Christmas 2025 Movie Release

পাঁচটি নয়, বড়দিনে কোন তিনটি বাংলা ছবি মুক্তি পাচ্ছে? সংঘাত এড়াতেই কি এই সিদ্ধান্ত?

পিয়া সেনগুপ্ত আনন্দবাজার ডট কম-কে জানিয়েছেন, রবিবার ইম্‌পার অফিসে প্রথম সারির সমস্ত প্রযোজক উপস্থিত ছিলেন। সবাই বাংলা ছবির স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:১৩
বডদিনের ছবিমুক্তি নিয়ে ‘স্ক্রিনিং কমিটি’র বড় সিদ্ধান্ত।

বডদিনের ছবিমুক্তি নিয়ে ‘স্ক্রিনিং কমিটি’র বড় সিদ্ধান্ত। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

এ বছরের পুজোর ছবিমুক্তির স্মৃতি বুঝি টাটকা এখনও? ২০২৫-এর শারদীয়ায় চারটি বাংলা ছবি মুক্তি পেয়েছিল। ছবিমুক্তির আগে এবং পরের তরজা সমাজমাধ্যম পর্যন্ত গড়িয়েছিল। বড়দিনে যাতে সেই ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্যই কি একজোট বাংলা বিনোদন দুনিয়া?

Advertisement

বড়দিনের ছবিমুক্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে রবিবার ইম্‌পার অফিসে রাজ্য সরকারের তৈরি করে দেওয়া ‘স্ক্রিনিং কমিটি’র বৈঠক বসে। কমিটির সভাপতি পিয়া সেনগুপ্ত আনন্দবাজার ডট কম-কে জানিয়েছেন, এ বারের শীতে পাঁচটি ছবিমুক্তির কথা ছিল। প্রযোজক অতনু রায়চৌধুরীর ‘প্রজাপতি ২’, নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘ভানুপ্রিয়া ভূতের হোটেল’, নিসপাল সিংহ রানের ‘মিতিন মাসি’, শ্রীকান্ত মোহতা-মহেন্দ্র সোনির ‘বিজয়নগরের হিরে’ এবং তাঁদের সঙ্গে রানা সরকারের যৌথ প্রযোজনায় ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’। আলোচনায় ঠিক হয়েছে, পাঁচটি নয়, ২৩ ডিসেম্বর তিনটি ছবি মুক্তি পেতে চলেছে। প্রসঙ্গত, এই খবর প্রথম জানিয়েছিল আনন্দবাজার ডট কম।

কোন তিনটি ছবি এ বছরের খ্রিস্টমাসকে রঙিন করবে? পিয়ার কথায়, “সব রকম দ্বন্দ্ব এড়াতেই সবাই মিলে বসে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী, এ বছরের শীতে পরিচালক অভিজিৎ সেনের ‘প্রজাপতি ২’, অরিন্দম শীলের ‘মিতিন মাসি’ এবং হয় সৃজিতের ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’, নয় তো শ্রীকান্ত মোহতা-মহেন্দ্র সোনির ‘বিজয়নগরের হিরে’ মুক্তি পাবে। অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের ‘ভানুপ্রিয়া ভূতের হোটেল’ এ বছর মুক্তি পাচ্ছে না। মুক্তি পাবে না শ্রীকান্ত-মহেন্দ্রের আরও একটি ছবি।”

কমিটির সভাপতি জানিয়েছেন, সে ক্ষেত্রে বাকি দুটো ছবি মুক্তি পাবে ২০২৬-এর ২৩ জানুয়ারি।

খবর, এ দিনের বৈঠকে পাঁচটি ছবির প্রযোজক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিনোদিনী প্রেক্ষাগৃহের কর্ণধার জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, মাল্টিপ্লেক্সের কর্ণধার পঙ্কজ লাডিয়া, পরিবেশক এবং একাধিক প্রেক্ষাগৃহের মালিক শতদীপ সাহা, ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস। আগামী বছরের ছবিমুক্তি নিয়ে পিয়া আরও জানিয়েছেন, নভেম্বরে ফের কমিটির বৈঠক বসবে। সেখানে আগামী বছর কোন সময়ে কী কী ছবি মুক্তি পাবে তার একটি তালিকা তৈরি করা হবে। সেই তালিকা প্রকাশ্যে আসবে ২০২৬-এর শুরুতে।

এ বছরের পুজোয় ছবিমুক্তির সংঘাত কি বাংলা বিনোদন দুনিয়ার চোখ খুলে দিল? প্রেক্ষাগৃহ এবং প্রদর্শন-সময় বণ্টনের বৈষম্য যাতে আর না হয় তার জন্য কমিটি কী পদক্ষেপ করছে?

পিয়ার দাবি, “পুজোর সময়েও আনন্দবাজার ডট কম-কে জানিয়েছিলাম, প্রেক্ষাগৃহ এবং প্রদর্শন-সময় নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হলমালিক এবং পরিবেশকদের উপর কমিটি চাপিয়ে দেবে না। এটি তাঁদের স্বাধীন সিদ্ধান্ত। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস শুধুই ছবির সংখ্যা এবং ছবিমুক্তির নির্দিষ্ট দিন নির্ধারণের জন্য ‘স্ক্রিনিং কমিটি’ গঠন করেছেন।”

বিনোদিনী প্রেক্ষাগৃহের মালিক জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, পরিবেশক শতদীপ সাহা।

বিনোদিনী প্রেক্ষাগৃহের মালিক জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, পরিবেশক শতদীপ সাহা। ছবি: সংগৃহীত।

সাধারণত, উদ্‌যাপন মানেই একমুঠো ছবিমুক্তি। এতে দর্শকের বিভ্রান্তি, তাঁরা কোনটা ছেড়ে কোনটা দেখবেন। চাপ সৃষ্টি হয় প্রেক্ষাগৃহের মালিক এবং বাংলা ছবির পরিবেশকদের উপরেও। পাঁচটি নয়, তিনটি ছবিমুক্তি কি তাঁদের স্বস্তি দিল?

জয়দীপ এবং শতদীপ উভয়ের বক্তব্য, “এই সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। এই পদক্ষেপের প্রয়োজন ছিল। এতে কারও সঙ্গে কারও বিরোধ বাধবে না। তিনটি ছবিই ভাল প্রেক্ষাগৃহ এবং প্রদর্শনী সময় পাবে। আমাদেরও চাপ থাকল না।” জয়দীপ আরও জানিয়েছেন, তিনটি ছবি মুক্তি পেলে মাল্টিপ্লেক্স তো বটেই, সিঙ্গল স্ক্রিনের হলমালিকদেরও সমস্যা হয় না। তাঁর উদাহরণ কোয়েল মল্লিকের ‘স্বার্থপর’। তাঁর কথায়, “ছবি ভিন্ন সময়ে মুক্তি পাওয়ায় দর্শক দেখে তৃপ্তি পাচ্ছে। ভাল ব্যবসাও করছে।” এই প্রসঙ্গে শতদীপের সংযোজন, “এখন ছবির বিষয়ই মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। দর্শক ভাল ছবি দেখার জন্য মুখিয়ে। ছবির বিষয় বা গল্প যদি ভাল হয়, তা হলে বছরের যে কোনও সময় মুক্তি পেলেই তা ভাল ব্যবসা করবে।”

Advertisement
আরও পড়ুন