অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সকলকে একজোট হতে হবে! গড়তে হবে অভিন্ন সন্ত্রাসবাদবিরোধী স্কোয়াডের (এটিএস) কাঠামো। সব রাজ্য-পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী বাহিনীকে এক ছাতার তলায় আনার কথা জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি এ-ও জানান, সব রাজ্যের পুলিশ যাতে সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানের জন্য প্রতিটি স্তরে একই রকম প্রস্তুতির সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত হবে এই কাঠামো বাস্তবায়িত হলে! একই সঙ্গে পহেলগাঁও হত্যালীলা নিয়ে পাকিস্তানকেও বিঁধলেন তিনি।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) আয়োজিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী সম্মেলন’ উদ্বোধন করেন শাহ। সেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান নিয়ে সব তদন্তকারী সংস্থাকে একজোট হওয়ার কথা বললেন তিনি। তাঁর দাবি, এ ভাবেই ‘সংগঠিত অপরাধের উপর ৩৬০ ডিগ্রি’ আক্রমণ করা সম্ভব হবে। শাহের মতে, এমন আক্রমণের ফলে সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবেন।
সন্ত্রাসী কার্যকলাপকে একেবারে শূন্যে নামাতে হবে, জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রতিটি রাজ্যের পুলিশ প্রধানকে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার অনুরোধ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘এই পরিকল্পনা সারা দেশে বাস্তবায়িত হলে প্রতিটি স্তরে অভিন্ন প্রস্তুতির সুযোগ থাকবে।’’ শাহের কথায়, ‘‘সারা দেশে একটি সাধারণ এটিএস কাঠামো তৈরি হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি রাজ্যের পুলিশপ্রধানের উচিত যত দ্রুত সম্ভব এটি বাস্তবায়ন করা।’’
শাহ মনে করেন, সন্ত্রাসবিরোধী তদন্ত আলাদা আলাদা না-হয়ে, এক ছাদের নীচে হলে তা বেশি কার্যকর হবে। তিনি এ-ও দাবি করেন, কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং রাজ্য-পুলিশ প্রযুক্তির ভাল ব্যবহার করছে। শাহ মনে করেন, অভিন্ন এটিএস কাঠামো তৈরি হলে সন্ত্রাসীদের বিচারের ক্ষেত্রেও সুবিধা পাওয়া যাবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যত ক্ষণ না এই নীতি অবলম্বন করতে পারছি, তত দিন সন্ত্রাসী হুমকির সঠিক মূল্যায়ন করা সম্ভব হবে না। যদি সমস্ত তথ্য একে অপরের সঙ্গে সহজে ভাগ করে নেওয়ার সুযোগ থাকে, তবে তদন্তে অনেক সুবিধা হবে।’’ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে সন্ত্রাসীদের গতিবিধি এখন অনেক সহজেই বোঝা যায়। সেই সব তথ্য যদি একই ছাদের তলায় থাকে তবে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের ক্ষেত্রে তা অনেক বেশি ফলদায়ক হবে, এমনই মনে করেন শাহ।
শাহের বক্তৃতায় উঠে এসেছে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতির কথা। তিনি বলেন, ‘‘সংগঠিত অপরাধ নেটওয়ার্কগুলি প্রথমে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে কাজ করে। তবে সেই সব সংগঠনের সন্ত্রাসী নেতারা যখন বিদেশে পালিয়ে যান, তখন ওই সব সংগঠন সন্ত্রাসমূলক কাজ করে। মুক্তিপণ থেকে পাওয়া অর্থ ওই কাজে ব্যবহার করা হয়।’’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন, এনআইএ এবং সিবিআই বা অন্য গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিটি রাজ্যকে তাদের সীমায় থাকা সন্ত্রাসবাদী হুমকি দূর করতে হবে। একই সঙ্গে পহেলগাঁওকাণ্ড নিয়ে মুখ খোলেন শাহ। তাঁর দাবি, এই সন্ত্রাসী হামলার তদন্ত আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।