এখন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে বিদেশি লগ্নি মোট শেয়ারের ২০ শতাংশের বেশি হয় না। —প্রতীকী চিত্র।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক চাইছে ভারতে আরও বেশি ব্যাঙ্ক থাকুক বিদেশি মালিকানায়। সে জন্য ব্যাঙ্কের মালিকানা সংক্রান্ত আইন ঢেলে সাজানোর ইঙ্গিতও দিচ্ছে। সূত্রের দাবি, ভারতের মতো সম্ভাবনাময় অর্থনীতির ব্যাঙ্কিং শিল্পে বিদেশি লগ্নিকারীদের আগ্রহ এবং ব্যাঙ্কগুলিতে দীর্ঘ মেয়াদে মূলধনের জোগান নিশ্চিত করাই কারণ। তবে এই ক্ষেত্রের কর্মী ইউনিয়নগুলি এর বিরোধী। তাদের মতে, এতে দেশের সার্বভৌমত্ব খর্ব হবে। আর্থিক পরিষেবায় নাক গলাবেন বিদেশিরা। মানুষের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হতে পারে।
বণিকসভা মার্চেন্টস চেম্বারের ব্যাঙ্কিং এবং আর্থিক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান স্মরজিৎ মিত্র বলেন, ‘‘বিদেশি ব্যাঙ্ক তুলনায় অনেক কম সুদে ঋণ দিতে পারবে। যা শিল্পের অগ্রগতির জন্য জরুরি।’’ ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার প্রাক্তন সিএমডি ভাস্কর সেনের মতে, ‘‘ব্যাঙ্কিং শিল্পের দ্রুত প্রসার, মূলধনের জোগান বৃদ্ধি, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মতো প্রয়োজন মিটতে পারে এতে।’’ তবে ব্যাঙ্কের কর্মী-অফিসারদের ইউনিয়নগুলির দাবি, বিদেশি মালিক দেশের প্রত্যন্ত প্রান্তে পরিষেবা দিতে কতটা আগ্রহী হবে সন্দেহ আছে। উল্টে বিদেশি পুঁজি বেড়ে গেলে দীর্ঘ মেয়াদে দেশের আর্থিক পরিষেবা ক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগর বলেন, ‘‘আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়াতে আরও বেশি ঋণ বিলি জরুরি দেশে। এই খাতে পুঁজি জোগাড়ের লক্ষ্য থেকেই বিদেশি লগ্নিকারীদের ডাকা হচ্ছে।’’ ব্যাঙ্ক অফিসারদের দুই ইউনিয়ন আইবকের রাজ্য সম্পাদক শুভজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় এবং এআইএনবিএফ-এর সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাসের বক্তব্য ব্যাঙ্কের মতো ক্ষেত্র এতটা খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ইউনিয়ন-সহ ব্যাঙ্কিং শিল্পের সব পক্ষের সঙ্গে ়কথা বলে।
এখন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে বিদেশি লগ্নি মোট শেয়ারের ২০ শতাংশের বেশি হয় না। বেসরকারি ব্যাঙ্কে ব্যক্তিগত, বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থা ইত্যাদি মিলিয়ে সর্বোচ্চ সীমা ৭৪%। এর মধ্যে ৪৯% সরাসরি হতে পারে। এর থেকে বেশি হলে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমোদন জরুরি। তবে একক ভাবে কোনও বিদেশি ১৫ শতাংশের বেশি মালিকানা হাতে রাখতে পারে না।