JU diploma course

আগ্রহ হারাচ্ছেন পড়ুয়ারা! তিন দশকের পাঠ্যক্রম বন্ধ করে দিতে হচ্ছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে

এক বছরের সান্ধ্যকালীন এই ডিপ্লোমা কোর্স না কি আর পূরণ করতে পারছে না সময়ের চাহিদা। ঠিক কোথায় সমস্যা হচ্ছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:৪৮
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তিন দশকের পুরনো পাঠ্যক্রম। ১৯৮৯ সালে চালু হয়েছিল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন মাস কমিউনিকেশন। এটি এক বছরের ডিপ্লোমা কোর্স। আসনসংখ্যা ছিল ১৪০। কিন্তু ক্রমশ কমছে পড়ুয়ার সংখ্যা। তাই আর এই পাঠ্যক্রম চালু রাখতে চাইছেন না কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

সূত্রের খবর, বছর দুয়েক আগে পর্যন্ত পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন মাস কমিউনিকেশন-এ পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ৮০-র বেশি। কিন্তু ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এই পাঠ্যক্রমে ভর্তি হয়েছে মাত্র ৫২ জন পড়ুয়া। আর ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে আবেদন জমা করেছিলেন ৬০ জন। ধরে নেওয়া যায়, সকলেই ভর্তি হতেন না। ইন্টার ডিসিপ্লিনারি ফ্যাকাল্টি স্কুল ল অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট-এর ডিন পার্থসারথি চক্রবর্তী বলেন, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু পুরনো একটি পাঠ্যক্রম এটি। কিন্তু গত দু’বছরে ছাত্র সংখ্যা উত্তরোত্তর কমেছে। এ বছর আবেদন জমা পড়েছে মাত্র ৬০টি। সে ক্ষেত্রে ভর্তি হবেন হয়তো ২৫-৩০ জন। এত কম সংখ্যক পড়ুয়া নিয়ে পাঠ্যক্রম চালানো অসম্ভব।”

এক বছরের এই পাঠ্যক্রমে মোট দশটি পত্র পড়ানো হত। বিভাগের শিক্ষকেরা ছাড়াও ৬ জন অতিথি শিক্ষক ছিলেন। কিন্তু কেন পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে? বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাখ্যা, যখন এই পাঠ্যক্রম চালু হয়েছিল তখন গণজ্ঞাপন বিষয়ে মাস্টার্স ইন আর্টস (এমএ) ছিল না। গত কয়েক বছরে পড়ুয়ারা সে দিকেই ঝুঁকেছেন। পাশাপাশি জাতীয় শিক্ষানীতি ও রাজ্য শিক্ষানীতির চালু হওয়ার পর ডিপ্লোমা কোর্সগুলির গুরুত্ব অনেকটা কমে গিয়েছে। তাই ছাত্র-ছাত্রীরা নতুন করে সময় নষ্ট করে এই সমস্ত পাঠ্যক্রমগুলিতে আর ভর্তি হচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু হয়েছে। তার পর থেকেই ডিপ্লোমার গুরুত্ব কমে গিয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে। সময় নষ্ট না করে সরাসরি স্নাতকোত্তরেই ভর্তি হচ্ছেন তাঁরা।”

শুধু তা-ই নয়, গত তিন দশকে সংবাদমাধ্যমের চাহিদা সম্পূর্ণ পাল্টে গিয়েছে বলেও মনে করছে শিক্ষকদের একাংশ। এই মুহূর্তে বিভিন্ন সংস্থা যে ধরনের স্পেশ্যালাইজ়েশন চাইছে, তা এই ধরনের সান্ধ্যকালীন ডিপ্লোমা কোর্সে পূরণ করা সম্ভব নয়। এই পাঠ্যক্রমগুলি চালানোর জন্য যত শিক্ষক প্রয়োজন, তা কেন্দ্র রাজ্য কেউই দিতে পারবে না। আর সব থেকে বড় বিষয় হচ্ছে জাতীয় শিক্ষানীতি চালু হবার পর স্নাতকোত্তর মাত্র এক বছরের হয়ে যাচ্ছে। ডিপ্লোমা থাকছে প্রাথমিক স্তরে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কোর্স কো-অর্ডিনেটর শান্তনু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটি বিশ্ববিদ্যালয় সর্বস্তরের ফ্যাকাল্টির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত। কারণ ডিপ্লোমা কোর্সের চাহিদা নিম্নমুখী। পরবর্তীকালে সময়কাল কমিয়ে আধুনিক করে নতুন মোড়কে নিয়ে আসার কথা ভাবা হচ্ছে।” জানা গিয়েছে, এ বছর যাঁরা আবেদন করে ফেলেছিলেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয় তরফে।

Advertisement
আরও পড়ুন