Dry Skin Remedies

শীতে ঘন ঘন অসুখে পড়ছেন, ত্বক জেল্লা হারাচ্ছে? ৩ খাবারেই সুস্থ থাকার পরামর্শ পুষ্টিবিদের

রোগবালাই ধারেকাছে ঘেঁষবে না, ত্বক থাকবে মসৃণ, কমবে চুল ঝরা। করিনা কপূরের পুষ্টিবিদ বলছেন, সাধারণ ৩ খাবারেই সব সমস্যার সমাধান হতে পারে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:৫২
শীতে সুস্থ থাকার সহজ তিন পরামর্শ দিলেন মুম্বইয়ের পুষ্টিবিদ।

শীতে সুস্থ থাকার সহজ তিন পরামর্শ দিলেন মুম্বইয়ের পুষ্টিবিদ। ছবি: সংগৃহীত।

খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম যেমন মুখের জেল্লা কেড়ে নিতে পারে, তেমনই সেই ঔজ্জ্বল্য ফেরাতে পারে সঠিক খাবারই। শারীরিক-মানসিক ভাবে সুস্থ থাকাই হোক বা মুখে-চোখে চটক আনা— নেপথ্যে সেই পুষ্টিরই ভূমিকা। ঘরোয়া খাবারেই অসুস্থতার পথ্য লুকিয়ে থাকে, এ কথা বার বার বলেন রুজুতা দিবেকর। মুম্বইয়ের পুষ্টিবিদ ইদানীং প্রায়শই চর্চায় থাকেন। কারণ, করিনা কপূর থেকে বি-টাউনের বহু তারকাই যে তাঁর পুষ্টি-পরামর্শ মানেন।

Advertisement

সেই রুজুতা বাতলে দিলেন শীত সুস্থ থাকার উপায়। শীত আসা মানেই গা-হাত পা রুক্ষ হয়ে পড়া। শীতের দিনে খাওয়া-দাওয়া একটু বেশি হয়েই যায়। ফলে ভুগতে হয় পেটগরম, বদহজমের সমস্যাতেও। বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকায় রুক্ষ হয়ে যায় ত্বক। শুষ্ক হয় চুলও, খুশকির সমস্যা বাড়ে। এই সব সমস্যার সমাধানে পুষ্টিবিদের পরামর্শ সঠিক পুষ্টির, যা মেলে স্বাস্থ্যকর খাবার থেকে।

নেটপ্রভাবী পুষ্টিবিদ বলছেন, শীতে ঘুমের সমস্যা, পেটগরম, খুশকি, রুক্ষ ত্বক, কোষ্ঠকাঠিন্য— সব সমস্যার সমাধান হতে পারে পাতে তিন খাবার রাখলে।

বাজরা: বাজরার পুষ্টিগুণ চর্চিত হওয়ার পর থেকে অনেকেই গমের আটার পাশাপাশি বাজরার আটার রুটি খান। পুষ্টিবিদ বলছেন, বাজরা হাড় এবং মস্তিষ্ক, দুইয়ের স্বাস্থ্যই ভাল রাখে। চুল ঝরা কমাতেও বাজরার পুষ্টিগুণের ভূমিকা রয়েছে। বাজরায় প্রোটিন, ফাইবার, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন এবং ‌‌জ়িঙ্কের পাশাপাশি রয়েছে ত্বক-চুল এবং স্নায়ুর স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি বিভিন্ন ধরনের বি ভিটামিন। বাজরায় প্রচুর পরিমাণে ডায়েটরি ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়াকে ভাল রাখতে সাহায্য করে। ফাইবার বেশি থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য কমে। ফলে অন্ত্রের স্বাস্থ্যও ভাল থাকে। বাজরার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকার কারণে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়তে দেয় না।

রুজুতা বলছেন, শীতের দিনে ক্লান্ত লাগলে, হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমলেও বাজরা খাওয়া ভাল। তা যে রুটি হিসাবে খেতে হবে তা নয়, বরং লাড্ডু বা খিচুড়ি, উপমা— নানা ভাবেই তা খাওয়া যেতে পারে। শরীরে শক্তি জোগাতে, গা-গরম রাখতে সাহায্য করবে বাজরা।

উন্ধিও: গুজরাতি এই খাবার মহারাষ্ট্রেও অনেকে খান। মরসুমি সব্জি দিয়ে তৈরি উন্ধিও ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন, ফাইবারে পূর্ণ। পছন্দের যে কোনও শাকসব্জি যোগ করা যায় এতে। বিভিন্ন রকম কন্দ, সব্জি, শুঁটি, শাক দিয়ে তৈরি খাবারটি শীতের উপযোগী। রুজুতার কথায়, এতে রয়েছে প্রো বায়োটিক, যা পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখে।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।

তিন ধাপে রান্নাটি হয়। প্রথমে মেথি শাক, বেসন এবং আদা-লঙ্কা বাটা, হলুদগুঁড়ো, চিনি, লেবুর রস মিশিয়ে অল্প জল দিয়ে শক্ত করে মেখে নিতে হয়। ছোট ছোট বল তৈরি করে গরম তেলে লালচে করে ভেজে নিলে তৈরি হয় মুঠিয়া।

পরের ধাপে সব্জি ভেজে নিতে হয়। কড়াইয়ে তেল গরম করে আলু, মিষ্টি আলু, মেটে আলু, ছোট বেগুন, কাঁচকলা, শিম, কড়াইশুঁটি হালকা নাড়াচাড়া করে নেওয়া হয়।

তৃতীয় ধাপে দরকার হয় মশলার। নারকেলকোরা, ধনেপাতা, আদা-লঙ্কা বাটা, তিল, বাদামগুঁড়ো, নুন এবং চিনি একসঙ্গে মিশিয়ে তা চেরা বেগুন এবং আলুর মাঝখানে পুরের মতো দিতে হয়।

এর পর বড় কড়াইতে তেল গরম করে তাতে জোয়ান ও হিং ফোড়ন দিন।মশলা ভরা বেগুনগুলো, আলু দিয়ে এবং অন্য সব্জি বেঁচে যাওয়া মশলা বাটা দিয়ে সমস্ত উকরণ কষিয়ে এবং সামান্য গরম জল দিন। ফুটে গেলে ভেজে রাখা মুঠিয়াগুলো উপরে সাজিয়ে দিন। পাত্রের মুখ ঢেকে একদম ঢিমে আঁচে ২০-২৫ মিনিট রান্না করলেই হবে।

রুজুতা উন্ধিওর কথা বললেও, তিনি মূলত শীতের মরসুমি সব্জি খাওয়াকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।

শুকনো নারকেল: শীতের দিনে জবুথবু লাগে। কাজে উদ্যম পাওয়া যায় না। এমন ভাব কাটাতে শুকনো নারকেল খেতে বলছেন করিনা কপূরের পুষ্টিবিদ। তিনি বলছেন, এতে মিডিয়াম চেন ট্রাইগ্লিসারয়েড থাকে, যা শরীরে শক্তির জোগান দেয়। মেদ গলাতে এবং ত্বকের জেল্লা ফেরাতেও এই খাবার সাহায্য করে।

রুজুতা সব সময়েই ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের ঐতিহ্যবাহী, প্রথাগত খাবার খাওয়ার উপরেই জোর দেন। সেইসঙ্গে পরিমিত আহারও গুরুত্ব পায় তাঁর পরামর্শে।

Advertisement
আরও পড়ুন