প্রতীকী চিত্র।
আদিম মানবজীবন থেকে বর্তমান জীবনযাত্রা— বিবর্তনের এই দীর্ঘ যাত্রাপথের খোঁজ দেয় নৃতত্ত্ববিদ্যা বা অ্যান্থ্রোপোলজি। এই বিষয় থেকে পৃথিবীতে মানবজীবনের উৎপত্তি, ডিএনএ-র গঠনে পরিবর্তন, গুহাযুগ থেকে আধুনিক মনুষ্যসমাজ গড়ে ওঠা, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের খুঁটিনাটি যেমন জানা যায়। তেমনই বিভিন্ন সময়ে সমাজের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর রীতিনীতি, ধর্ম, ভাষা, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তন সম্বন্ধেও জানা যায়। অর্থাৎ বিজ্ঞান এবং সমাজবিজ্ঞানের এক অদ্ভুত মেলবন্ধন এই বিষয়।
কোন কোন কোর্স করানো হয়?
দেশের বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নৃতত্ত্ববিদ্যা পড়ানো হয় স্নাতক স্তর থেকেই। এ ক্ষেত্রে দু’ধরনের কোর্স করতে পারেন পড়ুয়ারা। বিএ অথবা বিএসসি। বিএ কোর্সের ক্ষেত্রে এই বিষয়ের মানবজাতির ইতিহাস, সংস্কৃতি, সমাজ নিয়ে নানা তত্ত্ব পড়ানো হয়। অন্য দিকে, বিএসসি কোর্সে মানুষের জৈবিক, শারীরিক বিবর্তনের বিজ্ঞাননির্ভর দিকের খুঁটিনাটি পড়ানো হয়। স্নাতকের পর স্নাতকোত্তরেও এমএ বা এমএসসি কোর্স করতে পারেন পড়ুয়ারা। যাঁরা গবেষণা করতে চান, তাঁদের জন্য সুযোগ থাকে পিএইচডি-রও।
স্নাতকের জন্য যোগ্যতা--
বিএ-তে ভর্তির ক্ষেত্রে যে কোনও বোর্ড থেকে কলা বিভাগে ন্যূনতম ৪৫ বা ৫৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হলেই আবেদন করা যায়। যাঁরা বিজ্ঞান বা বাণিজ্য নিয়ে পড়ে স্নাতক করতে চান এই বিষয়ে, তাঁরাও বিএ-তে ভর্তির সুযোগ পান।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিএসসি কোর্সে ভর্তির জন্য প্রয়োজন দ্বাদশের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর।
স্নাতকে ভর্তির ক্ষেত্রে কিছু প্রতিষ্ঠান প্রবেশিকার আয়োজন করে বা দ্বাদশে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধা যাচাই করে। আবার কিছু প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া যায় কুয়েট-এর মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে।
স্নাতকোত্তরের জন্য জন্য যোগ্যতা--
স্নাতকোত্তরের এমএ কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে এই বিষয়ে স্নাতকে ন্যূনতম ৪৫ বা ৫০ শতাংশ নম্বর থাকা প্রয়োজন। এমএসসি-তে ভর্তির ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের বিএসসি-তে ন্যূনতম ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ নম্বর থাকা জরুরি।
স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রেও কিছু ক্ষেত্রে স্নাতকে প্রাপ্ত নম্বরকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। আবার কিছু ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত প্রবেশিকা বা জাতীয় স্তরের প্রবেশিকা প্রাপ্ত নম্বর এবং ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে মেধা যাচাই করা হয়।
দেশ এবং রাজ্যে কোথায় পড়ার সুযোগ--
১। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়
২। জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়
৩। হায়দরবাদ বিশ্ববিদ্যালয়
৪। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়
৫। সাবিত্রীভাই ফুলে পুণে বিশ্ববিদ্যালয়য়
৬। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
৭। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়
৮। ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি
৯। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়
১০। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়
চাকরির সুযোগ--
নৃতত্ত্ববিদ্যা পড়ে যেমন গবেষণা বা শিক্ষকতার পেশা বেছে নেওয়া যেতে পারে। তেমনই অ্যান্থ্রোপোলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া-র মতো সরকারি সংস্থাতেও কাজের সুযোগ থাকে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থেকে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনেস্কো, ইউনিসেফ, বিশ্ব ব্যাঙ্ক বা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গেও কাজের সুযোগ মেলে।