শিক্ষিকাদের ‘চাইল্ড কেয়ার লিভ’ প্রাপ্তি বিষয়ে এই চিঠি। আমি দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি স্কুলের শিক্ষিকা। গত এগারো বছর ধরে নিজের দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমার প্রাপ্য ৭৩০ দিনের ছুটির মধ্যে মাত্র ৬০ দিন নিয়েছি এখনও পর্যন্ত। কিছু দিন আগে আমার একমাত্র মেয়ে, যে ক্লাস ইলেভেনে পড়াশোনা করছে, হঠাৎ খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর পরে চিকিৎসার বিস্তারিত তথ্য দিয়ে আমি স্কুল ইনস্পেকটর (এসআই)-এর কাছে দেড় মাসের ছুটির আবেদন জানাই। কিন্তু উনি এক মাসের বেশি ছুটি মঞ্জুর করলেন না। ডিস্ট্রিক্ট প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিল (ডিপিএসসি) দক্ষিণ ২৪ পরগনা আমার ছুটি মঞ্জুর করলেও এসআই ওই এক মাসের সিদ্ধান্তই বহাল রাখেন। অনুরোধ করা হলে বলেন, নতুন করে আবেদন জমা দিয়ে, নতুন প্রেসক্রিপশন-সহ ফের ১৫ দিনের ছুটির দরখাস্ত করতে। কিন্তু ডাক্তার দেড় মাস পরেই ডেট দিয়েছিলেন, ফলে নতুন প্রেসক্রিপশন পাওয়াও সম্ভব ছিল না। আমাকে বাধ্য হয়েই স্কুলে যোগ দিতে হয়। নতুন করে আর দরখাস্ত করিনি।
ছুটি তো সরকারের দেওয়া। অবশ্যই ছুটি নিয়ে অনেকে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন। সেই সব ক্ষেত্রে ভাল ভাবে দেখেশুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তো যথেষ্ট প্রয়োজন ছিল বলেই ছুটির আবেদন করেছিলাম। সেই প্রয়োজনের সপক্ষে প্রমাণও জমা দিয়েছিলাম। তা হলে আমাকে এমন হয়রান হতে হল কেন?
রাখী মিত্র চক্রবর্তী, জয়নগর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
কষ্টের রেলযাত্রা
কিছু দিন হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়িতে শতাব্দী এক্সপ্রেসে আসার সময় যে অভিজ্ঞতা হল, সেই বিষয়েই এই চিঠি। ওই কোচের দু’দিকের শৌচাগারে ঢোকার জায়গাটি ছিল খুবই অপ্রশস্ত এবং পাশের কোচের শৌচাগারের জলের পাইপগুলো ছিল ভাঙা। ট্রেনের ভাড়া এখন অনেকটাই বেড়েছে। তবে, পুরনো ও ব্যবহারের অযোগ্য কোচ জুড়ে ট্রেন কেন চালাচ্ছেন রেল কর্তৃপক্ষ? টয়লেটের বাইরে হাত ধোয়ার জন্যও কোনও বেসিন ছিল না। তা ছাড়া, শৌচাগারগুলিও ছিল যথেষ্ট অপরিচ্ছন্ন। বোঝাই যাচ্ছিল, সেগুলি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। কোচের অবস্থাও তথৈবচ।
ভিতরের এসি কোচের দরজাগুলোও ছিল ভাঙা বা আলগা। যাত্রী ও সার্ভিসম্যানদের যাতায়াতের সময় দরজা খুললে তা খোলাই থাকছিল। সেটা বন্ধ করার দায় কারও ছিল না। ফলে শৌচাগারের দুর্গন্ধে দম আটকে আসছিল। বিশেষত খাওয়ার সময়ে খুব অসুবিধা হচ্ছিল। আমরা বার বার অন্যদের অনুরোধ করছিলাম দরজা বন্ধ করার জন্য।
ভাঙা পুরনো কোচে চেপে প্রায় আট ঘণ্টার যাত্রা শেষ করে কোনও রকমে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছই। কিন্তু স্টেশনে নেমে অনেকটা পথ হেঁটে বাইরের গাড়ি ধরতে হয়েছে। গোটা জায়গা জুড়ে এখন পুনর্নির্মাণের কাজ চলছে। বয়স্ক যাত্রীদের জন্য হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা ছিল বলে শুনলাম, তবে তা নাকি ছিল স্টেশন মাস্টারের ঘরে। এক জন অশীতিপর ব্যক্তির পক্ষে সেখান থেকে কি হুইলচেয়ার আনা সম্ভব? স্টেশনের কোনও রেলকর্মী বা পুলিশ যে এনে দেবে, তেমন কারও দেখা কাছেপিঠে পাইনি।
তবে, হুইলচেয়ার আনা হলেও প্রায় তিনশো-চারশো মিটার এবড়োখেবড়ো পথ পেরিয়ে বাইরের ট্যাক্সি, টোটো বা রিকশা ধরা কি সম্ভব? প্রশাসন ও রেল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
রাধাকৃষ্ণ গোস্বামী, সোদপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
মহিলা কামরা
