Harmful Home Appliances

গৃহস্থালির ৩ জিনিস থেকে কোটি কোটি বিষাক্ত কণা ঢুকছে শরীরে, অজান্তেই ঝুঁকি বাড়ছে জটিল রোগের

রোজের ব্যবহারের কিছু সামগ্রী থেকে অজান্তেই রাসায়নিক ঢুকছে শরীরে। দূষিত হচ্ছে ঘরের বাতাসও। অনেক বাড়িতেই রোজ ব্যবহার করা হয় এগুলি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:১২
Health hazards of ultrafine particles emitted by some home appliances

গৃহস্থালির কিছু সামগ্রী ফুসফুসের রোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে অজান্তেই। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বাইরের বাতাস যতটা দূষিত, তার চেয়ে ঢের বেশি ঘরের বাতাস। এমনটাই বলা হচ্ছে নানা গবেষণায়। এর জন্য কয়লার উনুনকে দায়ী করা হয় অনেক সময়েই। তবে উনুন আজকাল আর ক’টা বাড়িতেই বা থাকে! তা হলে দূষণের কারণ কী? গবেষণা বলছে, রোজের ব্যবহারের এমন কিছু জিনিস আছে, যা থেকে কোটি কোটি বিষাক্ত কণা বেরিয়ে বাতাসে মিশছে। ঢুকছে শরীরেও। ম্যাসাচুসেটসের হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল এবং দক্ষিণ কোরিয়ার পুসান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা জানাচ্ছেন, বেশ কিছু বৈদ্যুতিক সামগ্রী অনেক বাড়িতেই ব্যবহার করা হয়, যেগুলি গৃহস্থালির দূষণের মূল উৎস। অথচ না জেনেই সে সব সামগ্রী প্রায় রোজই ব্যবহার করা হচ্ছে।

Advertisement

গৃহস্থালির তিন জিনিস যেমন টোস্টার, হিটার এবং হেয়ার ড্রায়ার থেকে এমন কিছু রাসায়নিক কণা বার হয়, যেগুলির আকার ১০০ ন্যানোমিটারের কম। এগুলিকে বলা হয় ‘আলট্রাফাইন পার্টিকল’ (ইউএফপি)। এই সব কণা বাতাসে মিশে শ্বাসের সঙ্গে ঢুকে যায় শরীরে। সেই সব রাসায়নিক রক্তে মিশে জটিল স্নায়বিক রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। ক্ষতি করতে পারে হার্ট ও কিডনির।

'আলট্রাফাইন পার্টিকল' কী?

বাতাসের এমন ক্ষুদ্র কণা, যার আকার ১০০ ন্যানোমিটারের (০.১ মাইক্রন) চেয়েও কম। এতটাই ছোট যে খালি চোখে তো দূরের কথা, সাধারণ মাইক্রোস্কোপেও দেখা যায় না। খুব সহজেই এগুলি মিশতে পারে রক্তে। ফুসফুসেও ঢুকে যেতে পারে অনায়াসে। রক্তপ্রবাহে মিশে শরীরের নানা অঙ্গে গিয়ে জমা হতে পারে।

গবেষকেরা একটি পরিসংখ্যান দিয়েছেন। যেমন পপ-আপ টোস্টার ও এয়ার ফ্রায়ার অনেক বাড়িতেই ব্যবহার করা হয়। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষজন এখন তেলের ব্যবহার কমাতে এয়ার ফ্রায়ার বেশি ব্যবহার করছেন। দেখা গিয়েছে, এগুলিতে থাকা হিটিং কয়েল যখন উচ্চ তাপমাত্রায় পৌঁছয়, তখন তা থেকে প্রতি মিনিটে প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি রাসায়নিক কণা নির্গত হয়ে অবলীলায় ঢুকে যায় শরীরে।

আবার ধরা যাক হেয়ার ড্রায়ার। এর ভিতরে থাকে ডিসি মোটর, যা থেকে প্রচুর পরিমাণে লোহার কণা বার হয়।

বৈদ্যুতিক হিটার থেকেও প্রচুর পরিমাণে ‘আলট্রাফাইন পার্টিকল’ বার হয়। হিটারের কয়েল তৈরি হয় তামা, লোহা, অ্যালুমিনিয়াম ও টাইটানিয়ামের মতো ভারী ধাতু দিয়ে। উচ্চ তাপে এই ধাতুগুলি থেকে ক্ষুদ্র কণা নির্গত হয়, যা বাতাসের অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে দূষণবাহী কণায় পরিণত হয়। এই কণাগুলি রক্তে মিশলে রক্তনালিতে ব্লকেজ তৈরি হতে পারে যা থেকে অ্যাথেরোসক্লেরোসিসের আশঙ্কা বাড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে ধমনীর দেওয়ালের মধ্যে চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থ জমতে থাকে যাকে বলে ‘প্লাক’। এর ফলে ধমনী সংকীর্ণ হয়ে রক্তপ্রবাহকে বাধা দিতে পারে, ফলে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বাড়তে পারে।

Advertisement
আরও পড়ুন