কোন ফলের বীজ খেলে সুগার বাড়বে না? ছবি: ফ্রিপিক।
মরসুমি নানা ফলের মধ্যে বাঙালির ঘরে এই ফলটি আসেই। অনেকেই জানেন না, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ফলটির বিশেষ ভূমিকা আছে। এই ফলের দানা শুকিয়ে গুঁড়ো করে খেলে ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে, এমনটাই বলা হয়। ফলটি হল কালো জাম। এটি হজমে সহায়ক, ওজন কমাতে পারে, বিপাকক্রিয়ার হারও বৃদ্ধি করে। আবার রক্তে শর্করা কমাতেও এর ভূমিকা রয়েছে।
কালো জাম কী ভাবে ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারে?
দেশের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ থেকে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, কালো জামের মধ্যে থাকা জাম্বোলিন ও জাম্বোসিন নামক উপাদান রক্তে শর্করা জমতে বাধা দেয়। অতিরিক্ত শর্করা শোষণও করে নিতে পারে। জামের দানা ভাল করে শুকিয়ে গুঁড়ো করে খেলে রক্তে শর্করা হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে না।
‘ফুড সায়েন্স রিসার্চ জার্নাল’-এ প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, জাম ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে। জামে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্থোসায়ানিন থাকে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এই উপাদানটি চোখ ও কিডনির স্বাস্থ্যও ভাল রাখে। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ২০০-৪০০ মিলিগ্রাম কালো জামের দানা গুঁড়ো করে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা ৬৫ শতাংশ অবধি কমে যায়। টাইপ ২ ডায়াবিটিসে যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের উপর পরীক্ষাটি করে সুফল পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি।
জামের বীজের দানায় থাকা অ্যাস্ট্রিনজেন্ট এবং কারমিনেটিভ উপাদান হজমে সাহায্য করে। জামের বীজ গুঁড়ো করে তা ঈষদুষ্ণ জলে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। দেখা গিয়েছে, জামের বীজ এই ভাবে টানা ৯০ দিন সকালে ও বিকালে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। জামের বীজে থাকা গ্লাইকোসাইড রক্তে শর্করার মাত্রাকে দীর্ঘ সময় ধরে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
কী ভাবে খাবেন?
কালো জাম কিনে এনে ফল খেয়ে বীজগুলি রেখে দেবেন। সেগুলি রোদে ভাল করে শুকিয়ে নিতে হবে। এ বারে উপরের খোসা ফেলে দিয়ে ভিতরের অংশটি মিক্সিতে বা হামানদিস্তায় গুঁড়ো করে নিন। জামের দানার গুঁড়ো ঈষদুষ্ণ জলে মিশিয়ে বা চায়ে মিশিয়ে খেতে পারেন। রাতে খাওয়ার আধ ঘণ্টা আগেও খেতে পারেন, তা হলে খাবার খাওয়ার পরে রক্তে শর্করা বেড়ে যাবে না।
কারা খাবেন না?
ডায়াবিটিসের জন্য যাঁরা কড়া ডোজ়ের ওষুধ খান বা ইনসুলিন নেন, তাঁদের জামের দানার পাউডার খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। দুধের জন্য ভুলেও এই পাউডার খাবেন না। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় জামের দানা না খাওয়াই ভাল। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।