গত পনেরো বছর ধরে হাসনাবাদ-শিয়ালদহ শাখার নিত্যযাত্রী। অফিস টাইমে রীতিমতো মারামারি করে বাদুড়ঝোলা হয়ে যাতায়াত করতে হয়। আমি এবং আমার মতো বহু সহযাত্রী বরাবরই পিছনের তিন নম্বর ছোট কোচে উঠি। এ রকম কোচ সামনেও একটা আছে। হঠাৎ ইদের ছুটির পরের দিন অফিস যেতে গিয়ে এক সহযাত্রীর মুখে শুনলাম কোচটা নাকি ‘মহিলা কামরা’ হয়ে গিয়েছে। প্রথমে বিশ্বাস না করলেও পরে শিয়ালদহ স্টেশনে নেমে দেখলাম কোচের গায়ে সত্যি সত্যিই ‘মহিলা’ লেখা আছে। অথচ, পূর্ব রেলের সাইটে এর কোনও বিজ্ঞপ্তি পেলাম না। প্রথম শ্রেণির সংবাদপত্রগুলিতেও পূর্ব রেলের তরফে কোনও বিজ্ঞপ্তি দেখলাম না। যদিও কিছু খবরের কাগজে খবরটা প্রকাশিত হয়েছিল।
যা-ই হোক, কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি না দেখতে পাওয়ায় যথারীতি ওই কোচেই উঠতে থাকলাম। কিছু দিন আগে বারাসত স্টেশনে জিআরপি এসে সব পুরুষ যাত্রীকে বলপূর্বক নামিয়ে দেয়। বুঝলাম, ওই বগিতে আর ওঠা যাবে না। কিন্তু সামনের আর পিছনের দুই ছোট কোচের প্রায় চারশো যাত্রীর এ বার ভবিষ্যৎ কী হবে, সেটা রেলের তরফ থেকে ভাবা হল না।
মহিলা কামরা অবশ্যই বাড়ানো প্রয়োজন, কিন্তু সেই অনুপাতে অফিসটাইমের প্রচণ্ড ভিড়ের কথা মাথায় রেখে ট্রেনের সংখ্যাও বাড়ানো হোক। না হলে এই নির্দিষ্ট সময়টিতে আমাদের মতো নিত্যযাত্রীদের দুর্গতির শেষ থাকছে না। রেল কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করার জন্য অনুরোধ রইল।
কাজি মহম্মদ ইমরান, বাজিতপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
বিশৃঙ্খল মোড়
সম্প্রতি সোদপুর গির্জা মোড়ে প্রায় নিয়মিত ভাবেই এক অস্বস্তিকর ও বিপজ্জনক ট্র্যাফিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এই মোড়টি গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ প্রায় নেই বললেই চলে। ট্র্যাফিক সিগন্যালের প্রতি গাড়িচালকদের উদাসীনতা, নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করে দাঁড়ানো, এবং অনেক ক্ষেত্রেই রাস্তা পার হওয়া পথচারীদের প্রতি কোনও সংবেদনশীলতা না দেখানো এখন নিত্যদিনের ঘটনা। বিশেষ করে সকাল ও সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে এই মোড়ে স্কুলপড়ুয়া বা সাধারণ মানুষদের রাস্তা পারাপার কার্যত দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে।
অনেক সময় ট্র্যাফিক কর্মীরা কাছাকাছি থাকলেও নিয়মভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ করেন না। ট্র্যাফিক দফতরের কাছে অনুরোধ, এই মোড়ে নজরদারি জোরদার এবং নিয়মভঙ্গের ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যবস্থা করা হোক।
অলোক কুমার মুখোপাধ্যায়, সোদপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
স্টেশনে সমস্যা
শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় গড়িয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক স্টেশন। তবে যাত্রীদের এখানে মূলত তিনটি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। প্রথমত, প্ল্যাটফর্মের অধিকাংশ স্থানই দোকানদারদের দখলে চলে গিয়েছে। এমনকি যাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট বসার জায়গাতেও বিক্রেতারা অতিরিক্ত দ্রব্যাদি অতি যত্নে সাজিয়ে রাখেন। দ্বিতীয়ত, গড়িয়ার মতো সদাব্যস্ত স্টেশনে ট্রেন আসা-যাওয়ার কোনও ঘোষণার ব্যবস্থা নেই। ফলে সাধারণ মানুষকে ব্যস্ত সময়ে উদ্ভ্রান্তের মতো এ-দিক ও-দিক দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। একে-ওকে জিজ্ঞাসা করতে হয় ট্রেনের বিষয়ে।
তৃতীয়ত, শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় লোকাল ট্রেনে প্রবীণদের বসার আলাদা কোনও ব্যবস্থা নেই। থাকলেও তাতে অন্যরাই বসে থাকে।
বিশ্বজিৎ কর, কলকাতা-১০৩
অচল অ্যাপ
কিছু দিন হল একটি ব্যাঙ্কের অ্যাপ আমার ফোনে কাজ করছে না। অথচ, অন্য ব্যাঙ্কের অ্যাপ কাজ করছে। অ্যাপটি খুললেই দেখাচ্ছে অন্য ফোন নিতে হবে। স্থানীয় ব্যাঙ্কের শাখা কিছুই বলতে পারল না। ভাবছি, বিভিন্ন ব্যাঙ্কের অ্যাপের জন্য আলাদা আলাদা ফোন রাখতে হবে কি না।
অমিতাভ দাশ, কলকাতা-১২৬