Stroke Risk

রক্তের গ্রুপ ‘এ’ না কি ‘বি’? কমবয়সে ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেশি কাদের?

কোন গ্রুপের রক্তে ইস্কিমিক স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেশি? গবেষণায় কী নতুন তথ্য পেলেন বিজ্ঞানীরা?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৫ ১১:৫২
A new study finds that individuals with blood type A1 have a higher risk of early-onset stroke

কোন রক্তের গ্রুপে স্ট্রোক হওয়ার প্রবণতা বেশি? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আপনার রক্তের গ্রুপ কী, তা দেখেই নাকি বোঝা যাবে স্ট্রোকের ঝুঁকি কেমন! শুনতে অবাক লাগলেও গবেষকরা এমনটাই বলছেন। আমেরিকার বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, যাঁদের রক্তের গ্রুপ ‘এ’, তাঁদের কম বয়সে স্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। ‘ও’ গ্রুপের রক্ত যাঁদের, তাঁদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি সবচেয়ে কম।

Advertisement

আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকেরা রক্তের গ্রুপ নিয়ে পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখেছেন, এর সঙ্গে ব্রেন স্ট্রোকের সম্পর্ক আছে। প্রতিটি রক্তের গ্রুপের নিজস্ব জিনগত বৈশিষ্ট্য থাকে। ‘এ’ গ্রুপের উপগোষ্ঠী ‘এ১’ গ্রুপের রক্ত যাঁদের আছে, তাঁদের শরীরে এমন কিছু প্রোটিন তৈরি হয়, যার কারণে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। বিশেষ করে মস্তিষ্কে রক্ত বাঁধার প্রবণতা বেশি থাকে। ‘নিউরোলজি’ জার্নালে এই বিষয়ে গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হয়েছে।

কেন গ্রুপের রক্তে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি?

১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সি ১৭ হাজার মানুষের উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে গবেষকেরা দেখেছেন, ‘এ’ গ্রুপের উপগোষ্ঠী ‘এ১’ গ্রুপের রক্ত যাঁদের, তাঁরা খুব কম বয়সেই ইস্কিমিক স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। আরও ৬ লক্ষ লোকের উপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, যাঁদের রক্ত ‘এ’ গ্রুপের, তাঁদের অল্প বয়সে স্ট্রোকের ঝুঁকি ১৮ শতাংশ বেশি। অন্য দিকে, যাঁদের রক্তের গ্রুপ ‘ও’, তাঁদের অন্যদের তুলনায় স্ট্রোকের ঝুঁকি ১২ শতাংশ কম। এর কারণ হল দু'টি প্রোটিন ‘ভন উইলব্যান্ড ফ্যাক্টর’ এবং ‘ফ্যাক্টর ৮’। এই দুই প্রোটিনের কারণেই মস্তিষ্কের রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বেশি থাকে।

স্ট্রোক সাধারণত দু’ধরনের— ইস্কিমিক ও হেমারেজিক। ইস্কিমিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাধা পেয়ে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। আর হেমারেজিকে রক্তজালিকাগুলি স্ফীত হয়ে ছিঁড়ে যেতে থাকে। ফলে মস্তিষ্কের ভিতর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ‘এ’ রক্তের গ্রুপের ইস্কিমিক স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকিই বেশি।

স্ট্রোক থেকে বাঁচতে

লক্ষণ খেয়াল করতে হবে। প্রধান উপসর্গ হল, হাত ও পা দুর্বল-শিথিল হয়ে যাওয়া। স্ট্রোকের অন্যান্য সমস্যা হঠাৎ দেখা দেয়। কিন্তু এই উপসর্গটি দেখা দেয় বাকি সব লক্ষণ জানান দেওয়ার আগেই। হাত-পা নাড়াতে সমস্যা হয়। তার পর ধীরে ধীরে কথা জড়িয়ে আসতে থাকে, মুখ বেঁকে যেতে পারে। শরীরের এক দিক অসাড় হতে শুরু করে। কয়েক মিনিট এ রকম কথা বলতে না পারা, হাত বা পা অসাড় হয়ে যাওয়া অথবা চোখে অন্ধকার দেখার মতো ঘটনাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে, ‘ট্র্যানজিয়েন্ট ইসকিমিক অ্যাটাক’ বা ‘টিআইএ’। সাধারণ ভাবে একে মিনি স্ট্রোক বলা যায়। এই সময়েই সতর্ক হলে ও দ্রুত চিকিৎসকের কাছে গেলে পরবর্তীতে বড়সড় বিপদের ঝুঁকি কমবে।

স্ট্রোক হওয়ার পর সাড়ে চার ঘণ্টা হল গোল্ডেন আওয়ার। এর মধ্যে ইন্টারভেনশন পদ্ধতির সাহায্যে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক করে দিতে পারলে রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন।

Advertisement
আরও পড়ুন