Share Market

অস্থির বাজারে একগুচ্ছ আইপিও, শেয়ার ছাড়বে আইসিআইসিআই, টাটার মতো গোষ্ঠী

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৩০ জুন পর্যন্ত ২৪টি সংস্থা আইপিও মারফত ৩৭,৯৭৭ কোটি টাকা তুলেছে। সেবি অনুমোদিত আসন্ন ইসুর অঙ্ক প্রায় ১.১৫ লক্ষ কোটি টাকা। আর ছাড়পত্রের অপেক্ষায় থাকাগুলির হতে পারে প্রায় ১.৫ লক্ষ কোটি।

অমিতাভ গুহ সরকার
শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৫ ০৭:৫৫
বহু সংস্থা আইপিও আনার পরেও ফের শেয়ার ছাড়ে, যা পরবর্তী ইসু বা এফপিও।

বহু সংস্থা আইপিও আনার পরেও ফের শেয়ার ছাড়ে, যা পরবর্তী ইসু বা এফপিও। —প্রতীকী চিত্র।

আমেরিকার সঙ্গে ভারতের শুল্ক নিয়ে কি ধরনের চুক্তি হতে চলেছে, সে ব্যাপারে সবাই ধন্দে। যে কারণে বাজার অস্থির। তবে তাতে বিভিন্ন সংস্থার প্রথমবার শেয়ার ছেড়ে তহবিল সংগ্রহের (আইপিও কিংবা নতুন বা প্রথম ইসু) উৎসাহে ভাটা পড়েনি। একের পর এক ছোট, মাঝারি, বড় মাপের আইপিও আসছে। সেগুলির বিক্রি মোটা তহবিল শুষে নিতে পারে বাজার থেকে। কিছু দিনের মধ্যে শেয়ার ছাড়বে টাটা, এলজি, আইসিআইসিআই, আইনক্স, এনএসডিএল, জেএসডব্লিউ ইত্যাদি নামী গোষ্ঠী। গত অর্থবর্ষে ১০৫টি আইপিও মারফত বিভিন্ন সংস্থা ২,১১,১৫১ কোটি টাকা তুলেছিল। এ বছর আরও বেশি হতে পারে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৩০ জুন পর্যন্ত ২৪টি সংস্থা আইপিও মারফত ৩৭,৯৭৭ কোটি টাকা তুলেছে। সেবি অনুমোদিত আসন্ন ইসুর অঙ্ক প্রায় ১.১৫ লক্ষ কোটি টাকা। আর ছাড়পত্রের অপেক্ষায় থাকাগুলির হতে পারে প্রায় ১.৫ লক্ষ কোটি। প্রায় প্রত্যেক সপ্তাহেই আসছে নতুন সংস্থার শেয়ার। লগ্নির আগ্রহ থাকলে সজাগ থাকতে হবে। এ সপ্তাহে খুলছে ১৪টি আইপিও। একই সপ্তাহে বাজারে নথিবদ্ধ হবে মোট ১২টি সংস্থার শেয়ার।

তবে বাজারে ছাড়া সব শেয়ার সংস্থার প্রথম ইসু বা আইপিও না-ও হতে পারে। বহু সংস্থা আইপিও আনার পরেও ফের শেয়ার ছাড়ে, যা পরবর্তী ইসু বা এফপিও। শুধু সংস্থার সদস্যদের জন্যে শেয়ার ছাড়লে তা রাইটস ইসু, যোগ্য সংস্থাগুলির জন্যে ছাড়লে কিউআইপি ইত্যাদি। সব ধরনের ইসুর টাকা সংস্থার ঘরে ঢোকে। সংস্থার উদ্যোক্তাদের মালিকানাধীন শেয়ার বা তার একাংশ পাবলিক ইসুর মাধ্যমে বিক্রিকে বলে ‘অফার ফর সেল’। এ ক্ষেত্রে টাকা সংস্থা পায় না। বিভিন্ন সরকারি সংস্থাও আইপিও আনে।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শেয়ারের মূল দামের (ফেস ভ্যালু) তুলনায় আইপিও-তে বেশি দাম চাওয়া হয়। এই অতিরিক্ত দাম শেয়ার প্রিমিয়াম। ফেস ভ্যালু সাধারণত ১০০, ১০, ৫, ২ বা ১ টাকা হয়। নামী, লাভজনক এবং সম্ভাবনাময় সিংহভাগ সংস্থা মূল দামের বহু গুণ দাম নেয়। এই শেয়ারের সাধারণত ৩৫% সংরক্ষিত থাকে ছোট লগ্নিকারীর (লগ্নি ২ লক্ষ টাকার কম) জন্যে। বেশির ভাগ সময়ে ন্যূনতম আবেদনের অঙ্ক হয় ১৩,৫০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা। লগ্নিকারীর ব্যাঙ্কে আবেদনের টাকা ‘ব্লক’ করে রাখা হয়। আবেদনকারীর নামে শেয়ার বণ্টন হলে অ্যাকাউন্ট থেকে তা কাটা হয়। পুরোটাই চলে অনলাইনে। শেয়ার কিনতে ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট বাধ্যতামূলেক। সাধারণত তিন দিন খোলা থাকে ইসু। দিন দুয়েকের মধ্যেই শেয়ার বণ্টন। আইপিও বন্ধ হওয়ার তিনটি কাজের দিনের মধ্যে শেয়ারকে বাজারে নথিবদ্ধ করতে হয়।

আগামী দিনে যে সব সংস্থা বাজারে শেয়ার ছাড়বে, তার মধ্যে রয়েছে— এনএসডিএল (৪০১১ কোটি টাকা), টাটা ক্যাপিটাল (১৭,২০০ কোটি টাকা), এলজি ইলেকট্রনিক্স (১৫,০০০ কোটি টাকা), আইসিআইসি প্রু অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট (১০,২০০ কোটি), আইনক্স ক্লিন এনার্জি (৬০০০ কোটি), গ্রোও (৫৯৫০ কোটি), মিশো (৪২৫০ কোটি), জেএসডব্লিউ সিমেন্ট (৪০০০ কোটি) ইত্যাদি। বুধবার ৩০ জুলাই খুলছে এনএসডিএলের প্রথম ইসু। ২ টাকা ফেস ভ্যালুর প্রতিটি শেয়ারের দামের বন্ধনি ৭৬০-৮০০ টাকা। আবেদন করতে হবে কমপক্ষে ১৮টি শেয়ারের (১৩,৬৮০ টাকা) জন্যে। ৬ অগস্টের মধ্যে বাজারে নথিবদ্ধ হবে এই ডিপোজ়িটরি সংস্থার (যেখানে ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খোলা যায়) শেয়ার। ডিপোজ়িটরি সংস্থা সিডিএসএল-ও বাজারে নথিবদ্ধ। ভাল ইসুতে বহু ক্ষেত্রে প্রয়োজনের অনেক গুণ বেশি শেয়ার কেনার আর্জি জমা পড়ে। ইসুর আকার বড় হলে তাই লগ্নিকারীর শেয়ার পাওয়া সহজ।

(মতামত ব্যক্তিগত)

আরও পড়ুন