Pratul Mukhopadhyay passed away

‘আমি বাংলায় গান গাই’ জাতীয় সঙ্গীতের মতোই: প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণে লোপা-অনুপম

তাঁর কণ্ঠে ‘আমি বাংলায় গান গাই’ শোনেননি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তাই এই গানকে যেন জাতীয় সঙ্গীতের মতোই মনে করেন লোপামুদ্রা মিত্র।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:১৭
Lopamudra Mitra and Anupam Roy’s reaction on veteran singer Pratul Mukhopadhyay’s demise

প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণে লোপামুদ্রা ও অনুপম রায়। ছবি: সংগৃহীত।

প্রয়াত প্রতুল মুখোপাধ্যায়। দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন বর্ষীয়ান সঙ্গীতশিল্পী। তাঁর প্রয়াণের খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাংলার সঙ্গীত জগতে। তাঁর কণ্ঠে ‘আমি বাংলায় গান গাই’ শোনেননি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তাই এই গানকে যেন জাতীয় সঙ্গীতের মতোই মনে করেন লোপামুদ্রা মিত্র। লোপামুদ্রার কণ্ঠেও এই গান শুনেছে বাঙালি শ্রোতা। সঙ্গীতশিল্পী আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “প্রতুলদাকে নিয়ে আজ লিখেছি, আপনি তাঁদের মধ্যে একজন, যাঁদের জন্য আমি বাংলায় গান গাই।”

Advertisement

প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ১৯৯৩ সাল থেকে পরিচয় লোপামুদ্রার। স্মৃতি হাতড়ে গায়িকা বলেন, “প্রতুলদা আমাদের থেকে অনেকটা বড়। অনেক দিন ধরে চিনি। কিন্তু প্রথম দিন থেকেই তিনি আমার কাছে ‘প্রতুলদা’। ওঁর বন্ধুদের একটা দল ছিল। সেই দলের সকলকেই কাকা বলে ডাকতাম। কিন্তু প্রতুলদাকে দাদা বলতাম। ১৯৯৩ সালের বইমেলায় প্রতুলদার সঙ্গে প্রথম আলাপ হয়েছিল। বইমেলায় খালি গলায় গানের আসর বসত। পরে আবার রবীন্দ্রসদনের একটি অনুষ্ঠানে ওঁর সঙ্গে একই মঞ্চে গান গাওয়া। সেই অনুষ্ঠানে সুমন-নচিকেতা-অঞ্জনও ছিলেন। প্রতুলদা নিজে কবিতায় সুর দিয়ে গান তৈরি করতেন। সব মিলিয়ে আমার কাছে বড় অনুপ্রেরণা ছিলেন তিনি।”

একটি কারণে প্রতুলদাকে হিংসেও করতেন লোপামুদ্রা। গায়িকার কথায়, “গান ওঁর নেশা ছিল। নিজের মতো গান গেয়ে যেতেন। প্রচার নিয়ে ভাবতেন না। প্রচারবিমুখ ছিলেন বরাবরই। এ জন্য ওঁকে হিংসে হত।” লোপামুদ্রার গানও পছন্দ করতেন প্রয়াত শিল্পী। তবে একটি গান নাকি মোটেই পছন্দ ছিল না তাঁর। গায়িকার স্বীকারোক্তি, “আমার গান শুনতে প্রতুলদা ভালবাসতেন। কিন্তু বেণীমাধব গানটা ওঁর মোটেই পছন্দ ছিল না। কিন্তু গানটা রেকর্ড হওয়ার পরে বেশ সাড়া ফেলেছিল। তাই প্রতুলদা বলতেন, ‘আর তো কিছু বলার নেই। এখন তো বেণীমাধব সুপারহিট।’ খুব মিষ্টি সম্পর্ক ছিল প্রতুলদার সঙ্গে।”

প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের ‘আমি বাংলার গান গাই’ অনুপম রায়ের কণ্ঠেও শুনেছেন মানুষ। শিল্পীর প্রয়াণের খবরে অনুপম বলেছেন, “প্রতুলদার আমি বড় ভক্ত। সত্যিই গুণী শিল্পী এবং খুবই ব্যতিক্রমী শিল্পী ছিলেন। ওঁর গান গাওয়ার ধরন অথবা গান নিয়ে ভাবনাচিন্তা আর পাঁচজনের চেয়ে ভিন্ন ছিল। ওঁকে হারানো আমাদের কাছে বড় ক্ষতি। শুধু একটি গান নয়। ওঁর বহু ভাল অ্যালবাম ছিল। আমি সামনে বসেও ওঁর অনুষ্ঠান শুনেছিলাম। বাংলার গুরুত্বপূর্ণ শিল্পী। আমার খুব প্রিয় একটা গান রয়েছে, ‘লাল কমলা হলদে সবুজ’। আসলে ওটা মাও দে জং-এর একটি কবিতা। সেই কবিতা অনুবাদ করে তিনি সুর দিয়েছিলেন। গানের সঙ্গে গল্প করে বলতেন। সেই দৃশ্য আমার আজও মনে আছে।”

অনুপম মনে করেন, প্রতুলের মতো শিল্পী আর হবে না। সঙ্গীত পরিচালক তথা গায়কের কথায়, “তিনি যে সময়ের মানুষ বা ওঁর যা ভাবনাচিন্তা, তা বর্তমানের শিল্পীদের মধ্যে নেই। এখন হয়তো অন্য রকমের কাজ তৈরি হবে। ওঁর সময়েও কিন্তু উনি ব্যতিক্রমী ছিলেন।”

Advertisement
আরও পড়ুন