World’s ‘Poorest President’

বামপন্থী গেরিলা থেকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে গরিব প্রেসিডেন্ট’! প্রয়াত উরুগুয়ের সেই কিংবদন্তি ‘পেপে’

ষাট ও সত্তরের দশকে উরুগুয়ের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সরাসরি গেরিলা যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন পেপে। গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণসংশয়ও হয়েছিল এক বার।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৫ ২০:৩০
World’s ‘Poorest President’ Jose Mujica aka Pepe died at 89 in Uruguay

প্রয়াত উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট হোসে মুহিকা। —ফাইল চিত্র।

অনাড়ম্বর জীবনযাপন আর অর্থসঞ্চয়ে অনীহার জন্য পরিচিত ছিলেন তিনি। পশ্চিমী সংবাদমাধ্যম তাঁকে তকমা দিয়েছিল, ‘বিশ্বের সবচেয়ে গরিব প্রেসিডেন্ট’ বলে। কিন্তু হোসে মুহিকা ওরফে পেপে তা শুনলেই আপত্তি করতেন। বলতেন, ‘‘গরিব সে নয়, যার কিছু নেই। গরিব তাকে বলে, যে সব সময় আরও বেশি চায়।’’

Advertisement

লাতিন আমেরিকার দেশ উরুগুয়ের সেই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা কিংবদন্তী বামপন্থী নেতা প্রয়াত হলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। গত দু’বছর ধরে গলার ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। উরুগুয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইয়ামান্দু অরসি বুধবার পেপের মৃত্যুর কথা জানিয়ে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন। ২০১০-১৫ উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট পদে থাকাকালীন পেপের অবদানকে স্মরণ করে লিখেছেন— ‘‘আপনি আমাদের যা কিছু দিয়েছেন, তার জন্য জাতি কৃতজ্ঞ।’’

কৈশোরেই বামপন্থী গেরিলা সংগঠন টুপামারোসের সদস্য হয়েছিলেন পেপে। ষাট ও সত্তরের দশকে তিনি সে দেশের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সরাসরি গেরিলা যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণসংশয়ও হয়েছিল এক বার। সেনার হাতে ধরা পড়ার পরে প্রায় ১৪ বছর জেলের ‘সলিটরি সেল’ ছিল পেপের ঠিকানা। অবশেষে ১৯৮৫ সালে উরুগুয়েতে সেনাশাসনের অবসানে গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তনের পরে তিনি মুক্তি পেয়েছিলেন।

এর পরে বামপন্থী দল ‘মুভমেন্ট ফল পপুপার পার্টিসিপেশন’ (এমপিপি)-এর হয়ে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে তাঁর ‘অনুপ্রবেশ’। ২০০৫ সালে প্রথম মন্ত্রী হয়েছিলেন। ২০০৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে প্রায় ৫৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন তিনি। প্রেসিডেন্টের জন্য বরাদ্দ সরকারি প্রাসাদে না থেকে পেপে থাকতেন ছোট্ট একতলা একটি বাড়িতে। গাড়ি হিসাবে ব্যবহার করতেন পুরনো একটি নীল রঙের ১৯৮৭ সালের ভক্সওয়াগন বিটল। নিজের বেতনের অধিকাংশই দান করে দিতেন সরকারি ত্রাণ তহবিলে।

পেপের জমানায় ৩৫ লক্ষ জনসংখ্যার দেশে আর্থিক বৃদ্ধির হার সাড়ে পাঁচ শতাংশ ছুঁয়েছিল। বেকারত্ব কমেছিল নজিরবিহীন ভাবে। চার্চের বিরোধিতা উপেক্ষা করে সমকামী বিয়েতে আইনি বৈধতা এবং গর্ভপাতের অনুমোদনের পদক্ষেপ হয়েছিল তাঁর আমলেই। লাতিন আমেরিকার আর এক বামপন্থী রাষ্ট্রনেতা কিংবদন্তী ফিদেল কাস্ত্রোর মতোই তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন পেপে। নানা সংবাদমাধ্যমে তাঁদের তুলনাও হত প্রায়শই। কিন্তু ফিদেলের মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেকে উপস্থাপিত করতে কখনও সক্রিয় হননি তিনি।

Advertisement
আরও পড়ুন