১৫-২০ শতাংশ ন্যূনতম শুল্ক চাপাবে আমেরিকা। গত এপ্রিলের ঘোষণা অনুসারে, সব দেশের উপর ১০ শতাংশ ন্যূনতম শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে এ বার সেই পরিমাণ কিছুটা বৃদ্ধি করবেন বলে জানান তিনি। তাঁর কথায়, “এটি (বৈশ্বিক শুল্ক) ১৫-২০ শতাংশের মধ্যে থাকবে। হয়তো এই দু’টি শুল্কহারের মধ্যে কোনও একটি ধার্য হবে।”

দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমেরিকার বাণিজ্যিক ঘাটতি দূর করতে উদ্যোগী হয়েছেন ট্রাম্প। আমেরিকার বাজারে ভিন্‌দেশি পণ্যের উপর নতুন হারে শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। হোয়াইট হাউসে ঢোকার পর যে দেশগুলি বাণিজ্যচুক্তির বিষয়ে অগ্রসর হয়েছিল, তাদের মধ্যে ভারত অন্যতম। কয়েক দিন আগেই কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানিয়েছিলেন, ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তির বিষয়ে তিনি আশাবাদী। আমেরিকার প্রতিনিধিরাও সেই একই আশা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে যে আলোচনার আরও প্রয়োজন রয়েছে, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল আমেরিকা। তার মধ্যে মঙ্গলবারই আমেরিকার বাণিজ্য সংক্রান্ত প্রতিনিধি জেমিসন গ্রির জানিয়েছেন, বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আরও দর কষাকষির প্রয়োজন।

গত ২ এপ্রিল অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভারতের পণ্যের উপরেও অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক (২৬ শতাংশ) বসানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এর পাশাপাশি রয়েছে অ্যালুমিনিয়াম, ইস্পাত এবং গাড়িতে চড়া কর। এই আবহে আমেরিকার সঙ্গে পাঁচটি পর্যায়ে বৈঠক করেন ভারতের প্রতিনিধিরা। কিন্তু বৈঠকের ফল স্পষ্ট হয়নি। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, কৃষি, দুগ্ধক্ষেত্রের মতো বিষয়ে আমেরিকাকে খোলা বাজার ছেড়ে দিতে পারবে না ভারত। তাই অনেক বিষয়ে কথা এগিয়ে গেলেও কিছু কিছু ক্ষেত্র নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দর কষাকষি চলছে। সেই আবহে ভারতের উপর শুল্ক আরোপ নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে।

Advertisement
আরও পড়ুন