Natya Mela 2025

বাদল-তৃপ্তি-ঋত্বিকময় নাট্যমেলা, এই প্রজন্ম দেখতে আসছে পূর্বসূরিদের নাটক! জানালেন অর্পিতা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৪০০টি দলকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেন। এই অনুদান জেলাস্তরের নাট্যদলগুলিকে উঠে আসতে সহায়তা করেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৫৯
২৫ তম নাট্যমেলার বৈশিষ্ট্য কী?

২৫ তম নাট্যমেলার বৈশিষ্ট্য কী? নিজস্ব চিত্র।

চারিদিকে রং-বেরঙের ফেস্টুন, পতাকা। আলোয় ঝলমল করছে নন্দনচত্বর। গগনেন্দ্র শিল্প প্রদর্শশালার বাইরে তৃপ্তি মিত্রের পূর্ণ অবয়ব! রবিবার থেকে ১০ দিনের জন্য কলকাতায় শুরু হয়েছে নাট্যমেলা। এ বছর উৎসবের ২৫ বছর।

Advertisement

এ বছর বাদল সরকার, তৃপ্তি মিত্র, ঋত্বিক ঘটকের শতবর্ষ। শিশু-কিশোর অ্যাকাডেমির সভাপতি অর্পিতা ঘোষ আনন্দবাজার ডট কম-কে বলেছেন, “এই প্রজন্ম পূর্বসূরিদের নাটক দেখতে এসেছে। এটাই নাট্যমেলার সার্থকতা।” নভেম্বর থেকে সারা বাংলা জুড়ে ১০টি জেলায় শুরু হয়েছে এই উৎসব। শেষ হচ্ছে কলকাতায় অনুষ্ঠিত নাট্যমেলা দিয়ে। গত কয়েক বছরের রীতি মেনে এ বছরেও দশ দিন ধরে জেলাস্তরের নাট্যগোষ্ঠী বা দল প্রতি দিন শিশির মঞ্চ, রবীন্দ্রসদন, গিরিশ মঞ্চ, মধূসদন মঞ্চ ও তৃপ্তি মিত্র মঞ্চে একটি করে নাটক মঞ্চস্থ করছে। যেমন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় গিরিশ মঞ্চে মঞ্চস্থ হয়েছে ‘সাগিনা মাহাতো’ (দমদম ব্রাত্যজন)। রবীন্দ্রসদনে পরিবেশিত হয়েছে পঙ্কজ মুন্সীর দলের নাটক ‘এবং গঙ্গারাম’। পাশাপাশি ছিল জেলার নাটকও।

আলোয় ঝলমলে মেলাপ্রাঙ্গন।

আলোয় ঝলমলে মেলাপ্রাঙ্গন। নিজস্ব চিত্র।

তিন খ্যাতনামীর শতবর্ষ এ বছর। তাঁদের কোন কোন নাটক বেছে নেওয়া হয়েছে? প্রশ্ন ছিল অর্পিতার কাছে। তিনি বলেন, “সারা বছর ধরে জেলাস্তরের অনেক দল তৃপ্তি মিত্র, বাদল সরকারের অনেক নাটক মঞ্চস্থ করেছে। সেখান থেকে কিছু বাছাই করা নাটক পরিবেশিত হচ্ছে। ঋত্বিক ঘটক সে রকম ভাবে নাটক লেখেননি। তাঁর লেখা একমাত্র নাটক ‘সাঁকো’ মঞ্চস্থ হচ্ছে।” নন্দন-সহ গোটা রবীন্দ্রসদন সাজানো হয়েছে তিন নাট্যব্যক্তিত্বের ছবিতে। অতীতের কিছু সংরক্ষণের নমুনা দিয়ে। এ ছাড়া, মন্ত্রী ও নাট্যব্যক্তিত্ব ব্রাত্য বসুর ভাবনায় গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় আয়োজিত হয়েছে তৃপ্তি মিত্রকে নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনী। চলবে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

রয়েছে একতারা মঞ্চে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন। দেখানো হচ্ছে খন, ডোমনি, আলকাপ, বেণী পুতুল, ডাং পুতুল, রং পাঁচালি, ভাঁড়যাত্রা, বহুরূপী ও রণপা-সহ বিভিন্ন ধারার লোকনাটক। বাংলাদেশ থেকে শহরে সস্ত্রীক পা রেখেছেন তাপসকান্তি ঘোষ। তিনি সপরিবার একতারা মুক্তমঞ্চের সামনে বসে। আনন্দবাজার ডট কম-কে জানিয়েছেন, বাংলার নাটক তাঁকে খুব টানে। সেই আকর্ষণে তিনি চলে এসেছেন মেলাপ্রাঙ্গনে।

নাট্যমেলার উদ্বোধনে অর্পিতা ঘোষ, মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, দেবশঙ্কর হালদার প্রমুখ।

নাট্যমেলার উদ্বোধনে অর্পিতা ঘোষ, মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, দেবশঙ্কর হালদার প্রমুখ। ছবি: সংগৃহীত।

গত ২৫ বছর ধরে কলকাতা নাট্যমেলা দুই শাসকদলের পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে। বাম আমলে জেলা এবং কলকাতা মিলিয়ে একযোগে শহরেই নাট্যমেলা জমত। বর্তমান শাসকদল কলকাতায় জেলাস্তরকে নাটক পরিবেশনের সুযোগ করে দিয়েছে। যার জেরে তরুণ প্রজন্ম ভিড় জমাচ্ছে নাট্যমেলায়। অর্পিতার কণ্ঠে তৃপ্তির আমেজ, “এই প্রজন্ম কিন্তু নাটকে আগ্রহী। তারা অভিনয় করছে, নাটক পরিচালনা করছে আবার দেখতেও আসছে। এটা ইতিবাচক ব্যাপার।”

ছোট-বড় মিলিয়ে এ বছর ১৬৩টি দল নাট্যমেলায় যোগ দিয়েছে। মেলার বাজেট কমবেশি ১ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা। খবর, রাজ্য সরকার আগামী বছর অনুদান এবং নাট্যদলের সংখ্যা দুই-ই বাড়াতে পারেন। তবে যে সব দল অনুদান পায় তারা নাট্যমেলায় যোগ দেওয়ার সুযোগ পায় না। একই ভাবে যারা নাট্যদলে যোগ দেয় তারা অনুদান পায় না।

Advertisement
আরও পড়ুন