Human Longevity

আয়ু বাড়বে! শুধু নিষ্ক্রিয় রাখতে হবে একটি প্রোটিনকে, যৌবন ধরে রাখার গবেষণায় নতুন খোঁজ

বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, আয়ু অবশ্যই বাড়বে এবং বুড়ো হওয়ার ঝক্কিও নিতে হবে না, শুধু বন্দি করতে হবে একটি প্রোটিনকে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৫ ১৭:৩৪
Blocking this protein molecule can increase lifespan by 25 percent, new study claims

যৌবন ধরে রাখার গবেষণায় নতুন খোঁজ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বুড়ো হতেই যত অনীহা। যৌবন যদি ধরে রাখা যায় আরও কয়েকটা বছর, তা হলে বেশ হয়। বয়সের কাঁটা বিপরীত দিকে ঘোরাতে যত রকম সম্ভব গবেষণা হয়ে চলেছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। লক্ষ্য দু’টি— আয়ু বাড়বে এবং যৌবন নিয়েই দীর্ঘ সময়ে বেঁচে থাকা যাবে। বার্ধক্য ঠেকাতে একেবারে জিন স্তরে গিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। আর তাতেই নতুন এক খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, আয়ু অবশ্যই বাড়বে এবং বুড়ো হওয়ার ঝক্কিও নিতে হবে না, শুধু ধরেবেঁধে রাখতে হবে একটি প্রোটিনকে।

Advertisement

লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজ ও সিঙ্গাপুরের ডিউক-এনইউএস মেডিক্যাল স্কুলের গবেষকেরা একযোগে এই গবেষণা করছেন। ইঁদুরের উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চলছে। গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার’ মেডিক্যাল জার্নালে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, যত নষ্টের গোড়া ওই একটি প্রোটিন, যার নাম দেওয়া হয়েছে আইএল-১১। এই প্রোটিনটি শরীরে যত বেশি থাকবে, ততই বার্ধক্য আসবে তাড়াতাড়ি। যদি এই প্রোটিনটির বাড়বৃদ্ধিতে লাগাম পরানো যায়, তা হলেই আয়ু বাড়বে। মৃত কোষের জায়গায় নতুন কোষের জন্ম হবে। বার্ধক্যও ঠেকিয়ে রাখা যাবে দীর্ঘ সময়।

আইএল-১১ প্রোটিনই কি খলনায়ক?

ইন্টারলিউকিন-১১ প্রোটিনটি আসলে এক রকম সাইটোকাইন। এটি শরীরের প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে। বিভিন্ন রকম কোষ থেকে এই প্রোটিন তৈরি হয়। এর ভাল গুণ হল, কোষের ক্ষত মেরামত করা। তবে যদি এর মাত্রা বাড়ে, তখন শরীরের ভিতরে প্রদাহও বাড়বে, উল্টে কোষের ক্ষতি হবে। দেখা যায়, বয়স যত বাড়ে এই প্রোটিনের কারণে শরীরের ভিতরে প্রদাহও বাড়তে থাকে। আর তাতে কোষের মৃত্যু দ্রুত হয়, ফলে শরীরও বুড়িয়ে যেতে থাকে।

গবেষকেরা প্রোটিনটিকে ঠেকানোর উপায়ই খুঁজছেন। তার জন্য ইঁদুরের উপর পরীক্ষা হয়েছে। ৭৫ সপ্তাহ বয়সি (মানুষের হিসেবে ৫৫ বছর) একটি ইঁদুরকে অ্যান্টিবডি ইঞ্জেকশন দেন বিজ্ঞানীরা। ওই অ্যান্টিবডি আইএল-১১ প্রোটিনের বাড়বৃদ্ধিকে কিছু সময়ের জন্য হলেও ঠেকিয়ে রাখতে পারে। তাতে দেখা যায়, ইঁদুরটি আয়ু ২৫ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। অর্থাৎ, ইঁদুরটি মোট ১৫৫ সপ্তাহ বেঁচেছে, যেখানে অন্যান্য ইঁদুরের আয়ু ১২০ সপ্তাহেই ফুরিয়ে গিয়েছে। যদিও ইঁদুরের উপর করা পরীক্ষাটি মানুষের উপর খাটবে কি না, তার নিশ্চিত কোনও তথ্য দিতে পারেননি গবেষকেরা। জানানো হয়েছে, গবেষণাটি চলছে। প্রোটিন নিষ্ক্রিয় করে কী ভাবে বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখা যাবে, তার প্রচেষ্টা চলছে। এতে শুধু আয়ু বাড়বে তা নয়, অনেক দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসাও হবে। প্রোটিনের প্রদাহের কারণে যে যে অঙ্গের ক্ষতি হয়, সেগুলি আর হবে না। ফলে জটিল ব্যাধির প্রকোপও কমবে।

Advertisement
আরও পড়ুন