Junk Food Consumption score

নম্বর মিলিয়ে খাওয়া যাবে জাঙ্ক ফুড! তাতে ক্ষতি হবে না, কতটা খাবেন মিলিয়ে নেবেন ‘স্কোর-বোর্ড’ থেকে

দিনে একটি রোল খাবেন না দু’টি, কতটা পিৎজ়া বা বার্গার খেলে ক্ষতি হবে না, তা মেপে নিতে পারবেন নিজেই। স্কোর-বোর্ড দেখে বুঝেশুনে জাঙ্ক ফুড খান। সহজ পদ্ধতি নিয়ে আসছেন গবেষকেরা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৫ ১৬:২৩
A New score system to objectively measure ultra-processed food consumption

কতটা জাঙ্ক ফুড খেলে ক্ষতি হবে না, জানুন স্কোর-বোর্ড থেকে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

রসনায় লাগাম পরানো বড্ড কঠিন। কিন্তু রসনার সঙ্গে শরীরটি যাতে সঙ্গত দেয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখা বর্তমান জীবনযাত্রায় বড়ই জরুরি। এখনকার ব্যস্ত যাপনে খাই খাই প্রবণতা বা ‘ওভারইটিং’-এর ঝোঁক খুব বেশি। তার কারণই হল নানা ধরনের প্রক্রিয়াজাত খাবারের সহজলভ্যতা। জাঙ্ক ফুড, প্যাকেটজাত খাবার চাইলেই হাতের নাগালে পাওয়া যায়। তাই এর বাসনা কাটিয়ে ওঠা সহজ নয়, যতই জাঙ্ক ফুডের ক্ষতির দিকটা ফলাও করে বলা হোক না কেন। সে কারণেই গবেষকেরা একটা মধ্যপন্থা অবলম্বন করার কথা ভাবছেন। তা হল ‘স্কোরিং সিস্টেম’। কার পেটে কতটা জাঙ্ক ফুড সইবে, তা বোঝার জন্য নম্বর দেওয়া হবে। সেটি দেখে খাওয়ার ইচ্ছায় লাগাম পরানো যেতে পারে।

Advertisement

আমেরিকার ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’ (এনআইএইচ) এই স্কোরিং সিস্টেমটি নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা ‘প্রি-মেটাবোলাইট স্কোর’ নামে একটি পদ্ধতি চালু করতে চলেছেন। এটি হল একধরনের ‘বায়োমার্কার টুল’। অর্থাৎ কার শরীরে কী পরিমাণে টক্সিন বা দূষিত পদার্থ জমা আছে, উপকারী ব্যাক্টেরিয়া রয়েছে তা দেখেশুনে তবেই নম্বর দেওয়া হবে যে তিনি ঠিক কতটা জাঙ্ক ফুড খেলে সমস্যায় পড়বেন না। অর্থাৎ, যিনি সকালে পিৎজ়া, বেলায় বিরিয়ানি ও সন্ধ্যায় চপ-কাটলেট খাচ্ছেন, তাঁর হয়তো পরিমাণটা ওই পিৎজ়া অবধি এসেই থেমে যাবে। সারা দিনে ওই একটি জাঙ্ক ফুড খেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।

জাঙ্ক ফুড কত খেলে ভাল?

জাঙ্ক ফুড কত খেলে ভাল? ছবি: ফ্রিপিক।

গবেষণার এই খবরটি আমেরিকার ‘প্লস মেডিসিন’ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের গবেষক এরিকা লফ্টফিল্ড জানিয়েছেন, রক্ত ও প্রস্রাবের নমুনা নিয়ে দেখা হবে, তাতে কী পরিমাণ টক্সিন আছে। কেবল তা-ই নয়, শরীরে বিপাকক্রিয়ার হার মাপা হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত মেশিন লার্নিংয়ের সাহায্যে। সেটা কী ভাবে? শরীরকে পরিচালনা করতে ও দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যেতে প্রয়োজন শক্তির। আর তার জন্য শরীরে বিপাকের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। খাওয়াদাওয়ার পরে শরীরে যে রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়, তাকেই বিপাক বলা যেতে পারে। এই বিপাকের সময়ে যে ক্যালরি ক্ষয় হয়, তাকে বলা হয় ‘বেসাল মেটাবলিক রেট’। এটিই পরিমাপ করে নম্বর দেওয়া হবে।

প্রত্যেকের শারীরিক গঠন আলাদা হয়। খাবারের চাহিদাও হয় ভিন্ন। অনেকেরই ডায়াবিটিস, হার্টের রোগ বা কিডনির অসুখ রয়েছে। তাই সকলের ক্ষেত্রে নম্বর সমান হবে না। স্কোরিং সিস্টেম কী ভাবে করলে প্রত্যেকেই তা মেপে নিতে পারবেন, সে পদ্ধতিই বার করার চেষ্টা করছেন গবেষকেরা।

আরও একটি কাজ হবে এই পদ্ধতিতে। সেটি হল, কে কখন কী পরিমাণে খেলে উপকার পাবেন, তা-ও বলা যাবে। মনে করুন, আপনি আগের দিন ৮টায় রাতের খাবার খেয়েছেন। পরের দিন জলখাবার খাচ্ছেন বেলা ১১টায়। কাজের চাপে, বা নিছক হালকা ভাবে এই খাদ্যাভ্যাস তৈরি হলেও লাভের চেয়ে ক্ষতি হবে বেশি। বিপাক কমার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকবে বদহজমের সমস্যা। তাই সেই ব্যক্তির খাওয়াদাওয়ার ধরন কেমন হলে ভাল হবে, সেটিও জানা যাবে স্কোরিং পদ্ধতিতে। আপাতত গবেষণাটি চলছে। খুব তাড়াতাড়ি সেই স্কোর-বোর্ড সকলের জন্য নিয়ে আসা হবে বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা।

Advertisement
আরও পড়ুন