Kasba Rape case

কসবা আইন কলেজে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে রিপোর্ট দেখে!

পাঁচ সদস্যের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম’ বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ কলেজে গিয়েছিল। ডিন অফ ল, ডেপুটি রেজিস্ট্রার, ইনস্পেক্টর অফ কলেজেস, বাণিজ্য বিভাগের প্রধান-সহ মোট পাঁচজন সদস্য মিলে তৈরি হয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৫ ১৩:৩১
কসবা আইন কলেজ।

কসবা আইন কলেজ। নিজস্ব চিত্র।

কসবা আইন কলেজে ধর্ষণের ঘটনার সাত দিন পর আইন কলেজ পরিদর্শন করল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল। পাঁচ সদস্যের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম’ বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ কলেজে পৌঁছয়। ঘণ্টাখানেক অকুস্থল পরিদর্শন করেন সদস্যরা। তাঁর কথা বলেন পুলিশের সঙ্গেও। তবে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল।

Advertisement

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত দে আগেই জানিয়েছিলেন ডিন অফ ল, ডেপুটি রেজিস্ট্রার, ইনস্পেক্টর অফ কলেজেস, বাণিজ্য বিভাগের প্রধান-সহ মোট পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল তৈরি করা হয়েছে কসবা কাণ্ডের তদন্তে। বুধবার তাঁরা আইন কলেজের উপাধ্যক্ষ নয়না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকও করেন।

জানা গিয়েছে, ২৫ জুনের ঘটনার যাবতীয় তথ্য চাওয়া হয়েছে উপাধ্যক্ষের কাছে। গণধর্ষণের ঘটনার প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, মূল অভিযুক্ত ‘এম’ কী ভাবে কলেজ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও কলেজে প্রবেশ করতে পারতেন— এ জাতীয় প্রশ্ন করা হয়। পাশাপাশি জানতে চাওয়া হয় কলেজ কত ক্ষণ খোলা থাকে, কলেজের সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও কেউ ভিতরে থাকে কি না, সিসিটিভি ক্যামেরা কত, কলেজের যাবতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা হয়। কসবা আইন কলেজের ভিতরে ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে দীর্ঘ দিন কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন না হলেও কেন ছাত্র সংসদের ঘর খোলা থাকে?

নয়না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সমস্ত তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে রিপোর্ট হিসাবে জমা করবে প্রতিনিধি দল। সেই রিপোর্ট-এর ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আইন কলেজের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।

জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেলেই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য। আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে কসবা আইন কলেজের বিরুদ্ধে। উপাচার্য বলেছিলেন, “জঘন্য ঘটনা! ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। লুম্পেনদের রাজনৈতিক মদত দেওয়া হয়, তাই এই ধরনের ঘটনা কলেজগুলিতে হয়েই চলেছে। এর বিহিত প্রয়োজন।” তিনি দাবি করেছিলেন, অন্য কলেজগুলিতে নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে। কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা যাতে না ঘটে, তা সুনিশ্চিত করাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক লক্ষ্য।

উল্লেখ্য, ২৫ জুন কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ক্যাম্পাসের ভিতর রক্ষীর ঘরে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ওই কলেজেরই দুই ছাত্র এবং এক প্রাক্তনীকে। ওই প্রাক্তনী কলেজের অস্থায়ী কর্মী হিসাবেও নিযুক্ত। অভিযুক্তেরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত। অভিযোগ, ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তা খারিজ করার পরেই তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। বয়ানে অসঙ্গতি থাকায় কলেজের নিরাপত্তারক্ষীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছে কলেজের পরিচালন সমিতি। অভিযুক্ত দুই ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁরা যাতে অন্য কোনও কলেজে ভর্তি হতে না পারেন, সে সিদ্ধান্তও নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে পরিচালন সমিতির তরফে। কলেজের অস্থায়ী শিক্ষাকর্মীর চাকরি থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে মূল অভিযুক্ত ‘এম’কে।

(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে আদালতে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। সেই কারণে আনন্দবাজার ডট কম কসবার ধর্ষণকাণ্ডে তিন অভিযুক্তের নাম এবং ছবি প্রকাশে বিরত থাকছে)

Advertisement
আরও পড়ুন