Russia-Ukraine Ceasefire

পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক হবে! যুদ্ধবিরতি নিয়ে মার্কিন দূতের সঙ্গে আলোচনার পর জানাল ক্রেমলিন

পুতিনের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকোভ বলেন, ‘‘কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসতে পারেন ট্রাম্প।’’

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৫ ১৬:১৩
US President Donald Trump may meet his Russian counterpart Vladimir Putin on Ukraine ceasefire

ভ্লাদিমির পুতিন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডানদিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

শীঘ্রই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেখানে যুদ্ধবিরতি নিয়ে নির্ণায়ক আলোচনা হতে পারে দুই রাষ্ট্রনেতার। বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছে রুশ সংবাদ সংস্থা ‘তাস’। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে আমেরিকা-রাশিয়া টানাপড়েনের মধ্যেই মস্কোয় গিয়ে বুধবার পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। সেখানেই দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠকের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে বলে প্রতাশিত খবরে দাবি।

Advertisement

পুতিনের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকোভ বলেন, ‘‘কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসতে পারেন ট্রাম্প।’’ বুধবার পুতিন-উইটকভের তিন ঘণ্টার বৈঠকে উশাকোভও হাজির ছিলেন। সেখানে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সম্পর্কে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

গত নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারপর্বে ফিলাডেলফিয়ায় প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে (মুখোমুখি বিতর্কে) ট্রাম্প বলেছিলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে দেব।’’ গত জানুয়ারিতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার আগে দাবি করেছিলেন, পুতিনের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের আয়োজন চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি এবং এপ্রিলে দু’দফায় জ়েলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করলেও ট্রাম্প এখনও যুদ্ধবিরতি নিয়ে পুতিনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেননি। বরং গত মাসে যুদ্ধবিরতির জন্য রাশিয়াকে দু’দফায় চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ওয়াশিংটন-মস্কো সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি করেন ট্রাম্প।

গত ১৪ জুলাই কিভের সঙ্গে শান্তি সমঝোতায় আসার জন্য মস্কোকে ৫০ দিনের সময় দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এর মধ্যে যুদ্ধ না-থামলে রাশিয়ার বাণিজ্যিক বন্ধুদের উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এর পরে ২৮ জুলাই ট্রাম্প নিজেই নিজের দেওয়া সময়সীমা ‘লঙ্ঘন’ করেন! রাশিয়াকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘‘ইউক্রেনের শান্তিচুক্তিতে সম্মত হওয়ার জন্য পুতিনের কাছে ১০-১২ দিন সময় আছে। নয়তো নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে রাশিয়াকে!’’ মস্কো তখনই ট্রাম্পের ‘চরম সময়সীমা’ খারিজ করে দিলে গত ৩১ জুলাই ভারত এবং রাশিয়ার অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে কটাক্ষ করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী বোঝাপড়া করছে, তা নিয়ে আমি ভাবিত নই। একসঙ্গে তারা তাদের মৃত অর্থনীতিকে ডোবাতে পারে।”

ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের পরেই প্রাক্তন রুশ প্রেসিডেন্ট তথা সে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ আমেরিকাকে নিশানা করে বলছিলেন, ‘‘যাদের মৃত বলা হচ্ছে, তাদের ‘ডেড হ্যান্ড’ থেকে আসন্ন বিপদকে উপেক্ষা করা সহজ হবে না।” এর পরেই ট্রাম্প শুক্রবার রাশিয়ার জলসীমার কাছে পরমাণু অস্ত্রবাহী দু’টি ডুবোজাহাজ পাঠানোর কথা ঘোষণা করেন। কারণ হিসাবে জানান, মেদভেদেভের মন্তব্য প্ররোচনামূলক। তাই এমন পদক্ষেপ। প্রসঙ্গত, ‘ডেড হ্যান্ড’ এমন একটি স্বয়ংক্রিয় পরমাণু প্রত্যাঘাতের পদ্ধতি, যা আশির দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের জমানায় গড়ে তোলা হয়েছিল। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল, যদি আমেরিকা বা অন্য কোনও পরমাণু শক্তিধর প্রতিপক্ষ প্রথম আঘাতে সোভিয়েত নেতৃত্ব এবং কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল ধ্বংস করে দেয়, তবুও স্বয়ংক্রিয় ভাবেই ‘চূড়ান্ত প্রতিশোধমূলক প্রত্যাঘাত’ করতে পারবে মস্কোর পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র।

Advertisement
আরও পড়ুন