MODY Diabetes

ডায়াবিটিসের নতুন রূপ ধরা পড়ল ভারতে, বিরল রোগে বদলে যাচ্ছে জিনের গঠন, ভুগছে কমবয়সিরাই

ডায়াবিটিসের নতুন রূপের নাম ‘ম্যাচুরিটি-অনসেট ডায়াবিটিস অফ দ্য ইয়ং’ (মোডি)। শিশু ও কমবয়সিরাই বেশি আক্রান্ত। নবজাতকের শরীরেও দেখা দিতে পারে ডায়াবিটিসের এই নতুন রূপ।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২৫ ১২:৫৩
Indian scientists discover new subtype of Diabetes named MODY among Indians

জিনের বদলে দেখা দিচ্ছে ডায়াবিটিস, বিরল রোগ হচ্ছে শিশু ও কমবয়সিদের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

টাইপ ৫ ডায়াবিটিস নিয়ে হইচই হচ্ছিল এত দিন। নতুন ধরনের ডায়াবিটিস কেন হচ্ছে এবং এর প্রতিকার কী, তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছিলেন গবেষকেরা। এ বার আরও এক ধরনের ডায়াবিটিসের খোঁজ পাওয়া গেল। ডায়াবিটিসের নতুন রূপের নাম ‘ম্যাচুরিটি-অনসেট ডায়াবিটিস অফ দ্য ইয়ং’ (মোডি)। শিশু ও কমবয়সিরাই বেশি আক্রান্ত। নবজাতকের শরীরেও দেখা দিতে পারে ডায়াবিটিসের এই নতুন রূপ। গবেষকেরা বলছেন অত্যন্ত বিরল এই রোগ বংশগত।

Advertisement

জিনের বিন্যাসের ওলটপালটেই দেখা দিতে পারে ‘মোডি’ ডায়াবিটিস, এমনটাই জানাচ্ছেন চেন্নাইয়ের ‘মাদ্রাজ ডায়াবিটিস রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ (এমডিআরএফ)-এর গবেষকেরা। দেশের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে এই গবেষণায় যোগ দিয়েছে আমেরিকার ‘ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিন’। গবেষকেরা দাবি করেছেন, এ দেশেই মোডি ডায়াবিটিসে আক্রান্ত অনেক শিশু ও কমবয়সিদের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। কী থেকে এই ডায়াবিটিস হচ্ছে, কেনই বা হচ্ছে, এর প্রতিকারের উপায় নিয়ে নতুন করে গবেষণা শুরু হয়েছে।

আমেরিকান ডায়াবিটিস অ্যাসোসিয়েশন থেকে প্রকাশিত ‘ডায়াবিটিস’ নামক মেডিক্যাল জার্নালে এই গবেষণা বিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে ভারত ও আমেরিকার গবেষকেরা দাবি করেছেন, ‘এবিসিসি৮’ নামক একটি জিনের বিন্যাসে গন্ডগোল হলেই এই ডায়াবিটিস হতে পারে। ‘এবিসিসি৮’ জিনটি অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন হরমোন ক্ষরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যদি কোনও ভাবে জিনটিতে রাসায়নিক বদল (মিউটেশন) ঘটতে থাকে, তা হলে সেটির কাজ করার প্রক্রিয়া বদলে যাবে। বদল হবে তার বিন্যাসেও। তখন শরীরের ভিতরের কোষগুলিই বিদ্রোহ করে ‘অটোইমিউন’ রোগের কারণ হয়ে উঠবে। মোডি ডায়াবিটিস তেমনই একটি রোগ। একে ‘মোনোজেনিক ডায়াবিটিস’ বলেন অনেকে। খুব কম জনের এই রোগ হয়। আর তা বংশগত ভাবে ছড়াতে থাকে।

এমডিআরএফ-এর গবেষক রাধা ভেঙ্কটেশন জানিয়েছেন, রোগটি শৈশবেই প্রকাশ পায়। যেহেতু জিনের বদলের কারণে এই ডায়াবিটিস হয়, তাই সেটির উপসর্গ টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবিটিসের চেয়ে আলাদা। সে কারণে রোগটি ধরা পড়ে না সহজে। এমনও দেখা গিয়েছে, বাবা-মায়ের থেকে বদলে যাওয়া জিন সন্তানের মধ্যে এসে এই বিরল রোগের কারণ হয়ে উঠেছে। শিশুর শরীরে যখন রোগটি দেখা দেয়, তখন রক্তে শর্করার মাত্রা আচমকাই কমতে থাকে। হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘কনজেনিটাল হাইপারইনসুলিনিজ়ম’ (সিএইচআই)। শিশুটি যত বড় হতে থাকবে ততই তার রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে থাকবে। ৩০ বছর হওয়ার আগেই পরিস্থিতি উল্টে যাবে। তখন রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যাবে।

মোডি ডায়াবিটিসের আরও অনেক প্রকার রয়েছে, যেমন ‘মোডি ১’, ‘মোডি ৩’, ‘মোডি ১২’ ইত্যাদি। সবগুলি ভাগ নিয়ে গবেষণা চলছে। এখনও এই ডায়াবিটিসকে কাবু করার মতো ওষুধ বা প্রতিষেধক তৈরি হয়নি। গবেষকেরা জানিয়েছেন, বিরল এই ডায়াবিটিসের চিকিৎসাপদ্ধতি ও ওষুধ নিয়ে গবেষণা চলছে।

Advertisement
আরও পড়ুন