Stomach Cancer

পেটের ক্যানসার বাসা বাঁধে চুপিসারে, বদহজম বলেই ভ্রম হয়, কোন ৫ ধরনের খাবার খেলে ঝুঁকি কমবে?

পেটের ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন কমবয়সিরাই। রোজের খাওয়াদাওয়া এর জন্য অনেকটাই দায়ী। কোন কোন খাবার খেলে ও কী কী বাদ দিলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমবে, তা জেনে রাখা ভাল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:২১
Follow these dietary habits to lower your risk of stomach cancer

কোন পাঁচ ধরনের খাবার পেটের ক্যানসারের ঝুঁকি কমাবে? ছবি: ফ্রিপিক।

গ্যাস-অম্বল নিয়ে বাঙালি যতট চিন্তিত, ততটাই উদাসীন পেটের ক্যানসার নিয়ে। আসলে পাকস্থলী বা অগ্ন্যাশয়ে যে ক্যানসার বাসা বাঁধছে, তা বোঝা যায় না আগে থেকে। সাধারণ বদহজম বা অম্বলের সমস্যা বলেই মনে হয়। কারও আবার ঘন ঘন জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দেয়। কিন্তু জন্ডিস হলেই তো কেউ ক্যানসারের পরীক্ষা করান না। তাই বোঝাই যায় না, যে চুপিসারে শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণ রোগ। পেটের ক্যানসারের জন্য পুরোপুরি জীবনযাত্রায় অনিয়মকে দায়ী করেছেন চিকিৎসকেরা। দেশের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে, রোজের খাদ্যাভ্যাসের কারণেই পেটের ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা এত বাড়ছে। অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবিটিসও দায়ী।

Advertisement

পাকস্থলী, লিভার, গলব্লাডার ও অগ্ন্যাশয়ে ক্যানসার হলে তা পেটের ক্যানসারের মধ্যেই পড়ে। এর মধ্যে পাকস্থলী ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার খুবই বিপজ্জনক। আগে থেকে লক্ষণ প্রকাশ পায় না বেশির ভাগ সময়েই। অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রূপ হল ‘প্যানক্রিয়াটিক ডাক্টাল অ্যাডিনোকার্সিনোমা’। অসহ্য পেটে যন্ত্রণা এই ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ। কিছু খেলে কিংবা শুয়ে থাকলে এই যন্ত্রণা আরও বেড়ে যায়। এই ক্যানসারের ক্ষেত্রে মূলত পেটের উপরিভাগে যন্ত্রণা হয়। ধীরে ধীরে ব্যথা পেট থেকে পিঠের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ঘন ঘন ডায়েরিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত হওয়া, দীর্ঘ দিন ধরে জ্বর, ক্লান্তিও এর লক্ষণ। যদিও এই লক্ষণগুলিকে গ্যাসের সমস্যা ভেবে ভুল করেন অনেকেই। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, পেটের ক্যানসর থেকে বাঁচতে হলে রোজের খাওয়াদাওয়ায় বদল আনতে হবে। যতই ডায়েট করুন, পাঁচ ধরনের খাবার যদি খাদ্যতালিকা থেকে বাদ যায়, তা হলেই ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়বে।

কোন পাঁচ ধরনের খাবার ক্যানসারের ঝুঁকি কমাবে?

তাজা ফল ও সব্জি

ভিটামিন সি, ক্যারোটিনয়েড ও ফ্ল্যাভনয়েড আছে এমন খাবার খেতে হবে। যেমন, গাজর, বিন, ব্রকোলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, পালং শাক, লেবু জাতীয় ফল, আপেল, পেয়ারা, পেঁপের মতো ফল খেলে হজমপ্রক্রিয়া ভাল হবে। এতে পাকস্থলী বা অগ্ন্যাশয়ে ক্যানসার কোষের বিভাজন হবে না।

সোডিয়াম ডায়েট বিপদের কারণ

তাড়াতাড়ি ওজন কমবে ভেবে অনেকেই এখন গ্রিলড খাবার বেশি খাচ্ছেন। চিকেন কবাব, তন্দুরি বা গ্রিলড চিকেনের মতো খাবারে নুনের মাত্রা বেশি থাকে। উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করলে, মাংসের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় তো বটেই, একই সঙ্গে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। বেশি আঁচে মাংস রান্না করলে হেটারোসাইলিক অ্যামিনেস (এইচসিএ) তৈরি হয়, যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। মাংসের ক্রিয়েটিনিন অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং শর্করার সঙ্গে মিশে এই জিনিসটি তৈরি করে। বদলে চিকেন স্ট্যু, সেদ্ধ চিকেন দিয়ে তৈরি স্যালাড বেশি উপকারী।

পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার

পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম আছে এমন খাবার রোজ খেলে হজমে সহায়ক উৎসেচক ও প্রোটিনের ভারসাম্য বজায় থাকে। পালংশাক, রাঙাআলু, টম্যাটো, শসা, নানা রকম ডাল, বিভিন্ন রকম বীজ যেমন সূর্যমুখীর বীজ, তিসি, কুমড়োর বীজ স্বাস্থ্যকর। সেই সঙ্গে ওট্‌স, ডালিয়া, কিনোয়ার মতো দানাশস্য খেলেও ভাল। তবে ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল ক্ষতিকর।

উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার

প্রয়োজনের ফাইবার পাওয়া যায় ভাত, রুটি, ডাল, ওটসের মতো খাবারে। তবে অল্প পরিমাণে। কিছুটা বেশি থাকে জোয়ার, বাজরা, রাগির মতো শস্যে। রোজের খাবারে ফাইবার বেশি থাকলে অম্বল, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয় না। ওট্‌স, সবুজ শাকসব্জি, ব্রাউন রাইস, চিয়া বীজেও প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে।

প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার

শরীর কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, খনিজ, জল— এই ছয়টি স্তম্ভের উপরেই নির্ভরশীল। আর খাবার থেকে এই পুষ্টিগুণ শরীরে শোষণ করতে সাহায্য করে উপকারী কিছু ব্যাক্টেরিয়া। তার ভারসাম্য বজায় রাখে প্রোবায়োটিক। ঘুরপথে হলেও সমগ্র শরীরকে সুস্থ ভাবে চালনা করতে এর অবদান অনস্বীকার্য। টক দই প্রোবায়োটিকের সব চেয়ে ভাল উৎস। রোজ টক দই খেলে উপকার হবে। ইডলি, দোসা, দই, আচার, ঘোলের মতো খাবারে প্রোবায়োটিক পাওয়া যাবে। কলার মধ্যে প্রচুর ফাইবার থাকে। দই ও ওট্‌সের সঙ্গে কলা মেশালে পুষ্টিগুণ আরও বাড়বে।

Advertisement
আরও পড়ুন