Effects of stress on skin

চুলকানি থেকে চুল পড়া, মনের অসুখ বিভিন্ন চর্মরোগের কারণ হতে পারে, দাবি গবেষণায়

‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ডার্মাটোলজি’ (এএডি)-তে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী মনের চাপ বাড়লে এগ্‌জ়িমা, সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগও হতে পারে। আবার অকালেই চামড়া কুঁচকে বার্ধক্যের চাপ পড়তে পারে চেহারায়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:৫৯
Mental Stress is a crucial factor in the development of many skin diseases

মানসিক চাপের সঙ্গে ত্বকের রোগের কী সম্পর্ক? ছবি: ফ্রিপিক।

জনপ্রিয় হিন্দি ওয়েব সিরিজ়ে ‘ক্রিমিনাল জাস্টিস’-এ পঙ্কজ ত্রিপাঠী অভিনীত মূল চরিত্র মাধব মিশ্রকে চুলকানির অসুখে ভুগতে দেখা গিয়েছে। বহু রকমের চিকিৎসার পরেও তা সারেনি। শেষমেশ তাকে যেতে হয় এখন মনোবিদের কাছে। আর সেখানেই মেলে তার অসুখের ‘দাওয়াই’। মনোবিদ মাধবকে জানান, তার মনের গহিনেই রয়েছে অসুখের বীজ। এই অসুখের আসল কারণ তার উদ্বেগ ও মানসিক চাপ।

Advertisement

সত্যিই কি মানসিক চাপের কারণে চর্মরোগ হতে পারে? তেমনটাই দাবি করা হচ্ছে গবেষণায়। ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ডার্মাটোলজি’ (এএডি)-তে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী মনের চাপ বাড়লে এগ‌্‌জ়িমা, সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগও হতে পারে। আবার অকালেই চামড়া কুঁচকে বার্ধক্যের ছাপ পড়তে পারে চেহারায়। মানসিক চাপের কারণে চুল পড়ার সমস্যা বাড়তে পারে। গোছা গোছা চুল উঠে টাকও পড়ে যেতে পারে।

২০২৪ সালে আমেরিকা থেকে প্রকাশিত ‘ব্রেন, বিহেভিয়ার অ্যান্ড ইমিউনিটি’ নামক একটি জার্নালেও ত্বকের সঙ্গে মানসিক চাপের যোগসূত্রের কথা বলেছিলেন চর্মরোগ চিকিৎসক কেইরা বার। তিনি জানান, স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বাড়লে তা ত্বকের প্রদাহ বাড়িয়ে দেয়। তখন ত্বকে চুলকানি, র‌্যাশের মতো সমস্যা হতে পারে। মস্তিষ্ক ও ত্বকের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে জানান তিনি। যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় ‘বাইডাইরেকশনাল পাথওয়ে।’ মানসিক চাপ বাড়লে তা মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশটিকে প্রবল ভাবে আঘাত করে, তখন স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের ক্ষরণ বেড়ে যায়। অন্যান্য হরমোনের ভারসাম্যও বদলে যেতে থাকে, যার প্রভাব পড়ে ত্বকে।

গবেষকেরা জানাচ্ছেন, মানসিক চাপ, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়লে স্ট্রেস হরমোন ত্বকের কোলাজেন ও ইলাস্টিন প্রোটিনকে ভেঙে দেয়। ফলে ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত কোষ আর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারে না। কোলাজেনের উৎপাদন কমে যাওয়ায় ত্বকও নির্জীব হতে শুরু করে। ফলে অকালেই বলিরেখা পড়ে যায়। বুড়োটে ভাব এসে যায় ত্বকে। এমনও দেখা গিয়েছে, মানসিক চাপের কারণে ত্বকের প্রদাহ মারাত্মক ভাবে বেড়ে গিয়ে সোরিয়াসিস, কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিসের মতো রোগ হয়েছে। তবে এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা চলছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ত্বক যদি ভাল রাখতে হয় তা হলে কেবল প্রসাধনীর উপর ভরসা করলে চলবে না, মনও ভাল রাখতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।নিয়মিত ব্যায়াম জরুরি এবং দিনে অন্তত ৩০ মিনিট প্রকৃতির মাঝে থাকতে পারলে ভাল হয়। এতে ‘হ্যাপি হরমোন’-এর ক্ষরণ বাড়বে এবং মনও ভাল থাকবে।

Advertisement
আরও পড়ুন