Cholesterol Control tips

দীপাবলিতে দেদার ভাজাভুজি, মিষ্টি খেয়ে কোলেস্টেরল ঊর্ধ্বমুখী? এখন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন কী করে?

যাঁদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি, তাঁদের নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। হৃদ্‌রোগের অন্যতম কারণ হতে পারে বাড়তি কোলেস্টেরল। আর যাঁদের কোলেস্টেরল নেই, কিন্তু পুজোর ক’দিন প্রচুর পরিমাণে তেলমশলা দেওয়া খাবার, ভাজা মিষ্টি খেয়ে গিয়েছেন বা মদ্যপান করেছেন, তাঁদের সতর্ক হতে হবে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:২৫
Festive eating often disrupts body balance, here are some ways to control cholesterol during festivals

কোলেস্টেরলে নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় কী কী? ছবি: ফ্রিপিক।

উৎসব এক বা দু’দিনের। তবে তার জের চলতে থাকে বহুদিন ধরেই। কালীপুজো, দীপাবলি মিটলেই রয়েছে ভাইফোঁটা। উৎসবের আবহে মিষ্টি, ভাজাভুজি, মুখরোচক নানা পদ খাওয়াই হয়। তা যদি পরিমিত বা একদিনের জন্য হয়, তাতে হয়তো বিশেষ ক্ষতি হয় না। কিন্তু যদি সেই অনিয়ম চলতেই থাকে, তা হলে শরীরের হাল বেহাল হবেই। উৎসব চলে যাবে, তবে যে অসুখবিসুখ বাসা বাঁধবে তা সারাতে গলদঘর্ম হতে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় দুর্গাপুজো, কালীপুজো বা দীপাবলির উৎসবের পরে কোলেস্টেরল বেড়ে যায় অনেকের। সে ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণের উপায়ও জেনে রাখা ভাল।

Advertisement

যাঁদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি, তাঁদের নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। হৃদ্‌রোগের অন্যতম কারণ হতে পারে বাড়তি কোলেস্টেরল। মূলত অনিয়মের হাত ধরেই বাড়তি কোলেস্টেরল শরীরে বাসা বাঁধে। আর যাঁদের কোলেস্টেরল নেই, কিন্তু পুজোর ক’দিন প্রচুর পরিমাণে তেলমশলা দেওয়া খাবার, ভাজা মিষ্টি খেয়ে গিয়েছেন বা মদ্যপান করেছেন, তাঁদের এ বার সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে। খারাপ কোলেস্টেরল রক্তে মাথাচাড়া দেওয়ার আগেই সামলে নিতে হবে। উৎসবের আনন্দের অংশীদার হয়েও কী ভাবে চললে স্বাস্থ্য বজায় থাকবে, তার কিছু উপায় জেনে রাখা জরুরি।

কোলেস্টেরলকে কাবু করবেন কী উপায়ে?

কোলেস্টেরল থাকলে ডোবা তেলে ভাজা কোনও খাবার থেকে দূরে থাকতে বলেন চিকিৎসকরা। কারণ এই ধরনের খাবারে ক্যালোরির পরিমাণ অনেক বেশি। এত দিন লুচি, পরোটা বা কচুরি সবই খেয়েছেন, এ বার সামলে নিন। ভাজার বদলে বেকড খাবার খান। ময়দার লুচি বা পরোটা না খেয়ে রাগির রুটি বা মুগ ডাল দিয়ে বানানো চিল্লা খান যা খেতেও ভাল এবং স্বাস্থ্যকরও।

রোজের ডায়েটে রাখুন বিভিন্ন ড্রাই ফ্রুটস এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার। যে সমস্ত খাবারে গ্লাইসেমিক্স ইনডেক্স কম সেগুলি রক্তে কোলেস্টেরল এবং শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পাতে রাখুন বিভিন্ন মরসুমি শাকসব্জি, ডাল।

বিভিন্ন শস্যদানা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে উপকারী। শস্যে পুষ্টি এবং খনিজ পদার্থ থাকে যা উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে সৃষ্ট সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। বিরিয়ানি, পোলাও বা ফ্রায়েড রাইসের লোভ সংবরণ করে আগামী ক’দিন খেতে পারেন ওট্‌সের খিচুরি, কিনোয়ার উপমা, নানা রকম সব্জি দিয়ে তৈরি ডালিয়া।

খাদ্যতালিকায় রাখুন প্রোবায়োটিক রয়েছে এমন খাবার। প্রোবায়োটিক খেলে হজমপ্রক্রিয়া ভাল হবে, রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল জমতে পারবে না। প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার অন্ত্রে উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার বাড়বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। টক দই, আচার, দোসা, ইডলি-সহ যে কোনও গ্যাঁজানো খাবার প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ।

প্রতি দিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম (যেমন দ্রুত হাঁটা, জগিং, সাঁতার, সাইক্লিং) করুন। নিয়মিত শরীরচর্চা ভাল কোলেস্টেরল বাড়াতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। সকালে ও সন্ধ্যায় অন্তত ২০ মিনিটের জন্য হলেও হাঁটুন। শুধুমাত্র খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে না, আরও কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন। ধূমপানের অভ্যাসে লাগাম টানতে হবে। আগামী কয়েকদিন মদ্যপানের মাত্রা কমিয়ে দিতে হবে।

নিয়ম করে যোগাসন করলে শুধু কোলেস্টেরলই নয়, আরও বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ থেকেও রেহাই পাবেন। কোলেস্টেরল কমানোর উপযুক্ত ব্যায়াম হল সর্বাঙ্গাসন। চিত হয়ে শুয়ে পা দু’টি জোড়া করে উপরে তুলুন। এ বার দু’হাতের তালুতে কোমরের ভার দিয়ে পিঠ এমন ভাবে ঠেলে তুলুন, যেন ঘাড় থেকে পা পর্যন্ত এক সরলরেখায় থাকে। থুতনিটি বুকের সঙ্গে লেগে থাকবে। দৃষ্টি থাকবে পায়ের আঙুলের দিকে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে হবে। ৩০ সেকেন্ড এ ভাবে থেকে শুরুর অবস্থানে ফিরে আসুন।

মানসিক চাপ বাড়লেও কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় শরীরে। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে খানিকটা সময় যোগাসন ও ধ্যানের জন্য বরাদ্দ রাখুন। নিয়ম করে এই কাজ করলে মানসিক চাপ থেকে মুক্ত হওয়া যায়।

Advertisement
আরও পড়ুন