প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
নির্দিষ্ট লক্ষ্য বেঁধে আর্থিক সংস্কার করতে চাইছে কেন্দ্র। বাজেটের আগে মঙ্গলবার অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই এই বার্তা দেন তিনি। দুনিয়া জুড়ে আর্থিক অনিশ্চয়তাও অন্যতম প্রধান বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে আলোচনায়। উল্লেখ্য, একই দিনে কেন্দ্রের দাবি, জাপানকে পিছনে ফেলে চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হয়েছে ভারত।তার মাপ ৪.১৮ লক্ষ কোটি ডলার। ২০৩০-এর মধ্যে জার্মানিকে পিছনে ফেলে তৃতীয় স্থান দখল করবে দেশ।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক-নীতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে সারা বিশ্বে অনিশ্চয়তার মধ্যে দেশের অর্থনীতি নিয়ে চিন্তা রয়েছে মোদী সরকারের অন্দরে। মূলত আমেরিকার শুল্ক নীতিতে দেশের রফতানিতে ধাক্কা লাগার আশঙ্কা রয়েছে। সূত্রের খবর, মোদী বৈঠকে দু’টি জরুরি পন্থার কথা তুলে ধরেন। এক, ভারতে বিশ্ব বাজারে রফতানি করার মতো পণ্য উৎপাদনের ক্ষমতা তৈরি করা। দুই, বিশ্বের জোগানশৃঙ্খলে ভারতের পণ্য উৎপাদন ব্যবস্থাকে আরও যুক্ত করা।
সূত্রের খবর, অর্থনীতিবিদরা জানান, পণ্য রফতানিতে জোর দিতে হবে দেশকে। পরিষেবা রফতানি আরও বহুমুখী করা দরকার। আর্থিক বৃদ্ধি ও লগ্নিকে সাহায্য করতে কেন্দ্রেরপরিকাঠামোয় বিপুল অর্থ খরচের কৌশল থেকে সরলে চলবে না। এ দিন বৈঠকের ‘থিম’ ছিল— ‘আত্মনির্ভরতা ও কাঠামোগত রূপান্তর: বিকশিত ভারতের কর্মসূচি’। মোদী বলেন, বিকশিত ভারত এখন সরকারি নীতিরঊর্ধ্বে উঠে মানুষের আকাঙ্ক্ষা হয়ে উঠেছে। অর্থনীতিবিদেরা জানান, শিল্পেজমির সমস্যা মেটাতে কাঠামোগত সংস্কার চাই। গৃহস্থ পরিবারে ঋণের বোঝা বেড়ে যাওয়া, গৃহস্থের সঞ্চয় বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা নিয়েও কথা হয়।
নরেন্দ্র মোদী আজকেই বিদায়ী বছর ২০২৫-কে ‘সংস্কারের বছর’ তকমা দিয়ে নিবন্ধ লিখেছেন। তাঁর দাবি, ভারত এখন সংস্কার এক্সপ্রেসে সওয়ার। জিএসটি-আয়করে ছাড়, ছোট সংস্থার সংজ্ঞা বদল, বিমা সংস্থায় ১০০% বিদেশি লগ্নি, সিকিউরিটিজ় মার্কেট কোড বিল, শ্রম বিধি চালু করা, পরমাণু জ্বালানি ক্ষেত্রে বেসরকারি লগ্নি ও বিদেশি জোগানের দরজা খোলা, নতুন রোজগার গ্যারান্টি আইন এবং ব্রিটেন, নিউ জ়িল্যান্ড, ওমানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির মতো সাফল্য তুলে ধরেছেন তিনি। আজ অর্থ মন্ত্রকের যুক্তি, সুইস সংস্থা ইউবিএস-এররিপোর্ট বলছে, বিশ্বে অনিশ্চয়তার মধ্যেও টালমাটাল হয়নি ভারতের অর্থনীতি। দেশে চাহিদা, মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ ভারতকে উঠতি বাজারের মধ্যে প্রথম সারিতে রেখেছে। ১ ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেট পেশ করার কথা। ইতিমধ্যেই তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রস্তুতি বৈঠক সেরেছেন। এ দিন মোদী,নির্মলার সঙ্গে বৈঠকে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে ছিলেন অশোক ভট্টাচার্য, এন আর ভানুমূর্তি, পিনাকী চক্রবর্তী, সমীরণ চক্রবর্তী, অভিমান দাস, সিদ্ধার্থ স্যান্যাল, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, ডি কে জোশী, অসীমা গয়াল প্রমুখ।