স্বাস্থ্যকর তকমা পাওয়া অস্বাস্থ্যকর খাবার। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
স্বাস্থ্যসচেতন হওয়ার হিড়িক বিশ্ব জুড়ে। নানাবিধ পণ্যের প্রচারের মাঝে বিভ্রান্তিও সৃষ্টি হচ্ছে দ্রুত। এমন বেশ কিছু খাবার আছে, যেগুলিকে নির্দ্বিধায় ভাল ভেবে খেয়ে ফেলেন অনেকেই। অথচ সেগুলির ভিতরে লুকিয়ে থাকে অতিরিক্ত চিনি আর পরিশোধিত তেল। আপাত ভাবে স্বাস্থ্যকর মনে হলেও এই খাবারগুলি নিয়মিত খেলে ওজন বৃদ্ধি পাবে, রক্তে শর্করা বাড়বে ও হার্টের ক্ষতি হবে।
চেন্নাইয়ের এক চিকিৎসক প্রীতি মৃণালিনী এরই মধ্যে ৫টির তালিকা প্রকাশ করেছেন নিজের ইনস্টাগ্রামের পাতায়। তিনি লিখেছেন, ‘‘এমন অনেক খাবার আছে, যা স্বাস্থ্যকর হিসেবে বাজারে বিক্রি হয়। কিন্তু প্রচারবার্তা সব সময়ে সত্য কথা বলে না। এক জন সার্জন হিসেবে দেখতে পাই, কী ভাবে রোজ এই খাবারগুলি মানুষের অন্ত্র, বিপাক স্বাস্থ্য এবং ওজনের উপর প্রভাব ফেলছে!’’
চিকিৎসক যে ৫টি অস্বাস্থ্যকর খাবারের কথা উল্লেখ করলেন—
গ্র্যানোলা: বাদাম আর শস্যে ভরা বলে গ্র্যানোলাকে অনেকেই সেরা প্রাতরাশের তকমা দিতে চান। কিন্তু বাজারে লভ্য বেশির ভাগ গ্র্যানোলায় মেশানো থাকে প্রচুর চিনি ও পরিশোধিত তেল। ফলে ক্যালোরি অনেকটাই বেড়ে যায়, আর অজান্তেই শরীরে চর্বি জমতে শুরু করে। বাড়িতে গ্র্যানোলা বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে। অথবা বাদাম ও বীজ মেশানো সাদামাঠা ওট্স খেলেও হয়।
প্রোটিন বার: দ্রুত শক্তি পাওয়ার আশায় অনেকেই প্রোটিন বার খান জিমের পরে। কিন্তু বেশ কিছু প্রোটিন বারে চিনির পরিমাণ এতই বেশি যে, তা প্রায় মিষ্টির সমান হয়ে দাঁড়ায়। এক একটি বারে ১৫-২৫ গ্রাম চিনি, পাম অয়েল, গ্লুকোজ় সিরাপ ভর্তি থাকে। এগুলি ৩০০-৪০০ ক্যালোরিরও হতে পারে। প্রোটিন বারের বদলে ফল ও সেদ্ধ ডিম, সাদামাঠা গ্রিক ইয়োগার্ট খাওয়া যেতে পারে।
প্রোটিন বার। ছবি: সংগৃহীত।
ফ্লেভার দেওয়া ইয়োগার্ট: যতই ‘লো ফ্যাট’ লেখা থাকুক, ফ্লেভারযুক্ত ইয়োগার্টে অতিরিক্ত চিনি লুকোনো থাকে। স্বাদ বাড়ানোর জন্য নানা উপাদান মেশানো হয়, যা খাওয়ার পর বার বার খেতে ইচ্ছে করবে। এটি বাদ দিয়ে গ্রিক ইয়োগার্ট খাওয়া নিরাপদের। ঘরে পাতা দই খেলে সবচেয়ে ভাল। সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারেন টাটকা ফল বা গুড়।
ফলের রস: পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকেরা ঘরে বানানো ফলের রসও খেতে নিষেধ করেন। কারণ, তা থেকে ফাইবারগুলি বেরিয়ে যায়। গোটা ফল খাওয়া অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। তার উপর দোকানের ফলের রসে চিনি মেশানো থাকে। ফাইবার থাকে না বলেই শরীরে দ্রুত গ্লুকোজ় প্রবেশ করে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
সব্জির চিপ্স: অনেকে ভাবেন আলুর বদলে সব্জির চিপস খাওয়া যায়, তা নিরাপদ। কিন্তু বাস্তবে এই চিপসগুলিও ভাজা হয় পরিশোধিত তেলে, তাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে নুন আর ক্যালোরি। নাম বদলালেও ক্ষতি প্রায় একই রকম। এ সবের বদলে সেদ্ধ ডিম আর ফল কিংবা গ্রিক ইয়োগার্ট খেতে বলছেন চিকিৎসক।