Fruit consumption rule

দিনের কোন সময়টি ফল খাওয়ার জন্য আদর্শ? সময়ের ভুলে ফল খাওয়া বিফলে যাচ্ছে না তো?

ফল সাধারণত খাওয়া হয় বাড়তি পুষ্টির জন্য। যে পুষ্টি রোজের ডাল-ভাত-তরকারিতে সব সময় পাওয়া যায় না। যে পুষ্টি শরীরে থাকলে নানা রোগের সঙ্গে লড়াই করা যেতে পারে। কিন্তু ফল শরীরে গিয়ে উল্টো কাজ করছে না তো?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:০০
কতটা ‘ভরা পেটে ফল’ খাওয়া নিরাপদ?

কতটা ‘ভরা পেটে ফল’ খাওয়া নিরাপদ? ছবি : সংগৃহীত।

ফল খাওয়া ভাল। কিন্তু তা কি দিনের যে কোনও সময় যে কোনও ভাবে খেয়ে নিলেই হয়? ফল খাওয়ার কি কোনও নিয়ম নেই?

Advertisement

ফল সাধারণত খাওয়া হয় বাড়তি পুষ্টির জন্য। যে পুষ্টি রোজের ডাল-ভাত-তরকারিতে সব সময় পাওয়া যায় না। যে পুষ্টি শরীরে থাকলে নানা রোগের সঙ্গে লড়াই করা যেতে পারে। যে পুষ্টি থাকলে অল্প বয়সে বুড়িয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাও দূরে থাকে। কিন্তু দাম দিয়ে যে সমস্ত ফল কিনে খাচ্ছেন, তা শরীরে গিয়ে উল্টো কাজ করছে না তো? সমাজমাধ্যমে সম্প্রতি এক তারকা পুষ্টিবিদ ডিম্পল জ্যাংড়া এই নিয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।

ডিম্পল একজন খ্যাতনামা যাপন প্রশিক্ষক, যাঁর অনুগামী তালিকায় রয়েছেন সোনম কপূরের মতো বলিউডের নায়িকাও। ডিম্পল তাঁর সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়োয় বলেছেন, ‘‘ফল খেলে তা কোনও খাবারের সঙ্গে না খেয়ে আলাদা করে খাওয়াই ভাল। ফল খাওয়ার আগে বা পরে অন্য খাবার খেলে তা হজমে প্রভাব ফেলতে পারে। যে ফল এক ঘণ্টায় হজম হয়ে যেত, তা নিজে তো হজম হলই না, উল্টে তাতে থাকা এনজ়াইম তার সঙ্গে খাওয়া অন্য খাবারকেও গেঁজিয়ে তুলল। ফলে হজমে আরও দেরি হল।’’

এ দেশে ভরা পেটে ফল খাওয়ার প্রবাদ চালু আছে। তবে কি তারকা যাপন প্রশিক্ষকের এই দাবি ভুল? না এত দিন যা জেনে এসেছেন, তাতে কোনও ভুল রয়েছে? সত্যিটা কী, তা জানতে পুষ্টিবিদ শ্রেয়া চক্রবর্তীর দ্বারস্থ হতে তিনি বললেন, ‘‘ওই পুষ্টিবিদ যা বলেছেন তা পুরোপুরি ভুল নয়, তবে পুরোপুরি ঠিকও নয়। আমি আমার কাছে আসা রোগীদের সব সময় বলি, ফল যে কোনও সময় খাওয়া যেতে পারে। তবে হজমের সুবিধা এবং শারীরিক নানা বিষয় মাথায় রেখে ভাবলে কিছু নিয়ম তো মানতেই হয়।’’

ফল খাওয়ার সবচেয়ে ভাল সময় কোনটি?

শ্রেয়া জানাচ্ছেন, হালকা মধ্যাহ্নভোজের পরে কয়েক টুকরো ফল খাওয়া যেতেই পারে। যাঁরা ডায়াবেটিক, তাঁদের অবশ্য ওই ফল খাওয়ার সময় একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। ফলটির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যেন কম হয়। অর্থাৎ এমন ফল, যা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটা বেড়ে যাবে না। কারণ খাবার খাওয়ার পরে এমনিতেই রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে। তাই বেশি মিষ্টি রসের ফল খেলে তা আরও বাড়তে পারে।

কিন্তু এ দেশে তো কেউ দুপুরে হালকা খাবার খান না!

এ দেশে মানুষের সারা দিনের মূল খাবারটিই হল মধ্যাহ্নভোজ। সেখানে ভাত, ডালের মতো উদ্ভিজ্জ প্রোটিন, নানা রকম শাকসব্জির তরকারির পাশাপাশি থাকে মাছ, ডিম বা মাংস। শ্রেয়া বলছেন, ‘‘সে ক্ষেত্রে অবশ্য ফল খাওয়ার জন্য একটু সময় নেওয়াই ভাল। কারণ সে ক্ষেত্রে দুপুরের খাবার খাওয়ার কিছু ক্ষণ পরেই যদি কেউ ফল খান তবে পেট ফাঁপা বা অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা হতে পারে। শরীরে ক্যালোরিও যেতে পারে বেশি।’’

হজমের সমস্যা এড়াতে হলে ফল খাওয়ার সেরা সময় তবে কোনটি হওয়া উচিত?

শ্রেয়া জানাচ্ছেন, দুপুরের খাবার খাওয়ার ২ ঘণ্টা আগে বা ২ ঘণ্টা পরে ফল খাওয়ার সেরা সময়। সব থেকে ভাল হল দুপুরের খাবার খাওয়ার ২ ঘণ্টা আগে খাওয়া। সে ক্ষেত্রে ফল হজম হওয়ার যথেষ্ট সময় পায়। প্রাতরাশের খাবারও তত ক্ষণে হজম হয়ে যায়। তবে দুপুরের খাবার হজম হওয়ার জন্য ঘণ্টা দুয়েক সময় দিয়ে তার পরে ফল খেলেও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

ফল কি রাতে বা সন্ধ্যায় খাওয়া যেতে পারে?

রাতে ফল খেলে অ্যাসিডিটি হয় যাঁদের, তাঁরা ছাড়া বাকিরা ফল খেতে পারেন বলে জানাচ্ছেন শ্রেয়া। তবে রাতের দিকে টকজাতীয় ফল এড়িয়ে চলাই ভাল বলে জানাচ্ছেন তিনি।

Advertisement
আরও পড়ুন