Acanthosis Nigricans

শিশুর ওজন বাড়ছে? ঘাড়ে-গলায় কালচে ছোপ দেখা দিলে সাবধান, কোন রোগের লক্ষণ?

শিশুর ঘাড়ে, গলার কাছে কালচে ছোপ, র‌্যাশ দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে। এমন দাগ যদি ওষুধেও না সারে তা হলে বুঝতে হবে সেটি চর্মরোগের লক্ষণ নয়। তলে তলে বাসা বেঁধেছে কোনও রোগ?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:০৮
Dark patches on your child\\\\\\\'s skin could signal insulin resistance

শিশুর ঘাড়ের কাছে গাঢ় কালচে ছোপ পড়লে সাবধান। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

হঠাৎ করেই ওজন বাড়ছে শিশুর। সেই সঙ্গে ঘাড়ে, গলায় বা কনুইতে কালচে ছোপ দেখা দিচ্ছে। এমন হলে সতর্ক হতে হবে বাবা-মায়েদের। ঘাড়ে, গলার কাছে কালচে ছোপ কোনও চর্মরোগের লক্ষণ নয়। ইনসুলিন হরমোনের তারতম্য হলে এমনটা হতে পারে। ঘাড়ের কাছে চামড়া কুঁচকে যাওয়া, সেখানে ফুস্কুড়ি, চুলকানির সমস্যাও হয়। অনেকেই ভাবেন, ময়লা জমে কালচে দাগ হয়েছে। তা কিন্তু নয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘অ্যাকান্থোসিস নিগ্রিকানস’। ডায়াবিটিস বাসা বাঁধলে বা লিভারের রোগ হলে এমন লক্ষণ দেখা দিতে থাকে।

Advertisement

‘পেডিয়াট্রিক ডায়াবিটিস’ জার্নালে এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে গবেষকেরা জানিয়েছেন, ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হচ্ছে ছোটরাও। বয়স্কদের যে ধরনের ডায়াবিটিস হয় তা টাইপ-টু। শিশুদের হয় টাইপ-ওয়ান। টাইপ-ওয়ান ও টাইপ-টু-র মধ্যে পার্থক্য আছে। ছোটদের ক্ষেত্রে ইনসুলিনের ঘাটতি হয়। তাদের অগ্ন্যাশয়ে যে বিটা সেলগুলো ইনসুলিন তৈরি করে সেগুলি নষ্ট হয়ে যায়। ইনসুলিন ক্ষরণ না হওয়ায় রক্তে শকর্রার মাত্রা বেড়ে যায়। এতে যেমন হঠাৎ করে ওজন বেড়ে যায়, তেমনই আরও কিছু লক্ষণ দেখা দিতে থাকে। যেমন, শিশুর ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসবে, ক্লান্তি বাড়বে, চোখের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেই সঙ্গেই ঘাড়ে, গলার কাছে কালচে ছোপ, র‌্যাশ দেখা দেবে।

গবেষকেরা জানাচ্ছেন, শরীরে ইনসুলিন হরমোনের তারতম্য বা ‘ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স’ হলে ত্বকের মেলানিন রঞ্জকের তারতম্য দেখা দেয়। চামড়া কুঁচকে যেতে শুরু করে। যে শিশুদের এমন লক্ষণ দেখা দেবে, তাদের পরবর্তী সময়ে টাইপ-২ ডায়াবিটিস হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। এই ‘ইনসুলিন রেজ়িস্ট্যান্স’-এর আরও একটি কারণ হল লিভারের রোগ। লিভারে মেদ জমতে শুরু করলে রক্তে ইনসুলিনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। যে শিশুরা বেশি জাঙ্ক ফুড, ভাজাভুজি খায়, তাদের মেটাবলিক সিনড্রোমও দেখা দেয়। এর ফলে শরীরে প্রদাহ বাড়তে থাকে। ওজন বাড়ে, হজমশক্তি কমে যায়।

গলায় এমন দাগ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি। রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ছে কি না তা পরীক্ষা করে চিকিৎসা শুরু হবে তখনই। সেই সঙ্গে খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ করাও জরুরি। প্যাকেটজাত, ভাজাভুজি, চিজ়যুক্ত খাবার, অতিরিক্ত চকোলেট খাওয়া বন্ধ করতে হবে। তার বদলে সুষম আহার প্রয়োজন। রোজ প্রচুর পরিমাণে শাকসব্জি, ফল খাওয়া জরুরি। ২টি করে মরসুমি ফল রাখুন শিশুর খাতদ্যতালিকায়। স্ন্যাক্স খাওয়ার ইচ্ছা হলে, শুকনো কড়াইয়ে নাড়া মুড়ি, চিঁড়ে, মাখনা রাখতে পারেন। স্বাস্থ্যের জন্য ভাল, এমন খাবার নির্বাচন করতে হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন