Bangladesh Unrest

ক্ষতিগ্রস্ত সংবাদপত্রের দফতরে ফোন, বাংলাদেশ জুড়ে রাতভর তাণ্ডব নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন ইউনূস, কী বার্তা?

হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে যে অশান্তি হতে পারে, তা আগেই আঁচ করেছিল ঢাকা। তাই রাতেই প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন এবং সংযত থাকার আবেদন জানান। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:৩১
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। —ফাইল চিত্র।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক তথা জনপ্রিয় ছাত্রনেতা ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে রাতভর তাণ্ডব নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। রাতে বাংলাদেশের প্রথম সারির দুই সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’ এবং ‘ডেলি স্টার’-এর দফতরে ভাঙচুর চালানো হয়। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় দুই ভবনে। এই ঘটনার পর রাতেই দুই সংবাদপত্রের সম্পাদকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ইউনূস। পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। শুক্রবার সকালে ইউনূসের প্রেস উইং থেকে বিবৃতি জারি করে এ কথা জানানো হয়েছে।

Advertisement

ইউনূসের দফতরের বিবৃতি অনুযায়ী, প্রথম আলো-র সম্পাদক মতিউর রহমান এবং ডেলি স্টার-এর সম্পাদক মাহফুজ় আনামের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রতিষ্ঠান এবং সংবাদকর্মীদের উপর হামলাকে ন্যক্কারজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত বলে উল্লেখ করেছেন। ইউনূসের কথায়, ‘‘এই হামলা আমাকে গভীর ভাবে ব্যথিত করেছে। এই দুঃসময়ে সরকার আপনাদের পাশে আছে।’’ শুধু তা-ই নয়, বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনাকে ‘স্বাধীন গণমাধ্যমের উপর হামলার শামিল’ বলেও উল্লেখ করেছেন ইউনূস। তাঁর মতে, এর ফলে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রগতি এবং স্বাধীন সাংবাদিকতা বাধাপ্রাপ্ত হবে।

দু’টি সংবাদপত্রকেই পূর্ণ নিরাপত্তা এবং সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। সম্পাদকদের সঙ্গেও ইউনূস দেখা করবেন।

হিংসার বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ইউনূস। তাঁর দফতর যাবতীয় ঘটনা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরের নিন্দা জানিয়েছে ‘দ্ব্যর্থহীন ভাবে’। বলা হয়েছে, ‘‘যাঁরা বিশৃঙ্খলাকে পুঁজি করে এবং শান্তির পথকে উপেক্ষা করে, তাঁদের জন্য অগ্রগতিকে ব্যাহত হতে দেওয়া যাবে না।’’ বৃহস্পতিবার রাত থেকে ঘটা যাবতীয় ঘটনাকে ‘উগ্র গোষ্ঠী দ্বারা সংঘটিত সহিংসতা’ বলেছে ইউনূসের দফতর।

গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন হাদি। সরকারি উদ্যোগে তাঁকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু মাথায় গুলি লাগায় হাদির শারীরিক পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছিল। ছ’দিন লড়াইয়ের পর সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর বৃহস্পতিবার রাতেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন ইউনূস। দেশবাসীকে সংযত থাকার আবেদন করেছিলেন। অর্থাৎ, হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে যে অশান্তি হতে পারে, তা আগেই আঁচ করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। কিন্তু তাঁর আবেদন কার্যত অগ্রাহ্য করে রাতেই নানা প্রান্তে শুরু হয় তাণ্ডব। চট্টগ্রামে ভারতীয় উপদূতাবাসে হামলা চালানো হয়। রাতভর তার সামনে অবস্থানেও বসেছিলেন ছাত্রযুবদের একাংশ। এ ছাড়া, ধানমন্ডিতে বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছায়ানট ভবনে ভাঙচুর চালানো এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ভাঙা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি।

প্রথম আলো-র চারতলা ভবন ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে রাতের তাণ্ডবে। ডেলি স্টার-এর দফতরেও দু’টি তলা ক্ষতিগ্রস্ত। সাংবাদিকেরা ভিতরে থাকা অবস্থাতেই ভবনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে পুলিশ ও দমকল তাঁদের উদ্ধার করে।

Advertisement
আরও পড়ুন