Period Pain

যন্ত্রণাদায়ক ঋতুস্রাব, পেটে অসহ্য ব্যথা স্বাভাবিক না-ও হতে পারে? উপসর্গ চিনে সতর্ক হওয়া জরুরি

যন্ত্রণাদায়ক ঋতুস্রাব মাসের পর মাস হতে থাকলে তা স্বাভাবিক নয়। অনেক কারণে তা হতে পারে। সেই কারণগুলি চিহ্নিত করতে না পারলে বিপদের আশঙ্কা বাড়ে। তাই বিশেষ কিছু লক্ষণ চিনে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৪৯
Severe cramps and heavy periods are often dismissed as normal, what are the warning signs

মাসের চারটে দিন পেটে অসহ্য ব্যথা হয় কেন? ছবি: ফ্রিপিক।

ঋতুস্রাবের সময় তলপেটে, কোমরে যন্ত্রণা কমবেশি সব মেয়েরই হয়। এতে অস্বাভাবিক কিছু নেই। কিন্তু যন্ত্রণা সহ্যের অতীত হয়ে যায় ও প্রতি মাসেই এই লক্ষণ দেখা দিতে থাকে, তা হলে সতর্ক হতে হবে। অনেক মেয়েরই মাসের চারটে দিন ভারী ঋতুস্রাব হয়, সঙ্গে তলপেট ও শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধিতে যন্ত্রণা শুরু হয়। অনেক সময়ে এই যন্ত্রণা এতটাই অসহ্য হয়ে ওঠে, যে ব্য়থানাশক ওষুধ খেতেও বাধ্য হন অনেকে। নানা কারণে হতে পারে এই সমস্যা। বিশেষ কিছু উপসর্গ চিনে সাবধান হতে হবে। চিকিৎসকের কাছে যাওয়াও জরুরি।

Advertisement

প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে এক জন মহিলা এই সমস্যায় ভোগেন। তাঁদের কাছে মাসের ওই কয়েকটা দিন দুঃস্বপ্নের মতো। হটব্যাগ, প্যারাসিটামল বা অন্য কোনও ব্যাথানাশক ওষুধ খেয়ে ভীষণ কষ্টদায়ক সমস্যাকে জোর করে চেপে রাখার চেষ্টা চলে। যন্ত্রণাদায়ক ঋতুস্রাব হতে পারে ফাইব্রয়েডের জন্য, আবার অন্য কারণও আছে।

হরমোনের ওঠানামা, জরায়ুর সঙ্কোচনের কারণে পেট, তলপেট, কোমরে অসহ্য যন্ত্রণা হতে থাকে। শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধিতেও ব্যথা শুরু হয়। হরমোনের গোলমাল এর একটি কারণ। একে বলে প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া। হরমোনের তারতম্যে মেজাজের বদলও হয়।

‘ইউটেরাইন ফাইব্রয়েড’ আরও একটি কারণ। ফাইব্রয়েড হল জরায়ুর প্রাচীরে গজিয়ে ওঠা টিউমার, যা ক্যানসার সৃষ্টিকারী নয়। তবে এই টিউমার যদি সংখ্যায় ও আয়তনে বাড়তে থাকে, তা হলে কিন্তু মুশকিল। সন্তানধারণে যেমন সমস্যা হবে, তেমনই ঋতুচক্রও এলোমেলো হয়ে যাবে। জরায়ুর মায়োমেট্রিয়াম পেশি থেকে টিউমারের বৃদ্ধি হতে থাকে। ওই পেশির কোষগুলি অনিয়মিত ভাবে বাড়তে থাকে ও ছোট ছোট টিউমার তৈরি করে। তখন ব্যথা হতে থাকে। জরায়ুর বাইরের দিকে যদি টিউমার গজিয়ে ওঠে, তা হলে সেটি সাবসেরোসাল ফাইব্রয়েড। টিউমার ফেটে গিয়ে জরায়ুতে রক্তপাত হতে পারে। তাই আগে থেকেই সাবধান হওয়া জরুরি।

জরায়ুতে সিস্ট হলেও ঋতুস্রাবের গোলমাল হয়, পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হতে পারে। সিস্ট হওয়ার অন্যতম কারণ ইস্ট্রোজেন হরমোনের সাম্য নষ্ট হওয়া। সাম্প্রতিক সময়ে মেয়েদের সবচেয়ে বড় শারীরিক সমস্যা ‘ওভারিয়ান সিস্ট’। এর ফলে অনিয়মিত বা অতিরিক্ত ঋতুস্রাব, অল্প বয়সে ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। ঋতুস্রাব খুব বেদনাদায়কও হয় অনেকের। খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম, নেশার অভ্যাস, দেরিতে গর্ভধারণ এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।

এন্ডোমেট্রিয়োসিসের কারণেও ব্যথা হতে পারে। অনেক সময় এন্ডোমেট্রিয়োসিস থাকলেও সে রকম কোনও উপসর্গই থাকে না। বন্ধ্যাত্ব বা অন্য কারণে পরীক্ষা করতে গিয়ে ধরা পড়ে। স্টেজ-১ বা স্টেজ-২ অসুখে বেশির ভাগ সময়ে খুব সমস্যা হয় না। কিন্তু স্টেজ-৩ বা স্টেজ-৪ এ পৌঁছলে স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত বেশি রক্তপাত হয়। ঋতুস্রাবের সময়ে অস্বাভাবিক যন্ত্রণা হয়। প্রস্রাব বা মলত্যাগের সময়ও ব্যথায় কাতর হতে হয়। তা ছাড়া অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে রক্তাল্পতার লক্ষণ দেখা দেয়। কাজে অনীহা, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, মাথা ঝিমঝিম সহ নানান শারীরিক সমস্যা হতে পারে।

Advertisement
আরও পড়ুন