প্রতীকী চিত্র।
পেশির বেদনা বা কোনও দুর্ঘটনার পর অঙ্গসঞ্চালনার ক্ষেত্রে সমস্যা হলে সাধারণত ওষুধের পাশাপাশি ফিজ়িয়োথেরাপির সাহায্য নিতে হয়। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ঘটলে পক্ষাঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়। সে ক্ষেত্রেও এই বিশেষ পদ্ধতি খুবই কার্যকরী বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা। এই পদ্ধতি যে খুব নতুন তা নয়। বহু প্রাচীন এই চিকিৎসাপদ্ধতি গত কয়েক দশকে নতুন করে কার্যকরী হয়ে উঠেছে। তাই কদর বেড়েছে ফিজ়িয়োথেরাপিস্টের। কী ভাবে বেছে নেওয়া যায় এই পেশা, রইল তারই সন্ধান।
ফিজ়িয়োথেরাপিস্টের ভূমিকা—
পেশি বা হাড়ের আঘাতজনিত অসুস্থতা বা পক্ষাঘাতজনিত অক্ষমতা দূর করতে যথাযথ ভাবে অঙ্গসঞ্চালনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। এই কাজ করার পাশাপাশি ব্যথা কমানোর উপায়ও বাতলে দেন ফিজ়িয়োথেরাপিস্টরা।
প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা—
এই পেশা নির্বাচন করতে হলে প্রথমেই দ্বাদশের পরীক্ষায় পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যার মতো বিষয় নিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে।
স্নাতকে ভর্তির জন্য প্রবেশিকা—
দেশে এত দিন পর্যন্ত কোনও আবশ্যিক প্রবেশিকা পরীক্ষা না দিয়েও ফিজ়িয়োথেরাপি নিয়ে উচ্চশিক্ষা করা যেত। তবে এই নিয়মে বদল ঘটতে চলছে বলে সম্প্রতি ন্যাশনাল কমিশন ফর অ্যালায়েড অ্যান্ড হেল্থকেয়ার প্রফেশনাস (এনসিএইচএপি)-র নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। নির্দেশিকা অনুযায়ী, ২০২৬-২০২৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতকে স্তরে ফিজিয়োথেরাপি নিয়ে পড়তে হলেও দিতে হবে ন্যাশনাল এন্ট্রান্স কাম এলিজিবিলিটি টেস্ট আন্ডারগ্র্যাজুয়েশন (নিট ইউজি)।
স্নাতক যোগ্যতা—
প্রবেশিকায় উত্তীর্ণেরা দেশের নানা কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর ইন ফিজ়িয়োথেরাপি (বিপিটি) কোর্সে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন। ভর্তির ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হবে তাঁদের নিট-এ প্রাপ্ত স্কোরকে।
নয়া নিয়ম অনুযায়ী, বিপিটি কোর্সটি চার বছরের। পূর্ণ সময়ের এই কোর্স শেষ করার পর পড়ুয়াদের কোনও প্রতিষ্ঠানে ছ’মাসের ইন্টার্নশিপও করতে হবে।
স্নাতকে বিপিটি ছাড়াও নানা প্রতিষ্ঠানের তরফে ব্যাচেলর অফ সায়েন্স বা বিএসসি ইন ফিজ়িয়োথেরাপি করানো হয়। স্বল্প মেয়াদের কোর্সের মধ্যে রয়েছে ডিপ্লোমা ইন ফিজ়িয়োথেরাপি বা সার্টিফিকেট কোর্স।
স্নাতকোত্তর—
স্নাতকের পর স্নাতকোত্তরে পড়ুয়ারা এমপিটি (মাস্টার ইন ফিজ়িয়োথেরাপি) কোর্স করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে স্পেশ্যালাইজ়েশন করা যায় অর্থোপেডিক্স, নিউরোলজি, স্পোর্টস, কার্ডিয়োপালমোনারি, পেডিয়াট্রিক্স, মাস্কিউলোস্কেলেটাল, ওয়েমেন্স হেল্থ-সহ নানা বিষয়ে।
পিএইচডি—
স্নাতকোত্তরের পর উচ্চশিক্ষার ইচ্ছে থাকলে পড়ুয়ারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পিএইচডি করার সুযোগ পাবেন।
উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান—
১) এমস দিল্লি।
২) ক্রিশ্চান মেডিক্যাল কলেজ, ভেলোর।
৩) জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, নয়া দিল্লি।
৪) পিজিআইএমইআর চণ্ডীগড়।
৫) মাদ্রাজ মেডিক্যাল কলেজ, চেন্নাই।
চাকরির সুযোগ—
কোর্স শেষে পড়ুয়ারা গবেষণার যেমন সুযোগ পান, তেমনি রয়েছে চাকরির সুযোগ। দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক থেকে শুরু করে কর্পোরেট সংস্থায় হেল্থকেয়ার প্রফেশনাল হিসাবে কাজের সুযোগ পান ফিজ়িয়োথেরাপিস্টরা। তেমনি ফুটবল বা ক্রিকেট টিমেও খেলোয়াড়দের জন্য ফিজ়িয়োথেরাপিস্ট হিসাবে কাজের সুযোগ থাকে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত ভাবেও প্র্যাকটিস করতে পারেন ফিজ়িয়োথেরাপিস্টরা।